আটত্রিশ ছোঁয়ার আগেই ঊনচল্লিশের মায়াজাল রেখে চলে গেছেন

টেস্ট-ক্রিকেটে আজ পর্যন্ত ৮৪২টা ম্যাচ খেলে ৩৯৯টা জয়, ২২৬টা পরাজয় – জয়ের হার ৪৭.৩৯ শতাংশ, জয়-পরাজয়ের অনুপাত ১.৭৭, কোনও টেস্ট-খেলিয়ে প্রতিপক্ষ দেশের বিরুদ্ধে জয়ের হার ৪২ শতাংশের কম নেই, পরাজয়ের হার ৩১ শতাংশের বেশি নয়। টেস্ট-ক্রিকেটে দশ-হাজারী ১৪ জন ব্যাটারদের মধ্যে সেদেশের তিনজন, পাঁচশো-শিকারী সাত জন বোলারদের মধ্যে সেদেশ থেকে দু’জন, এবং (অন্তত কুড়িটা ইনিংস খেলা) ষাট-গড়ধারী ব্যাটারদের মধ্যে সেই দেশীয় দু’জন রয়েছেন।

আজ্ঞে হ্যাঁ, আমি অস্ট্রেলিয়ার কথাই বলছি। টেস্ট-দুনিয়ায় যাদের রেকর্ড রীতিমতন ঈর্ষণীয়, যাদের জিততে-ভালবাসা আর হারতে-ঘৃণা-করা মানসিকতা ক্রিকেট-বিশ্বের অনেক দেশকে খেলায় উন্নতি করতে চাগিয়ে তুলেছে, সেই অজিদের কথাই হচ্ছে। ক্রিকেটীয় সংখ্যাতত্ত্বের ধরাছোঁয়ার বাইরের এক উদাহরণ সেই দেশ থেকেই তৈরি হয়েছে – ‘Bradmanesque’ এই বিশেষণটা শুনেছেন নিশ্চয়ই!

অথচ সেই ‘সংখ্যাবলে’ বলীয়ান দেশের বহু ক্রিকেট-প্রেমিক নাকি আজও ‘ফিদা’ হয়ে রয়েছেন এমন একজন ক্রিকেটারের প্রতি যাঁর ব্যাটিং গড় – টেস্ট ম্যাচে ৩৯.০৪ (৮৯ ইনিংসে আটটা শতরান) এবং প্রথম-শ্রেণীর ম্যাচে ৪৪.৫৭ (৪০১ ইনিংসে ৪২টা) – ব্যাপারটা কি! কে এই ভদ্রলোকটি?

ভিক্টর টমাস ট্রাম্পার জন্মেছিলেন ১৮৭৭ সালের ২রা নভেম্বর, সিডনির ডার্লিংহার্স্ট অঞ্চলে। সালটা ইঙ্গিতবহ, কারণ ঐ বছরেরই সাত মাস ২০ দিন আগে টেস্ট-ক্রিকেটের যাত্রা শুরু হয়। এটা অবশ্য কারোরই জানা নেই যে গর্ভবতী অবস্থায় তাঁর মা, শ্রীমতী লুইসে ট্রাম্পার, বিশ্বের সেই প্রথম টেস্টম্যাচটি দেখতে মেলবোর্নে গেছিলেন কিনা, অথবা নিদেনপক্ষে চার্লস ব্যানারম্যানের প্রথম টেস্ট-সেঞ্চুরির খবরটা তিনি পড়েছিলেন বা শুনেছিলেন কিনা!

আজ ট্রাম্পারের পরিসংখ্যান নিয়ে Wikipedia অথবা Cricket Archive (বা Criz Buzz, ESPN CricInfo, HowSTAT) নিয়ে ঘেঁটে ঘন্ট পাকাবার কোনও ইচ্ছে নেই। বরং ওঁর খেলার ধরণ-বিশেষত্ব এবং সে বিষয়ে কিছু ক্রিকেটার ও ক্রিকেট-রসিক কি বলেছেন তার মধ্যে দিয়েই এই ‘Immortal’ খেলোয়াড়টির একটা ছবি তুলে ধরবার চেষ্টা করি। ‘স্কোরবোর্ড একটা গাধা’ এই বহুল-ব্যবহৃত ‘সর্বরোগহর’ উক্তির সমর্থন বা বিরোধিতার চেষ্টা আজ নয়। তবে তার আগে তিনটে উদাহরণ দিই তাঁর ব্যাটিং মাহাত্ম্যের।

  • ১৯০২ সালের গোটা ইংল্যান্ড-সফর ধরেই অস্ট্রেলিয়ানদের তাড়া করেছিল জঘন্য ঘ্যানঘেনে বৃষ্টিভেজা মেঘলা আবহাওয়া এবং ভিজে মাঠ। তার মধ্যেই ৩৫টা ম্যাচ খেলে ভিক্টর করেছিলেন ২,৫৭০ রান, ১১টা শতরান সমেত (সর্বোচ্চ ১২৮), গড় ছিল ‘মাত্র’ ৪৮-এর মতন। লক্ষ্যণীয় যে অল্প কয়েকটা ‘বড়’ ইনিংস খেলে তিনি তাঁর রান ও গড় বাড়াননি, ধারাবাহিকতা ও ঔজ্জ্বল্য ছিল তাঁর খেলার আকর্ষণ।
  • ঐ সফরেই ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের চতুর্থ টেস্টে প্রথম ইনিংসে ১১৫ মিনিটে ১০৪ রান (৪x১৪) করে টেস্ট-ক্রিকেটের ‘প্রথম দিন মধ্যাহ্নভোজের আগেই শতরান’ করার প্রথম ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। বিপক্ষীয় বোলারদের মধ্যে ছিলেন উইলফ্রেড রোডস, বিল লকউড, স্ট্যানলি জ্যাকসন, লেন ব্রন্ড।
  • ১৯০৪ সালের অ্যাশেজ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মেলবোর্নের ভিজে আঠালো উইকেটে প্রথম ইনিংসে তিনি করেছিলেন ৭৪, ওপেন করতে এসে শেষ আউট হন, গোটা দল করেছিল ১২২ –  দু’অঙ্কের ব্যক্তিগত রান হয়েছিল আর মাত্র দুটো, ১৮ ও ১০। আবার দ্বিতীয় ইনিংসে করেছিলেন ৩৫, গোটা দল করেছিল ১১১ – এবারও দু’অঙ্কের ব্যক্তিগত রান ছিল আর মাত্র দুটো, ৩১* ও ২০। বিপক্ষীয় বোলারদের মধ্যে ছিলেন উইলফ্রেড রোডস, জর্জ হার্স্ট, লেন ব্রন্ড, অ্যালবার্ট রেল্ফ।

মাঝে-মধ্যে মিডিয়াম-পেস বোলিংও করতেন। ১৯০২ সালে জোহানেসবার্গে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এক টেস্টে প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং (১৮ রান) ও বোলিং (৩/৬০) দুইই সূচনা করেছিলেন, দুটো ‘কট-অ্যান্ড-বোল্ড’ করেছিলেন। আর ছিলেন আউট-ফিল্ডের এক অসাধারণ ফিল্ডার, থ্রো করতে পারতেন চমৎকার। কথিত আছে, খেলার বিরতির সময় দর্শকদের আনন্দ দিতে তিনি নাকি মাঝে মাঝে সহ-খেলোয়াড় ক্লেম হিল-কে সিডনি মাঠের উল্টো-প্রান্তে বল ছুঁড়ে দিতেন, শ’খানেক গজ দূরে!

