ঘরামির তৈরী ভিতে অগ্নিভ তান্ডব বাংলার


ইনিংসের তৃতীয় বলে ফিরে গিয়েছেন অভিমন্যু ঈশ্বরণ। ক্রিজে তখন রাণজ্যোৎ সিং খাইরা, যিনি বিগত দুটি ইনিংসে সম্মুখীন হয়েছেন ব্যর্থতার। তখন তার সঙ্গে যুক্ত হলেন বাংলার নতুন টিটোয়েন্টির ৩ নম্বর ব্যাটার।
এরপর ইনিংসে কেটেছে একাধিক খারাপ সময়। ভালো ছন্দে থাকা রাণজ্যোৎ খাইরা সুমিত সিংয়ের বলে ফিরে গিয়েছেন ১৫ বলে ২২ রান করে, সহ অধিনায়ক ঋত্বিক চ্যাটার্জী অঙ্কুর মালিকের বলে লেগ বিফোর হয়েছেন মাত্র ৩ রান করে এবং বাংলার স্কোরবোর্ড দেখাচ্ছে ৪৭-৩। সেইখানেই নিজের স্থিরতা সঙ্গে করে অনবদ্য একটি ৫৬ রানের ইনিংস খেললেন সুদীপ কুমার ঘরামি।


কৃতিত্ব অবশ্যই প্রাপ্য বাংলা টিম ম্যানেজমেন্টের। হাতে ঋত্বিক রায়চৌধুরী এবং অগ্নিভ পানের মতো ব্যাটার থাকতেও তাঁরা এগিয়ে দিয়েছিলেন শাহবাজকে, যে শাহবাজ বর্তমানে বাংলার ‘ক্রাইসিস ম্যান’ হিসেবে অবতীর্ণ হয়েছেন বারবার। ব্যতিক্রম হলো না আজও। ২টি চার ও ২টি ছয়ের সাহায্যে শাহবাজ যে ৪৩ রানের ইনিংসটি খেললেন এবং সুদীপ ঘরামির সঙ্গে ৫২ বলে ৬৯ রানের পার্টনারশীপ গড়লেন তাতে পরবর্তী ব্যাটারদের কাছে শেষ পাঁচ ওভারে ছিল একটাই কাজ এবং তা হলো যথেচ্ছ পাওয়ারহিটিং।


এই কাজে ক্লাব ক্রিকেটে বরাবর সিদ্ধহস্ত বাঁহাতি কিপার-ব্যাটার অগ্নিভ পান। ২০২১ সালের বাংলার ঘরোয়া টোয়েন্টিতে যেভাবে ভবানীপুরকে প্রায় একার হাতে জিতিয়েছিলেন টুর্নামেন্টের ফাইনাল, আজও বাংলার হয়ে সেই একই কাজ করলেন অগ্নিভ। ডেথ ওভারে ব্যাট করতে নেমে ১২ বল ব্যাট করে ১টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে খেলে গেলেন অপরাজিত ৩৪ রানের একটি ইনিংস যা শেষ চার ওভারে বাংলাকে ৫২ রান যোগ করতে সাহায্য করে এবং বাংলা সিকিমকে টার্গেট দেয় ১৮০ রানের।
ব্যাট করতে নেমে প্রথমেই মুকেশ কুমার-আকাশদীপ-রবি কুমারের সামনে অসহায় লাগে অনভিজ্ঞ সিকিম ব্যাটারদের সামনে। এরপর বাংলার স্পিন চতুষ্টয় দুরন্ত হয়ে দেখা দেয় সিকিমের সামনে। শাহবাজ আহমেদ-ঋত্বিক চ্যাটার্জী-প্রদীপ্ত প্রামাণিক এবং করণ লাল মিলিতভাবে ১১ ওভার বল করে ৪৯ রান দিয়ে ৬টি উইকেট তুলে নেন। রানের গতিও ফলস্বরূপ মাত্রাতিরিক্তভাবে কমে যায় সিকিমের। ২০ ওভারের ইনিংস শেষে আটটি উইকেট হারিয়ে মাত্র ৯৫ রান তুলে ৮৪ রানে পরাজয় বরণ করে সিকিম।
এই বড়ো জয়ের ফলে বর্তমানে গ্রুপশীর্ষে বাংলা। এখন বলাই যায় যে তাঁরা নকআউট প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে।