অপরাজিত

দিনের একটা সময় চন্ডিগড় এর স্কোরবোর্ড ১৬০-৭ থেকে যখন আস্তে আস্তে এগোচ্ছে এবং বল সংখ্যাও বাড়তে বাড়তে পেরিয়ে যেতে চলেছে তার দৈনন্দিন মেয়াদ তখন যেন উৎকণ্ঠা প্রবল থেকে প্রবলতর হচ্ছে বাংলা দলের অন্দরে এবং সমর্থকদের মনের অন্দরেও। তবে কি আবার আসছে ল্যাজের ঝাপ্টা? সেই ল্যাজের ঝাপ্টা যা বাংলাকে বহু জেতা ম্যাচ হাতছাড়া করিয়েছে।

কিন্তু এবার আর সেটা হতে দেননি বাংলার ক্রিকেটাররা। পেনাল্টিমেট উইকেটে যখন জাসকারণ সিং এবং শ্রেষ্ঠ নির্মোহি ব্যাট করছেন তখন অনুষ্টুপ মজুমদারকে আনাই প্রমাণিত হলো আসল ট্রাম্পকার্ড। নিজের চোরা লেগস্পিন দিয়ে যখন ঋত্বিক রায়চৌধুরীর হাতে অনুষ্টুপ ধরা পড়ালেন শ্রেষ্ঠ-কে তখন বাংলার এই মরশুমের গ্রুপ স্টেজে শ্রেষ্ঠ হওয়া যেন ‘কুছ পল কি বাত।’ আর বাকিটার জন্য তো ছিলেনই ঈশান পোড়েল।

ছবি : সিএবি

আজ সারাদিন চন্ডিগড় দলের মাইন্ডসেট যেন ছিলো ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী’ ধরণের। অবশ্য সে যুদ্ধ জয়লাভের জন্য নয় বরং সেই যুদ্ধের রণবাদ্য ‘বেঁচে থাকার গান’ শোনায় বেশি। আগেরদিনের ব্যাটসম্যান গৌরব গম্ভীর নিজের ইনিংসে প্রায় ৭০টি বল খেলে করে গেলেন ১৯ রান। অধিনায়ক মনন ভোহরা নীলকণ্ঠ দাসের বলে আউট হওয়ার আগে ৪০টি রান করলেন। অমৃতলাল লুবনা দুর্ধর্ষ ৫৭ করলেও চন্ডীগড় দলের দুর্ভাগ্য যে উইকেটরক্ষক জাসকরানভীর সিং এবং গুরিন্দর সিং বেশি রান করতে পারেননি। তবে আউট হওয়ার আগে ৬২টি বল খেলে বেঁচে থাকার লড়াইয়ের অংশীদার হয়েছিলেন গুরিন্দর।

এরপরই একটি অসম লড়াই বেশ দৃঢ়তার সাথে করতে শুরু করেন জাসকারণ সিং এবং শ্রেষ্ঠ নির্মোহী। দুজনে নিজেদের মধ্যে মাত্র ৮৭ বলে ৭৯ রানের পার্টনারশীপ করলেও শেষ অবধি টিঁকিয়ে রাখতে পারেননি নিজেদের দলের হার না স্বীকার করার সম্ভাবনা। শেষ উইকেটে ৩৪ বলে ৪ রানের পার্টনারশীপ ভেঙে গ্রুপ পর্যায়ে ভারতসেরা করলেন ঈশান পোড়েল।

ম্যাচশেষে কোচ অরুণ লাল বলেছেন “আমি অনেকদিনই বলে আসছি দলের বোলাররা দুর্দান্ত কাজ করেছে। এটা জিততেই হবে এমন ম্যাচ ছিলোনা, তবুও তারা খুব খেটেছে। এর ফলে আমাদের জয়ের অভ্যাস থেকে গেছে এবং আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে।

এই ম্যাচে আমরা তিনটে সেঞ্চুরি প্রায় পেয়ে যেতাম। আমাদের আট নম্বর ব্যাটসম্যান ৯৭ রান করেছে এটা ব্যাটিংয়ের অনেক ইতিবাচক দিক।”

আপাতত বাংলা একমাত্র দল হিসেবে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে উঠলো পরবর্তী রাউন্ডে। মুম্বাই, কর্ণাটক এবং পাঞ্জাব ১৬ পয়েন্টে শেষ করেছে। এলিট গ্রুপ থেকে কোয়ালিফাই করা দলগুলি হলো মধ্যপ্রদেশ, বাংলা, মুম্বাই, কর্ণাটক, পাঞ্জাব, উত্তরাখন্ড, উত্তরপ্রদেশ এবং ঝাড়খন্ড।