নিলামের প্রথমদিন কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজি তাঁকে নেয়নি। আনসোল্ড। দ্বিতীয় দিনেও যখন তাঁর নাম ঘোষণা হল, বেঙ্গালুরুর বিলাসবহুল হোটেলের পেল্লাই হলঘরে সবাই কেমন যেন নিষ্পৃহ... তাহলে কি আইপিএল গ্রহে নেই এই মুহূর্তে ভারতের এক নম্বর উইকেটকিপার?
অবশ্য যে প্রতিযোগিতা শুরুই হয়েছে রানের আনন্দে ভেসে যাওয়ার জন্য, যেখানে বোলাররাই তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক, সেখানে দেশের এক নম্বর উইকেটকিপারের আর কী মূল্য! কী যে কন কত্তা! যাক। যাঁর ছায়ায় কেরিয়ারের অনেকটা এবং সেরা সময় কেটে গেছে, সেই মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসই প্রথম সাড়া দিল। লড়াইয়ে অংশ নিল গুজরাট টাইটান্স। শেষপর্যন্ত সেখানেই ঠাঁই হল আমাদের প্রিয় পাপালির। আইপিএলের দরজা বন্ধ হয়নি তাঁর জন্য। অন্য কাউকে নয়, আরও একবার নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ। নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজিতে নতুন অভিযান। আমাদের সরব সমর্থন রইল ভারতীয় ক্রিকেটের নীরব যোদ্ধার জন্য। কী? প্রাদেশিকতার গন্ধ পাচ্ছেন? পেলে বয়েই গেল।
এবার আসা যাক খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গে। দলের নাম কলকাতা নাইট রাইডার্স। কেন যে কলকাতার নাম জড়িয়ে আছে, ওই ফ্র্যাঞ্চাইজির কত্তাবাবুরাই জানেন। কলকাতা কেন, এই বাংলারই কোনও ক্রিকেটার নেই দলে। আছে শুধু কলকাতার ক্রিকেট আবেগ ব্যবহার করে বেওসা করা! ভারতীয় ক্রিকেট দলে বঙ্গ–কিপারের সঙ্গে একটা ঘোরতর অন্যায়ের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে ইতিমধ্যেই। অন্যায় অবশ্য আগেও হয়েছে তাঁর সঙ্গে। সযত্নে লালিত সেই অন্যায়ের সঙ্গী হয়ে গেল কলকাতা নাইট রাইডার্সও। কেন? কীভাবে? ঋদ্ধিমান সাহাকে নিয়ে এইমুহূর্তে বাংলার ক্রিকেট অনুরাগীদের মধ্যে সহানুভূতির স্রোত বইছে তির তির করে। এই আবেগটাই ব্যবহার করতে পারত কেকেআর। ‘নিজের শহরের’ দলের হয়ে নতুন উদ্যমে চ্যালেঞ্জ নিতে পারতেন শিলিগুড়ি তনয়। চ্যালেঞ্জ নেওয়াটা ঋদ্ধির রক্তে। আখেরে লাভবান হতে পারত কলকাতা নাইট রাইডার্সই।
ধুস! কোটিপতি ক্রিকেট লিগে কীসের আবেগ, কীসের যুক্তি! কেকেআরের মালিক বলিউড ‘বাদশা’। কী আশ্চর্য, শাহরুখ ‘কিং’ খান আবার এই বাংলারই ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর। অথচ বাংলার নাড়ির টানই তিনি বোঝেন না। আসন্ন আইপিএলে আমরা তাকিয়ে থাকব কিপার নয়, ব্যাটার ঋদ্ধির দিকে।
যাবতীয় অপমানের জবাব দিন ঋদ্ধিমান। আপনার ব্যাটে। যাবতীয় অভিমান পরিণত হোক ক্রোধে। সেই ক্রোধ আগুন ঝরে পড়ুক আপনার চওড়া ব্যাটের মাঝখান দিয়ে। বুঝিয়ে দিন এখনও ফুরিয়ে যাননি। প্রতিভাকে আটকানো যায়, শেষ করা যায় না।