চার বছর পর ক্রিকেটের নন্দন কাননে আই পি এল এর প্রত্যাবর্তনে বঙ্গীয় ক্রিকেট সমাজ “ঘরের ছেলে” দের নিয়ে যতটা না উচ্ছ্বসিত তার চেয়ে ঢের বেশি উন্মাদনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে প্রতিপক্ষ দলের মহাতারকাকে কেন্দ্র করে ।বিরাট কোহলি গতকাল নেটে ব্যাট করার সময় যে পরিমাণ গর্জন গ্যালারি থেকে শোনা গেল আজ ইডেনের জনসমুদ্রের সম্মিলিত কোলাহল যে তার চেয়ে উচ্চগ্রামে পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা সেটা আগাম অনুমানের জন্য জ্যোতিষী হওয়ার প্রয়োজন নেই।ইডেন গার্ডেন কিং কোহলির বরাবরের মৃগয়াভূমি। একমাত্র ব্যতিক্রম বোধহয় ২০১৭ । সেবার আর সি বি ইনিংস ৪৯ অল আউটের নজিরবিহীন বিপর্যয় কোহলির স্মৃতিতে দগদগে ঘা হয়েই থেকে যাওয়া উচিৎ।
হালফিলে তিন ফর্ম্যাটেই যেরকম দাপট দেখিয়েছেন ডুপ্লেসি ম্যাক্সওয়েল রা থাকলেও স্বীকার করে নেওয়া ভালো তারকাখচিত আর সি বি ব্যাটিং লাইনআপ এর প্রাণভোমরা তাদের প্রাক্তন অধিনায়কই। রোহিতদের বিরুদ্ধে যেরকম বিধ্বংসী মেজাজে দেখা গেছে তার কিয়দংশও আজকের জন্য বরাদ্দ করে রাখলে চন্দ্রকান্ত পন্ডিতের ছাত্রদের জন্য যে অশেষ দূর্ভোগ অপেক্ষা করে থাকবে সেকথা বলাই বাহুল্য। কোহলির একমাত্র দূর্বল জায়গা স্পিনারদের বিরুদ্ধে স্বভাবসুলভ প্রাথমিক জড়তা এবং সেটা মনে রেখে বরুণ চক্রবর্তী বা সুনীল নারাইনরা নিজেদের রণকৌশল ঠিকঠাক প্রয়োগ না করতে পারলে কিন্তু বিপদ অনিবার্য।শ্রেয়াস বিহীন কে কে আর মিডল অর্ডারকে যেরকম বিপর্যস্ত দেখাচ্ছে আজ ব্যাটিং অর্ডারে উল্লেখযোগ্য কিছু রদবদল না হলে অবাক হতে হবে। ওপেনিং স্লট যার মধ্যে অন্যতম। পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে রহমতুল্লাহ গুরবাজ নজড় কেড়েছেন তাই তিনি থাকবেন এটা খুব সঙ্গত অনুমান। ভেঙ্কটেশ আয়ার ওপেনার হিসেবে এর আগে পরীক্ষিত কাজেই এ যাত্রা তার ভাগ্যে শিকে ছিঁড়তেই পারে। সুদীপ ঘরামির প্রতি নেটে বাড়তি নজর দিতে দেখা গেল সহকারী কোচ অভিষেক নায়ারকে।তার অভিষেক শেষ পর্যন্ত হলে অবশ্য বহু প্রাচীন একটা অপবাদের দায় থেকে মুক্তি পাবে কে কে আর টিম ম্যানেজমেন্ট। কলকাতার দলে স্থানীয় প্রতিনিধিত্ব না থাকার অভিযোগ আজকের নয়।রাসেলকে আরও ওপরের দিকে ব্যাট করতে পাঠালে তার প্রতিভার প্রতি যথাযোগ্য সুবিচার করা হবে এহেন মতবাদে পন্ডিতজী প্রভাবিত হলে সেটা অবশ্য দলের পক্ষে ইতিবাচক। শাকিব উল হাসান এর পরিবর্ত হিসেবে জেসন রয়কে পাওয়ায় টিম ম্যানেজমেন্ট স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারে যদিও ৯ তারিখের ম্যাচের আগে তার খেলার সম্ভাবনা নেই। পারস্পরিক শক্তির তুল্যমূল্য বিচারে আজকের দ্বৈরথে তর্কাতীতভাবে বিরাট বাহিনী ফেভারিট হলেও কুড়ি কুড়ির ফর্ম্যাটে অঘটন সহজলভ্য সম্ভাব্যতা।ইডেন গ্যালারির গরিষ্ঠ অংশ তাই যতই কোহলির নামে জয়ধ্বনি দিক উলোটপূরাণ এর সম্ভাবনাকে ক্রিকেটীয় অঙ্কে একেবারে বাতিল করা নির্বুদ্ধিতা হবে।