পূর্ব ঘোষিত অবস্থান থেকে পাক বোর্ডের পরবর্তী সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট জাকা আশরাফ সরে আসার পর যখন মনে করা হচ্ছিল বাকযুদ্ধের আপাতত ইতি ঘটল, ফের ছন্দপতনের ইঙ্গিত পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ার সম্ভাবনাকেই জোরদার করে দিল।পাক বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়েছে নিরাপত্তার সুস্পষ্ট আশ্বাস না পেলে পাকিস্তান ভারতে বিশ্বকাপ খেলতে আসার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে বাধ্য থাকবে।
প্রাথমিকভাবে এই অবস্থান পাক সরকারের কড়া মনোভাবের প্রতিফলন বলে মনে হলেও ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা এটা আসলে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে চাপে রাখার পূর্বপরিকল্পিত কৌশল মাত্র।ভারতে খেলতে না এলে পাক বোর্ডের যে বিপুল আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা তা সামাল দেওয়ার ক্ষমতা পাক সরকারের আছে কিনা বর্তমান প্রেক্ষাপটে সেই প্রশ্নের গুরুত্ব অপরিসীম।কাজেই পাক ক্রিকেট মহলের এহেন কাগুজে আস্ফালনের প্রভাব বিশ্বকাপের ওপর পড়বে না বলেই ধারণা অনেকের।পাক বিদেশ মন্ত্রকের সাম্প্রতিকতম অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় বোর্ডের প্রতিক্রিয়া অবশ্য এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায় নি। এদিকে আসন্ন বিশ্বকাপে পাকিস্তানের তিনটি ম্যাচের কেন্দ্র বদল নিয়ে পাক বোর্ডের আবেদন আই সি সি এর তরফে নাকচ হওয়ার পথে।ভারত পাক ম্যাচ আমেদাবাদ এর পরিবর্তে কলকাতায় আয়োজনের দাবী যে কোনভাবেই মানা হবে না সেই ইঙ্গিত অবশ্য আগেই মিলেছিল।তবে চেন্নাইয়ের পাকিস্তান বনাম আফগানিস্তান এবং বেঙ্গালুরুর পাকিস্তান বনাম অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের সূচী অদলবদলের যে অনুরোধ পাক বোর্ড ইতিপূর্বেই করেছে তাতেও সম্মতি প্রদানের সম্ভাবনা বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে কার্যত অসম্ভব বলেই মনে হচ্ছে। চিপকের পরিচিত ঘূর্ণি উইকেটে রশিদ খানের আফগানিস্তান এর মুখোমুখি হওয়া বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে এমন ভাবনারই ফলশ্রুতি পাক অষ্ট্রেলিয়া ম্যাচ চেন্নাইয়ে স্থানান্তরিত করার আবেদন। কিন্তু আই সি সি জানিয়ে দিয়েছে বিশ্বকাপে প্রতিটি কেন্দ্রের পিচ প্রস্তুতকারক হিসেবে তাদের প্রতিনিধির হাতেই পূর্ণ দায়িত্ব থাকবে।কাজেই ভারতীয় পিচ প্রস্তুতকারক নিজেদের পছন্দমত উইকেট বানিয়ে পাক দলের বিড়ম্বনা বৃদ্ধির কারণ হবেন এমন অভিযোগ অবান্তর।তবে বিশ্বকাপ শুরুর আগে পাকিস্তানের ওয়ার্ম আপ ম্যাচের পূর্ব নির্ধারিত প্রতিপক্ষ বদলের যে দাবী পাক বোর্ড মারফত করা হয়েছে আই সি সি তা সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করে দেখছে বলে জানা গেছে। আফগানিস্তানের বদলে পাক বোর্ড চাইছে প্রস্তুতি ম্যাচে ইংল্যান্ড, অষ্ট্রেলিয়া বা দক্ষিণ আফ্রিকার মত শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে খেলতে এবং আই সি সি শেষ পর্যন্ত এই দাবী মেনে নিলে সেটা পাকিস্তান ক্রিকেট দলের জন্য নিছক স্বান্তনা পুরস্কার তূল্য হতে পারে।