গুগল সার্চ করলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে শাহবাজ নামের অর্থ। শাহবাজ শব্দের অর্থ হলো বাজপাখি। সেই বাজপাখির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো বহুদূর থেকেও নিজের শিকার খুঁজে নিয়ে অদ্ভুত দক্ষতায় নিজের কুক্ষিগত করতে পারে সে।
এমন দক্ষ পাখির নাম যার নামের অর্থ হয় তিনি যে কর্মক্ষেত্রেও একইরকম হবেন এতে আশ্চর্য কোথায়? আর শিকারের পদ্ধতিও দেখুন! ৪৫ বলে ৮৩ বাকি – সামনে ট্রেন্ট বোল্ট, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, যুজবেন্দ্র চাহাল-এর মতো বিশ্বমানের বোলার এবং প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ-র মতো একজন উন্নতমানের বোলার রয়েছেন। অধিনায়ক ফ্যাফ দুপ্লেসি (২৯), প্রাক্তন অধিনায়ক বিরাট কোহলি (৫), বিগ হিটার শেরফান রাদারফোর্ড (৫) ফিরে গিয়ে দলের অর্ধেক স্কোয়াডই ডাগ-আউটে। সঙ্গী হিসেবে অবশ্য পেয়েছিলেন দীনেশ কার্তিককে যিনি নিজের পেস খেলার অসীম রেঞ্জ দিয়ে টার্গেটকে ছোট করে আনেন। কিন্তু তবুও খাটো হয়নি তার ৪টি চার এবং ৩টি ছয় দিয়ে সাজানো ২৬ বলে ৪৫ রানের ইনিংসটা।
প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ, ট্রেন্ট বোল্ট তো একটু শর্ট বল করলেই ফাইন লেগ বাউন্ডারি দিয়ে পড়ছিলেন মাঠের বাইরে। তাঁর ওয়াগন-হুইল বলছে নিজের ইনিংসের ৩৭টি রান তিনি করেছেন লেগসাইডে। এর মধ্যে ফাইন লেগ এবং মিড অনে করেছেন ১২ রান করে। ট্রেন্ট বোল্টকে আজ মোট ১২ রান নিলেন শাহবাজ। তাঁর বাউন্ডারিগুলির প্রত্যেকটি এল ক্রিকেটীয় শটে। লং-অন দিয়ে বাউন্ডারি মারার পরের বলেই পুল করে মিড-উইকেট দিয়ে ছয় মেরে বাংলার তপন মেমোরিয়াল ক্লাবের এই ক্রিকেটার প্রমাণ করলেন নীল জার্সি পাওয়া থেকে বেশিদিন দূরে রাখা যাবেনা তাঁকে।
ভুল করেছিলেন বিপক্ষ অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসনও। মাঝারি ফর্মের রবিচন্দ্রন অশ্বিন এবং একেবারেই অচল নভদীপ সাইনিকে দিয়ে কার্তিক-শাহবাজ জুটি সেট হওয়ার আগে বল করিয়ে। এবং সেখানেই বাজিমাত করলেন দুজনে। দরকারের ৪২ বলে ৮২ অচিরেই নেমে এলো ৩০ বলে ৪৫ রানে। এরপর পাঁচ বল বাকি থাকতে ব্যাঙ্গালোর ফ্র্যাঞ্চাইজির জয় ছিলো বেশ প্রত্যাশিত।
লাল-বল ক্রিকেটে রঞ্জি ট্রফিতে শাহবাজ নিজের মুন্সীয়ানা দেখিয়েছেন কেরিয়ারের শুরু থেকেই এবং আজ সেই তাঁর সেই ‘মিডাস টাচ’ বিস্তারলাভ করেছে আইপিএলের দুনিয়াতেও। ভারতসেরা অলরাউন্ডার যুবরাজ সিংয়ের সঙ্গে জন্মদিন ভাগ করে নেওয়া এই খেলোয়াড়ও বাঁহাতি স্পিনার এবং বাঁহাতি ব্যাটার- তবে কি আরো এক ঐতিহাসিক খেলোয়াড় আসতে চলেছেন? উত্তর দেবে সময়।
আক্ষেপ একটাই। বল হাতে যদি আরো সুযোগ ফ্র্যাঞ্চাইজি দুনিয়ায় পেতেন।