দিব্যঙ্গ ক্রিকেটার দেবরাজ ব্যানার্জীর গল্প।


শচীন তেন্ডুলকারকে নিজের আইডল মেনে তেরো বছর বয়সে হাতে তুলে নিয়েছিলেন ক্রিকেট ব্যাট। আসানসোলের একটি ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে দুই কোচ স্বপন মিত্র এবং তপন মিত্রের তত্ত্বাবধানে শুরু হয়ে যায় ক্রিকেটচর্চাও। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি স্কুল টুর্নামেন্ট। তারপরে ডিস্ট্রিক্ট টুর্নামেন্টে ভালো খেলে সুপার ডিভিশন।
সব মিলিয়ে উত্থানের গল্পটা ভালোই চলছিল দেবরাজ ব্যানার্জীর। কিন্তু তাঁর জীবনে কালো দিন হয়ে নেমে এলো ২০১৭ সালের ১৪ই জানুয়ারি দিনটি। হঠাৎ করে একটি এক্সিডেন্ট তাঁর হাত এবং দুই পাকে করে ভয়ঙ্কররকম ক্ষতিগ্রস্ত। ফলে প্রথমে জেলা হাসপাতাল এবং পরে কলকাতার এক অর্থোপেডিক রিসার্চ সেন্টারে তাঁর অপারেশন হয়। অপারেশনের ফলে সারা শরীরে আয়রন রড এবং প্লেট বসানো হয়। সেই সময় ৮ মাস ছিলেন সম্পূর্ণ বিছানায় এবং তার পরের দুটি বছরে মোট এগারোবার উঠতে হয় অপারেশন টেবিলে।
একসময় যখন ক্রিকেট খেলাই হয়ে উঠেছে প্রায় অনিশ্চিত তখন আশার আলো দেখান ফিজিওথেরাপিস্ট পার্থ সারথি মন্ডল। পার্থবাবু দেবরাজ ব্যানার্জীকে বলেছিলেন দিব্যঙ্গ ক্রিকেট এসোসিয়েশনের হয়ে খেলার কথা। এরপরে সেই সংস্থার সৃষ্টিকারী অভিজিৎ বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলেন এবং ২০২০ সালে ট্রায়াল দিয়ে নির্বাচিত হন দেবরাজ।


এরপরে দিব্যঙ্গ ওয়ারিয়র্স দলের হয়ে মোট ৫টি ম্যাচ খেলেন দেবরাজ যেখানে একটি ছিল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এবং অন্যগুলি বিহার, ঝাড়খন্ড, উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে। উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে হওয়া ম্যাচে ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন এবং বর্তমানে তিনি বিজওয়াদাতে অনুষ্ঠিত হতে চলা ন্যাশনাল টুর্নামেন্টে নির্বাচিত। সেই টুর্নামেন্টে মোট ২৪টি রাজ্য অংশ নেবে। লড়াই কঠিন হলেও দেবরাজদের কাছে রাজ্য ও দেশের নাম উজ্জ্বল করার জন্য কোনো কিছুই কঠিন নয়।