এবার আসি তাঁর ব্যাটিংয়ের  ধরণ-বিশেষত্ব নিয়ে দু-চার কথায়। সবরকম আবহাওয়া ও মাঠে খেলতে তিনি সুদক্ষ ছিলেন। তিনি প্রধানত প্রথাসম্মত (orthodox) ধরণেই খেলতেন, তবে যখন তাতে তেমন কাজ হ’তনা তখনও কিন্তু রান করবার পথ খুঁজে নিতেন – এই রচনার iconic প্রথম ছবিটাই তার একটা বড় উদাহরণ – আর এটাই তাঁর সমকালীন খেলোয়াড়ের থেকে তাঁকে আলাদা ক’রে রেখেছিল। ঠিক এই কারণেই, বিশ্বাসযোগ্য (true) উইকেটের থেকে অবিশ্বাসযোগ্য (treacherous) উইকেটে তিনি ছিলেন তুলনামূলকভাবে বেশি বিপজ্জনক, বিপক্ষের কাছে। বৃষ্টির পর রোদ উঠে পিচ যতই খারাপ হোক, গোটা-পঞ্চাশেক রান তিনি করবেনই, এমনটাই ভাবতেন বিপক্ষীয় খেলোয়াড়রা। গুড-লেংথের বলে পুল-শট মারতে তাঁর যে অসাধারণ দক্ষতা ছিল, ১৯০২ সালের গ্রীষ্মে বহু ইংরেজ বোলারই তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ পেয়েছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, “Under all conditions Trumper was a fascinating batsman to watch.” তাঁর অত্যন্ত নমনীয়তা (extreme suppleness) মাঠে তাঁর চলা-ফেরা ও ব্যাটিং-ফিল্ডিং করায় এক আশ্চর্য লাবণ্য (grace) নিয়ে আসত, মনে হ’ত সবকিছু যেন কত সহজ, ভাল বোলিংয়ের বিরুদ্ধে অনেক রান করা কোনও ব্যাপারই নয়। কিন্তু এই ‘সহজিয়া’ সাধকের সাধনা ছিল কঠিন, বিশেষত hand-eye coordination ও footwork – তাঁর পা নড়ত বেড়ালের ক্ষিপ্রতায়, কব্জিতে ছিল জোর, বলের লাইন-লেংথ বুঝে নিতেন চটপট। তাই গুড-লেংথ ডেলিভারিকেও on-the-up খেলতে সিদ্ধহস্ত ছিলেন। তাঁর lofted ড্রাইভ, পুল ও কাট শটগুলো ছিল নিখুঁত, তবে তিনি বিশেষভাবে খ্যাত ছিলেন তাঁর leg-side গ্ল্যান্স ও গ্লাইডের জন্য। অফ-স্টাম্পের ওপর জোর ডেলিভারিকে সোজা-ব্যাটে খেলে স্কোয়্যার-লেগের পেছনে পাঠাতেন, ঠিক সময়ে ব্যাটের মুখটা (bat-face) ভেতরদিকে ঘুরিয়ে (আজহারের সাড়ে-আট দশক আগে!)। 

বলা হয়ে থাকে যে আজও নাকি অনেক অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটার, “fail, fail, and fail again to emulate Trumper’s famed ‘dog shot’ – let the ball pass your front pad, jam the closed bat face down, and squirt the ball through the gap left by your raised back leg. Another, slightly easier version involves raising the front leg.” যাঁরা ক্রিকেট-বলে (ক্যাম্বিস-রাবার-প্লাস্টিক বল দিয়ে নয়!) ক্রিকেট খেলেছেন বা খেলেন, চেষ্টা করে দেখুন না একবার!

এবার উল্লেখ করি ট্রাম্পার সম্বন্ধে কিছু ক্রিকেটার ও ক্রিকেট-রসিকজনের বক্তব্য বা মন্তব্য যাঁদের কারো কারো পরিচয় জানা না থাকলে যেকোনও আন্তর্জাতিক-মানের ক্রিকেটীয় ওয়েব সাইট বা পোর্টাল থেকে দেখে নিন, তাঁদের পরিচয় দিতে গেলে আমাকে আরো একাধিক রচনা লিখতে হবে।

  • সি বি ফ্রাই, ত্রিশের দশকে বলেন: “No matter how many runs Bradman makes, Vic Trumper’s name comes up time and again, and his great deeds are discussed. He took a hold on the hearts and minds of the people in England as no other batsman has done.
  • উইলফ্রেড রোডস, যিনি ভিক্টরের সঙ্গেই (১৮৯৯-এর ১লা জুন) টেস্ট-জীবন শুরু করেন, (এবং শেষ করেন ১৯৩০-এর এপ্রিলে) – তাঁকে বহুদিন পরে জিজ্ঞাসা করে হয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে খেলা মহান ব্যাটারদের নিয়ে। মিতভাষী রোডস উত্তর দেন: “There was only one. Victor Trumper.
  • জ্যাক হবস তাঁকে “Champagne of Cricket” বলেছেন। হবসের মতে: “(Trumper) is the most perfect batsman in his scoring methods I have ever seen. He makes every orthodox stroke quite after the best models, and in addition he has several strokes of his own which is quite hopeless for other batsmen to attempt.
  • নেভিল কার্ডাসের মতে, ব্র্যাডম্যান ছিলেন যেন উড়োজাহাজ আর ট্রাম্পার যেন উড়ন্ত ঈগল। কার্ডাসের বয়স যখন মাত্র ১৪, তখন তিনি, ১৯০২ সালে লীডসে, প্রথম ভিক্টরকে ব্যাট করতে দেখেন। তাঁর মতে, ট্রাম্পারের ব্যাটিংকে সংখ্যাতত্ত্ব দিয়ে বিচার করতে যাওয়া হবে “as futile as judging Mozart by counting the notes.” ভেবে দেখুন!
  • জনি ময়েস ট্রাম্পার সম্বন্ধে বলেছেন: “When (Trumper) came, he opened the windows of the mind to a new vision of what batting could be. He lifted it to heights never known before, gave us thrills we had never experienced.

ভিক্টর কি ডনের থেকেও ভাল ছিলেন? বেশ জটিল প্রশ্ন! ‘ভাল’ বলতে কি বোঝাচ্ছেন? তাই বিতর্কে না গিয়ে, এই প্রসঙ্গে এখানে উদ্ধৃতি দিই [লন্ডনের কিংস কলেজের অস্ট্রেলিয়ান ইতিহাসের অধ্যাপক, জন্মসূত্রে অজি] Carl Bridge রচিত, ২০১৫ সালের Wisden Almanack-এ প্রকাশিত “Victor Trumper: The greatest batsman of the Golden Age”, লেখাটি থেকে (Carl-এর ঠাকুর্দা ছিলেন একজন আগ্রহী ক্রিকেট-রসিক): “I recall my grandfather, who saw both, saying Bradman was the unrivalled technician, Trumper the ultimate stylist: Spartan v Athenian, Roman v Greek, prose v poetry, quantity v quality.” কি বুঝলেন!

১৮৯৯ থেকে ১৯১২, যখন তিনি দেশের হয়ে খেলতেন, সেই সময়ে ছিল “fluctuating standards of wickets, rainy summers and difficult circumstances.” – ক্রিকেট-ঐতিহাসিকদের মতে। তাই তাঁর stats তুলনা করা উচিত তাঁর সমসাময়িক ক্রিকেটারদের সঙ্গে, যাঁদেরকেও একই ধরণের পরিস্থিতির সম্মুখীন হ’তে হয়েছিল। আজকের data-driven analytical smart দুনিয়াকে জানাতে কিছু তথ্য তো দিতেই হয়, তাই আমিও দিলাম।

  • বিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকে তিনি ছিলেন তৃতীয়-সেরা, ব্যাটিং গড়ের হিসেবে – অব্রে ফকনার ও ক্লেম হিলের পরেই।
  • বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়-সেরা, ব্যাটিং গড়ের হিসেবে – জ্যাক হবসের পরেই।
  • তাঁর খেলোয়াড়-জীবনের সময়কালে, তিনি ছিলেন তাঁদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী যাঁরা কিনা ঐ সময়ে দেড়-হাজারের বেশি রান করেছেন। একমাত্র ফকনার, হিল ও হবস, তিন দেশের তিন দিকপাল ক্রিকেটার, তাঁর থেকে গড়-অনুযায়ী এগিয়ে। বলে রাখা ভাল যে ফকনার ও হবস এই দুজনকেই প্রথম দশকের অনেকটা সময় খেলতে হয়নি যখন ব্যাটারদের জন্য পরিস্থিতি আরেকটু বেশি কঠিন ছিল।  

কার্ডাসের প্রতি যথাযোগ্য সম্মান বজায় রেখেই বলছি, ‘স্কোরবোর্ড একটা গাধা’ – তাইই মনে হচ্ছে কি!

