অবাক হয়ে গেলাম প্রেস কনফারেন্স-এ ভারত অধিনায়কের কথা শুনে। একি বলেছেন তিনি? আইপিএল থেকে এসে হঠাৎ করে লাল বলের ক্রিকেটে যেখানে লাইন লেন্থ ভিন্ন সেখানে বোলারদের মানিয়ে নিতে অসুবিধে হয়েছে। সেই সঙ্গে তিনি আরও জানালেন যে এইরকম একটা ম্যাচের জন্য আদর্শ হচ্ছে কুড়ি থেকে পঁচিশ দিনের একটা প্রস্তুতি পর্ব! ঠিকই বলেছেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আগে বলেননি কেন? মিডিয়ার কাছে নয়, বোর্ড কর্তাদের কাছে। একবারও কি আপনারা বলেছেন যে এভাবে হয় না, টেস্ট বিশ্বকাপের ফাইনালের আগে আর একটু প্রস্তুতি দরকার। তাই এখন আপনি যতই বলুন অজুহাত দিচ্ছি না, এটা অজুহাত হিসেবেই শোনাবে।
আর শুধু বোলারদের কাঁধে বন্দুক রাখলে হবে? আপনারা অর্থাৎ ব্যাটাররা কী করলেন? চতুর্থ ইনিংসে আপনাদের সামনে টার্গেট ছিল ৪৪৪ রানের, হাতে মোটামুটি ১৩৫ ওভার। হ্যাঁ, এই টার্গেট আগে চেজ হয়নি কিন্তু আধুনিক ক্রিকেট বলছে ওই ১৩৫ ওভার উইকেটে থেকে স্বাভাবিক ক্রিকেট খেললেই রানটা উঠে আসবে। প্রাথমিক শর্ত হচ্ছে উইকেটে থাকতে হবে। সেখানে আপনারা প্রায় ‘বাজবল’ ক্রিকেট খেলতে নেমে গেলেন! প্ৰথম ৭ ওভারে ৪১, কুড়ি ওভার হওয়ার আগেই ১০০। যদি এই ক্রিকেটেই খেলতে হয় তাহলে সূর্য, ঈশান কিষান কেন বেঞ্চে আর পূজারা, রাহানে যেন মাঠে? এই অদ্ভুত স্ট্রিটেজিতে খেলতে গিয়ে চতুর্থ দিন অযথা দুটো বাড়তি উইকেট চলে গেল। অথচ পঞ্চম দিনের শুরুটা ১৬৪/৩ এর জায়গায় ১২৫/১ হলে অস্ট্রেলিয়া অনেক বেশি চাপে থাকতো। সাম্প্রতিক অতীতে এই দলের যেটা সবচেয়ে বড় জয়, সেই ব্রিসবেনেও প্রায় ৩৩০ চেজ করতে হয়েছিল, হাতে ছিল প্রায় ১১০ ওভার। সেদিন কিন্তু টিম এই ভুলটা করেনি। সেদিন গিল, ঋষভরা যখন মারছিলেন তখন যিনি একটা দিক ধরে রেখেছিলেন, কাল তিনি অযথা ব্যাট চালিয়ে ফিরে গেলেন। ফলে যে দলটা টেস্টে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে এসেছে তারা একটা ইনিংসেও ৭০ ওভার ব্যাট করতে পারলো না!
অবশ্য সব দোষ অধিনায়কের নয়, যখন একটা দল একটা স্বাভাবিক উইকেটে দুই ইনিংস মিলিয়ে ১৩৫ ওভার ব্যাট করতে পারে না, একটা ইনিংসে চারজন প্ৰথম সারির ব্যাটারের ৪০ করে ফেলার যখন আউট হতে যায়, তখন দলের কোচ বা ব্যাটিং কোচকেই প্রশ্নের এই দায় নিতে হয়। অবশ্য ভারতীয় ব্যাটরদের নিয়ে এইটুকু লেখার পরিস্থিতিও তৈরি হতো না, প্যাট কামিন্স ওই দুটো নো বল না করলে।