অপ্রত্যাশিত এক ঘূর্ণিঝড়।

অনেক সময় এমন ঘটনাও ঘটে যে আবহাওয়াবিদদের করা সবরকম পূর্বাভাসকে সম্পূর্ণরূপে নস্যাৎ করে দিয়ে একদম অভাবনীয়ভাবে একটি ঝড় এসে বদলে দেয় সবকিছু। তা হয়তো হতে পারে তীব্র গরমে সামান্য শীতলতার আভাস আবার তা লন্ডভন্ড করে দিতে পারে বেশ কিছু জীবন।

আজ কলকাতা থেকে সুদূর পুনেতে কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ম্যাচেও যেন ঘটে গেলো কিছুটা এমন ঘটনা। পূর্বাভাস অনুযায়ী হয়তো ভাবা গিয়েছিল যে ঝড় হলে তা তুলবেন আন্দ্রে রাসেল বা নিদেনপক্ষে স্যাম বিলিংস ও নীতিশ রানা। কিন্তু আজ ঝড় হয়ে প্যাট্রিক জেমস কামিন্সের আসাটা যেন হয়ে গেলো একেবারেই বেহিসেবী। তা যেন এক লহমায় ওলোটপালোট করে দিলো ১০১-৫ অবস্থায় প্রতিপক্ষকে দেখে ঠোঁটের কোণে আলগা হাসি রাখা অধিনায়ক রোহিত শর্মার।

আচ্ছা রোহিত কি ভেবেছিলেন যে আর মাত্র ১৭ বল স্থায়ী হবে তাঁদের ম্যাচ? না এক্ষেত্রে যদি কোনো অধিনায়ক খুব আত্মবিশ্বাসী থাকেন যে প্রতিপক্ষ দলের বাকি ৫ উইকেট তিনি ফেলে দিতে পারবেন দ্রুততার সাথে তবে ইনিংসটি ১৭ বল স্থায়ী হওয়া খুব অপ্রত্যাশিত হবেনা। কিন্তু যদি একজন বোলিং অলরাউন্ডার ১৭ বলে বাকি থাকা ৬১ রানের ৯৭ শতাংশ রান করে যান ৬টি ছক্কা মেরে তবে তা আশাবাদী অধিনায়কের আশার মাত্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ঠিক ততটাই তাঁকে করে হতাশায় নিমজ্জিত।

প্রতিপক্ষ বোলার কারা ছিলেন? অভিজ্ঞ জসপ্রীত বুমরাহ, টাইমল মিলস, বিগ ব্যাশ লিগ কাঁপানো ড্যানিয়েল স্যামসের মত প্রতিভাসম্পন্ন বোলাররা। তবুও একবারের জন্য ভীতসন্ত্রস্ত হতে দেখা যায়নি কামিন্সকে। টাইমল মিলসের করা তাঁর ইনিংসের দ্বিতীয় বলটাই পাঠান গ্যালারিতে এবং তার পরেই বাউন্ডারি। জসপ্রীত বুমরাহর পরের ওভারেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। ছক্কা-চার এলো পরপর আবার এবং আটটি বল খেলে যখন কামিন্স অপরাজিত ২২ তখন তাঁর দলের আস্কিং রেট নেমে ৭। 

তার পরেরটুকু তো করে দিলেন ড্যানিয়েল স্যামস। বিগ ব্যাশ কাঁপিয়ে এলেও আইপিএলে পরের পর ম্যাচ ব্যর্থ হওয়া এই পেসার নিজের ওভারে একটিও এমন বল করেননি যেখানে তার বলের উত্তর চার বা ছয় দিয়ে আসেনি। প্রথম বল লং-অন দিয়ে গিয়েছে গ্যালারিতে এবং পরেরটি শুধু বাউন্ডারি হলো। তার পরে আবার দুটি ছয় এবং একসময় ১২ বলে ৪৪ অবস্থায় যখন একটি প্রায় বীমার হওয়া ডেলিভারি লং-অফ দিয়ে তুলে দিয়েছিলেন তা যদি সূর্যকুমার যাদব ছয় হওয়া না আটকাতেন তবে হয়তো আইপিএল টুর্নামেন্টে সবচেয়ে দ্রুত হাফসেঞ্চুরি তাঁর নামের পাশেই থাকতো। কিন্তু ওই একটি ঘটনার জন্য তিনি লোকেশ রাহুলের সঙ্গে যুগ্মভাবে থেকে গেলেন এই লিস্টে।

আজ মুম্বাই থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক হয়তো উত্তর তৈরী করেছিল রাসেলের জন্য কিন্তু প্রশ্নপত্রে দেখা দিলেন প্যাট কামিন্স। তিনি এসেই দেখালেন ১১.৫০ কোটি কখনোই বিফলে যায়না বা হয়না ‘ব্যাড ইনভেস্টমেন্ট’। বাকি আর কি ‘সারপ্রাইজ প্যাকেজ’ দেবে কেকেআর – দেখতে হলে সঙ্গে থাকুন।

ছবি: ইন্টারনেট