লা–জবাব উমেশ

বেঙ্গালুরুর মেগা নিলামে শুরুতে কোনও ফ্র‌্যাঞ্জাইজিই তাঁকে নেওয়ার বিন্দুমাত্র উৎসাহ দেখায়নি। কেন নেবে?‌ গত দুটো আইপিএলে তিনি খেলেছেন সাকুল্যে দুটো ম্যাচ। বাকি সময় দলের সঙ্গে ঘুরে বেরিয়েছেন। ডাগ-আউটে বসেছেন। আর ভারতীয় দলে?‌ সে কথা ছেড়েই দিন। কোনও এক ক্রিকেটারের চোট থাকায় বা বিশ্রাম পাওয়ায় একটা ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মুখে রা কাড়েননি। কোনও অভিযোগ করেননি কোথাও। শুধু নিজের কাজ করে গেছেন। হারিয়ে যাননি। ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করেছেন সুযোগের। এবার নিলামের দ্বিতীয় পর্বে দরজা খুলল কলকাতা নাইট রাইডার্সের। তখনও কেউ ভাবেনি বছর চৌত্রিশের বিদর্ভ পেসারই হতে চলেছেন শাহরুখ খানের ফ্র্যাঞ্চাইজির তুরুপের তাস। 

ছবি ইন্টারনেট

সত্যিই বুড়ো হাড়ে ভেলকি দেখাচ্ছেন বটে উমেশ যাদব। তিন ম্যাচে নিয়েছেন আট উইকেট!‌ তিন ম্যাচের মধ্যে দুটিতেই পেয়েছেন ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার!‌ নতুন বলে আগুন ছড়াচ্ছেন উমেশ। বল লাফাচ্ছে, সুইং করছে, উইকেট থেকে সাহায্য পাচ্ছেন জোরে বোলাররা। অন্তত এখনও পর্যন্ত তা দেখা যাচ্ছে। সেই সুবিধে চেটেপুটে কাজে লাগাচ্ছেন উমেশ। প্রথম ম্যাচ ছিল চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে। ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে ২ উইকেট। দ্বিতীয় ম্যাচ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে। উমেশের বোলিং বিশ্লেষণ ৪ ওভারে ১৬ রান দিয়ে ২ উইকেট। বিরাট কোহলিকে আউট করেছেন স্বপ্নের ডেলিভারিতে। আর শুক্রবার পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে তো লা–জবাব উমেশ। শুধু নতুন বলেই নয়, পুরনো বলেও দুরন্ত উমেশ। বিনোদনের মারকাটারি ক্রিকেটে ৪ ওভারে ১ মেডেন নিয়েছেন, ২৩ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। কেরিয়ারের ১২৩তম আইপিএল ইনিংসে এটাই উমেশের সেরা বোলিং বিশ্লেষণ। তাঁর আগের সেরা বোলিং ছিল ২০১৩ সালে, রাজস্থান র‌য়্যালসের বিরুদ্ধে নিয়েছিলেন ২৪ রানে ৪ উইকেট। শুক্রবার আরও দুটো নজির তৈরি করেছেন উমেশ। আইপিএলে পাওয়ার-প্লে-তে ৫০ উইকেট নেওয়া পূর্ণ করলেন। আইপিএলে একটি দলের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শিকার এখন উমেশেরই। পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে ৩৩ উইকেট। 

উমেশের আগুনে বোলিংয়ে প্রাক্তন ক্রিকেটাররাও মুগ্ধ। সেই তালিকায় আছেন কেকেআর কোচ ব্রেন্ডন ম্যাকালামও। তিনি উমেশের ফিটনেসের যেমন প্রশংসা করেছেন, তেমনই বলেছেন, ‘‌ও আমাদের দলের সম্পদ।’‌ উমেশ কিন্তু ভারতীয় দলের দরজায় কড়া নাড়া শুরু করে দিয়েছেন।