অনেকেই বলছেন আইপিএলে পাঁচ বলে পাঁচ ছক্কার নায়ক ব্রাত্য থেকে গেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে জাতীয় টি২০ দলে। শেষ আইপিএলে ১৪ ম্যাচে ৪৭৪ রান করা (স্ট্রাইক রেট ১৪৯.৫৩) রিঙ্কু সিংকে কেন দলে জায়গা দিলেন না নির্বাচন কমিটির নতুন প্রধান অজিত আগরকার এবং তাঁর সঙ্গীরা, তা নিয়ে ইতিউতি আলোচনা হচ্ছে। আসলে গত আইপিএলে বেশ কয়েকটা অনবদ্য ইনিংসে নজর কেড়েছিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের এই তারকা ব্যাটার। রিঙ্কুকে নিয়ে তৈরি হয়েছে প্রত্যাশা। রবি শাস্ত্রীর মতো অনেক প্রাক্তনই মনে করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজগামী ভারতের টি২০ দলে সুযোগ দেওয়া হবে রিঙ্কুকে। অবশ্য শুধু রিঙ্কু কেন, তালিকায় নাম ছিল যশস্বী জয়সওয়াল, রুতুরাজ গায়কোয়াড়, তিলক ভার্মা, জিতেশ শর্মাদেরও। শিকে ছিঁড়েছে যশস্বী, তিলকের। প্রশ্ন উঠেছে, তিলক যদি সুযোগ পেতে পারেন, তাহলে রিঙ্কু নয় কেন।
বয়স তখন কত? বছর দশেক হবে। বড় ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে উত্তরপ্রদেশের গ্রাম থেকে মুম্বইয়ে গিয়েছিল ছেলেটা। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, ঝুঁকিপূর্ণ জীবন। প্রতি মুহূর্তে আশঙ্কা। থাকার জায়গা? কিছুই ঠিক ছিল না। আজাদ ময়দানে মালিদের তাঁবুতে রাত কাটিয়েছে সে। তিন বছরেরও বেশি। ক্যান্টিনে খাওয়া। কিছু অর্থ উপার্জনের আশায় পানিপুরি (ফুচকা), পাওভাজি বিক্রি করেছে মুম্বইয়ের রাস্তায়। কিন্তু শত কষ্টেও ক্রিকেটকে ফাঁকি দেয়নি সেই ছেলে। সেই পরিশ্রম, সেই নিষ্ঠা, সেই জেদের ফল মিলছে একটু একটু করে।
গত মার্চে প্রয়াত হয়েছিলেন তাঁর মা। ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে। তখন ভারত সফরে এসে খেলতে ব্যস্ত ছিল অস্ট্রেলিয়া। মা’র জীবনাবসানের খবর পেয়ে এদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় উড়ে গিয়েছিলেন প্যাট কামিন্স। শোকের সেই আবহ কাটিয়ে উঠতে সময় লেগেছিল তাঁর। হয়তো এই শোকই কামিন্সের মানসিক কাঠিন্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
কী ভেবেছিলেন, একেবারে স্টেজেই মেকআপ দিয়ে দেবেন? হয়ে যাবে বাজিমাত? ব্যাপারটা কি অতই সস্তা? টেস্টের বিশ্বকাপ ফাইনাল। ভারতীয় ক্রিকেটাররা শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ওভালে নেমে পড়লেন ঢালহীন, তরোয়ালহীন নিধিরাম সর্দারের মতো! প্রায় কোনও প্রস্তুতি ছাড়াই যে এরকম একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলা যায় দেখিয়ে দিল ভারত। নিট ফল? শূন্য। বিগ জিরো। স্বপ্ন পূরণ তো হলই না, উল্টে লজ্জার হারে মুখ পুড়ল ভারতীয় ক্রিকেটের। আইসিসি ট্রফির খরা কিছুতেই কাটছে না ভারতের।
সঙ্গে থাকুন