তা এহেন ব্যক্তিত্ব যে খুবই জন্প্রিয় হবেন, তাতে তো সন্দেহের অবকাশ নেই। ১৯০২ সালে Daily Express পত্রিকার আয়োজন-করা এক নীলামে তাঁর ব্যবহৃত ব্যাট নাকি বিক্রি হয়েছিল ৪২ পাউন্ডে, যেখানে রণজিৎ সিংজী ও গিলবার্ট জেসপের ব্যাট থেকে এসেছিল যথাক্রমে ১৩ ও আট পাউন্ড – ডব্লিউ জি গ্রেসের ব্যাট থেকে উঠেছিল সর্বোচ্চ, ৫০ পাউন্ড! ১৯০৩ সালে সিডনির রেডফার্ন ওভাল মাঠে এক ক্লাব-ম্যাচে ভিক্টরের হাঁকানো এক ছক্কায় রাস্তার উল্টোদিকের জুতো-কারখানার তিনতলার এক জানলার কাঁচ ভেঙ্গে গেছিল। শোনা যায় যে তাঁর সম্মানে সেই ভাঙ্গা জানলা তেমনই রেখে দেওয়া হয়েছিল ছ’দশকেরও বেশি সময় ধরে! ১৯১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাঁর বেনিফিট ম্যাচ থেকে প্রায় তিন-হাজার পাউন্ড অর্থ সংগৃহীত হয়। সঙ্গের ছবিটা ১৯০২ সালের ১২ই ডিসেম্বরে সিডনীর টাউন হলে তাঁর সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানের, যেটির স্মরণিকার (souvenir) ছবি আগেই দিয়েছি।

বিশ্ব-ক্রিকেটের জনক (একমাত্র যাঁর ব্যবহৃত ব্যাটই নাকি ট্রাম্পারের ব্যাটের থেকে নীলামে বেশি দাম পেয়েছিল) যে খেলাটা বোঝার ব্যাপারে অন্যদের থেকে একটু এগিয়ে ছিলেন তার ছোট্ট একটা উদাহরণ দিই। ১৮৯৯ সালের ইংল্যান্ড সফরে নটিংহ্যামে প্রথম অ্যাশেজ ম্যাচে [যেটা আবার ছিল গ্রেসের শেষ টেস্ট-ম্যাচ] টেস্ট-অভিষেকে ০ ও ১১ করে আউট-হওয়া ট্রাম্পার লর্ডসের পরের টেস্টে প্রথম ইনিংসে করেন ১৩৫*, তাঁর প্রথম টেস্ট-শতরান। ডব্লিউ জি ভিক্টরকে একটা ব্যাট উপহার দেন, তাতে লেখা ছিল: “From the past champion to the future champion” – এর থেকে বড় ক্রিকেটীয় স্বীকৃতির সম্মান ট্রাম্পার বোধহয় কখনও পাননি।

“Bright’s Disease” নামে কিডনির এক অসুখে ট্রাম্পার যখন মারা যান তখন তাঁর ৩৮ বছর হতে আরো মাস-চারেক বাকি। তবে জ্যাক ফিঙ্গলটনের কথায়: “Anyone who saw him dance carefree down the pitch to meet a ball on the half-volley will never forget him.

‘Future Champion’-এর মৃ্ত্যুর মাস-চারেকের মধ্যেই, ১৯১৫ সালের ২৩শে অক্টোবর চলে যান ‘Past Champion’, ডব্লিউ জি গ্রেস – হয়ত সেই অজানা দেশের সবুজ মাঠে দুজনে মিলে একসঙ্গে ব্যাটিং ওপেন করতে নামবেন বলেই!

আজ ভিক্টর ট্রাম্পারের মৃত্যু-বার্ষিকী, সেই তারিখটা ছিল ১৯১৫ সালের ২৮শে জুন।

*সমস্ত ছবি লেখকের ব্যক্তিগত পুস্তক সংগ্রহ থেকে নেওয়া।