টিভি খুললেই বারবার দেখাচ্ছিল চেন্নাই সুপার কিংসের নতুন অধিনায়কের ব্যাট হাতে স্ট্রাগল করার গল্পটা। ইনিংসের শেষ বলের ছক্কা বাদ দিলে রবীন্দ্র জাদেজার নামের পাশে ২৭ বলে ২০। রবীন্দ্র জাদেজার যা বিশেষত্ব অর্থাৎ পেসারকে অনায়াস ভঙ্গিমায় চার-ছক্কায় পাঠানো সেখানেও আজ ব্যর্থ তিনি। এমনই শোচনীয় অবস্থা যে শিবম মাভির ফুলটসও আজ ব্যাট দিয়ে প্রত্যাঘাতে বাউন্ডারিতে পাঠাতে ব্যর্থ জাদেজা। একেই কি ‘অধিনায়কত্বের চাপ’ বলা হয়?
ইনিংস শুরুর সময়ে মহেন্দ্র সিং ধোনিকেও দেখে স্বচ্ছন্দ লাগেনি। বারবার তাঁর সামনে এসে যেন নিজের নখ-দাঁত বার বার করছেন বরুণ চক্রবর্তী সুনীল নারিন। স্পিনের বিরুদ্ধে ইনিংসে তাঁর স্ট্রাইক রেট ৪১.৬২ এবং ১৭ ওভার পর্যন্ত ধোনির নামের পাশে সর্বমোট স্ট্রাইক রেট ছিলো ৬০।
একজন বড়ো খেলোয়াড়ের সঙ্গে একজন সাধারণ খেলোয়াড়ের পার্থক্য গড়ে দেয় দুঃসময় কাটিয়ে ওঠার ক্ষমতা আর সেখানেই অনন্য ধোনি দেখালেন তাঁর অনন্য হওয়ার কারণ। আন্দ্রে রাসেলের সুনাম ছিলো ডেথ ওভারে দুরন্ত ‘হিট দ্য ডেক’-এর জন্য। আজ ইনিংসের অষ্টাদশ ওভার যখন আন্দ্রে রাসেল বল করতে আসছেন তখনও অসম্ভব লাগছে শেষ তিন ওভারে ৪৭। একটু লেংথের হেরফের হতেই বারবার জায়গা করে নিয়ে পাঠাচ্ছিলেন বাউন্ডারির বাইরে। রাসেলকে পয়েন্ট দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠানো বা মাভির ফুলটসকে কভার দিয়ে বাউন্ডারি বা নো বলে ছক্কা – সব মিলিয়ে শেষ তিন ওভারে ছয়টি চার ও একটি ছক্কায় চেন্নাইকে এনে দিলেন ৪৭টি মূল্যবান রান।
শেষ এই ছন্দে দেখা গিয়েছিলো ২০১৯ মরশুমে। মাঝখানে দুটি বছরের বিরতি এবং তারপরে আজ আবার। মহেন্দ্র সিং ধোনি ডেথ ওভারে ফুলটস বা হাফভলিকে শক্তিশালী কব্জির দক্ষতায় বাউন্ডারি সীমানার বাইরে পাঠাচ্ছেন – এই দৃশ্য তো আইপিএলপ্রেমীদের কাছে চিরন্তন। যতই ধোনি পেশাদার ক্রিকেট থেকে দূরে থাকুন, যতই অফ ফর্মে থাকুন, পেশাদারিত্বের শীর্ষস্থানে দীর্ঘ এক দশকেরও বেশী সময় থাকা একজন মানুষের তো নিজের ছন্দ ফিরে পাওয়া খুবই সাধারণ ব্যাপার এবং ফিরে আসার রাস্তাও ভালোই জানেন তিনি।
৩৮ বলে ৫০ এর এই ইনিংসে স্পিনারদের বিরুদ্ধে খেলার অক্ষমতা একমাত্র থেকে গেলো “অড ওয়ান আউট” হিসেবে। ওটাও হয়তো ‘ওয়ান ইনিংস অ্যাওয়ে’। কে বলতে পারে?