২০১৫-১৬ সালে যখন প্রথমবার অশোকনগর থেকে কলকাতা আসেন তখন চোখে ছিল একরাশ স্বপ্ন। কিন্ত কোনো কারণে স্বপ্ন হয়ে যাচ্ছিল ফিকে।
অশোকনগরের স্কোরার জয় চন্দ্র ছিলেন তার অন্যতম শুভাকাঙ্খী। জয় চন্দ্র তাকে আলাপ করান তৎকালীন ভবানীপুর ক্লাবের স্কোরার মনোজিৎবাবুর সঙ্গে। সেই শুরু এবং তখন থেকে ভবানীপুরের সদস্য তিনি। শুভজিৎ বলেন “যেই ম্যাচে আমি প্রথম স্কোরার হয়ে আসি, ম্যাচটা ছিল মোহনবাগান বনাম ভবানীপুর। ম্যাচে ঋদ্ধিমান সাহা ১৫৩ করেন কিন্ত দ্বিতীয় দিন ভবানীপুর জিতে যায়। ভবানীপুরের জেতার পরে স্যার কাঁধে হাত রেখে বলেছিলেন এরপর থেকে তুইই করবি।”
এরপর একটা বছর ভবানীপুর-ইস্টবেঙ্গল দুটো ক্লাবেরই দায়িত্ব সামলালেও তিনি পাকাপাকিভাবে ফিরে এসেছেন ভবানীপুর ক্লাবে। সেইখানেই আজ অষ্টম বছর শুভজিৎ দাসের। কারণ কি ভবানীপুরে থাকার? শুভজিৎ বলেন “প্রথম কথা স্যার(আব্দুল মোনায়েম)। স্যার আমাকে অন্যভাবে দেখেন, এছাড়াও অভিষেক দা(দাস), সন্দীপন দা(দাস) আমাকে অন্যভাবে দেখে। সবাই আমায় আলাদাভাবে দেখেনা। অন্য ক্লাবে স্কোরারের সঙ্গে যেভাবে থাকে সেইভাবে ভবানীপুর আমাকে দেখেনা, একজন টিম মেম্বার হিসেবেই দেখে। তাই আমি যতদিন পারবো, ভবানীপুরের সাথে থেকে কাজ করবো।”
২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে শুভজিৎ পাস করেছেন সিএবি স্কোরিং এর পরীক্ষা। বর্তমানে তিনি সিএবি, ক্লাব- দুটো দিকেই সামলান। ভবানীপুরের লিগ নকআউটের সেমিফাইনাল, ফাইনাল স্কোরিং যেমন করেছেন তেমনই ভবানীপুর-ইস্টার্ন রেল ম্যাচে তিনি ছিলেন সিএবি স্কোরার হিসেবে। শুভজিৎ বলেন “প্রথম দিকে সিএবি-ভবানীপুর একদিনে হলে সিএবি ম্যাচ করি। কিন্ত পরের দিকে এইরকম অবস্থায় পড়লে এমনও হয়েছে আমি সিএবি ম্যাচ না করে ভবানীপুর ম্যাচ করেছি। এর কারণ হিসেবে আমি বলবো কিছুটা কুসংস্কার, আমার মনে হয় আমি থাকলে ভবানীপুর ভালো খেলে বা জেতে। আমি দুটো অ্যাডজাস্ট করেই করার চেষ্টা করি।” শুভজিৎ ক্লাবে থেকেছেন সম্পূর্ণ ভালোবাসার দিক থেকে।
একদিন বলছিলেন বিসিসিআই স্কোরার না হতে পারলে তাদের পেশায় তেমন লাভ নেই। সেই লক্ষ্যেই এখন এগিয়ে যাচ্ছেন শুভজিৎ। ছোটবেলায় বাবাকে হারান, তারপরে মায়ের কাছে মানুষ হয়ে ১৭ বছর বসে ঢুকে পড়েছেন ক্রিকেট পেশায়। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন জায়গায় ম্যাচ খেলার পাশাপাশি তিনি নিজের একটি ব্যবসা শুরু করেছেন ক্রিকেটিয় সামগ্রীর।
এইভাবেই তিনি এগিয়ে যাচ্ছেন জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার স্বপ্নের পথে। শুভেচ্ছা রইল তার জন্য।