টুলটুল স্যারকে পেয়ে আপ্লুত অর্ণব-রোহন। ট্রফি জয় লক্ষ্য প্রিনানের।


আজ ৫ই সেপ্টেম্বর আসন্ন ২০২২-২৩ মরশুমের জন্য খেলোয়াড় সই সম্পূর্ণ হলো মোহনবাগান দলের। গত ২রা সেপ্টেম্বর ক্লাবের সই সম্পূর্ণ করেছিলেন অনুষ্টুপ্ মজুমদার, অভিষেক পোড়েল, কাজী জুনাইদ সাইফি, শুভম সরকার প্রমুখরা। এরপরেই তারা চলে যান দলীপ ট্রফি এবং বাংলা দলের প্র্যাক্টিস ম্যাচে।
ব্যাটিং বিভাগে অনুষ্টুপ মজুমদার, প্রিনান দত্ত, অভিমন্যু ঈশ্বরণ,রোহন ব্যানার্জী।কিপার হিসেবে অভিষেক পোড়েল, দীপ্তলোক চ্যাটার্জী। অলরাউন্ডার হিসেবে অর্ণব নন্দী, রাজকুমার পাল, অয়ন ভট্টাচাৰ্য। বোলার হিসেবে শুভম সরকার, সুমিত মোহান্ত- সব নিয়ে বেশ শক্তিশালী দল তৈরী মোহনবাগানের। গতবছর তারুণ্য-অভিজ্ঞতার মিশেল যা ছিল তার থেকে এবার যেন সেই মিশেল আরো বেশী।


দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এবং ময়দানের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার অর্ণব নন্দী বলেন “একটা টিম তারুণ্য এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে তৈরী হয়। গতবারের টিমেও তাই ছিল তবে টিম ম্যানেজমেন্ট ঠিক কম্বিনেশনে বাধঁতে পারেনি। তাই গতবার রেজাল্ট খারাপ হয়। আশা করি এই বছর তা হবেনা কারণ এই বছর যিনি কোচ হয়ে এসেছেন তার পূর্বের অভিজ্ঞতা দলকে আরো সুদৃঢ় করে দিয়েছে। তিনি প্রমাণ করেছেন যে তিনি বেস্ট কোচ। আমরা ওনাকে পেয়ে খুবই আশাবাদী। আমরা ভালো ক্রিকেট খেলবো।” অর্ণব আরো যোগ করেছেন “টুলটুল স্যার স্টার খেলোয়াড় নিয়ে খুব একটা কাজ করতে পছন্দ করেন না, বরং উনি উঠতি ক্রিকেটারদের নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করেন। আমি আগেও ওনার সাথে অনেক কাজ করেছি। আগেও যখন ইস্টবেঙ্গলে ছিলাম এবং তার আগেও ওনার সঙ্গে প্র্যাক্টিস করেছি। ওনার সঙ্গে আমার ইকোয়েশন খুব ভালো মেলে। আমি জানি উনি কিরকমভাবে টিমকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে পারেন। আমি আশাবাদী যে এই বছর আমাদের দলের ইয়ং খেলোয়াড়রা খুব ভালো খেলবে।”


গতবছর মোহনবাগান রত্ন পাওয়া প্রিনান দত্ত বললেন “আগের বছর মোহনবাগান রত্ন পেয়েছি এটা আমার কেরিয়ারের একটা মাইলস্টোন। কিন্তু আগেরবার কোনো ট্রফি পাইনি। এইবছর চেষ্টা করবো ট্রফি দেওয়ার। এবার আমাদের মূল লক্ষ্য হবে যাতে ট্রফি পাবো। আমার ব্যক্তিগত পারফরমেন্স তখনই কাজে লাগবে যদি ট্রফি পাই।” পাশাপাশি গতবছর প্রিনান লাল বলের ক্রিকেটে অনবদ্য পারফরমেন্স করলেও সাদা বলের ক্রিকেটে বেশি ম্যাচ পাননি। ইন্টারভিউ দেওয়ার মধ্যে প্রিনান এটাও জানালেন যে তিনি সুযোগ পেলে সাদা বলেও ভালো খেলতে উৎসাহী।
মোহনবাগান দলে খেলে মাঝে একটা বছর কালীঘাট ক্লাবে গিয়েছিলেন। কিন্তু এই বছর আবার মোহনবাগান ক্লাবে ফিরে এসেছেন রোহন ব্যানার্জী। রোহন ব্যানার্জী মোহনবাগান দলে ফেরার কারণ হিসেবে বললেন “আগের বছর আমি কালীঘাট ক্লাবে গিয়েছিলাম কিন্তু সেইখানে জুনিয়র খেলোয়াড়রা এতো ভালো খেলে যে আমার খুব একটা সুযোগ আসছিল না। সঞ্জীব সান্যাল কোচ হিসেবে এতো ভালো কাজ করেন এবং খেলোয়াড়রাও খুবই ভালো খেলে। আমি একটু ফিটনেসের সমস্যায় ছিলাম তাই দুটো ম্যাচে রান করতে পারিনি। তাই সুযোগ পাওয়ার জন্যই মোহনবাগান ক্লাবে আবার ফেরা।”
প্রণব নন্দীর কোচিং রোহন বেশ সমৃদ্ধ হয়েছিলেন ২০১০-১২ এই দুটি মরশুমে। সেই মরশুমে রনজি ট্রফিতে ভালো খেলার পাশাপাশি ইস্টবেঙ্গলের হয়ে সাতটা সেঞ্চুরি করেন। রোহন বলেন “টুলটুল স্যার প্রত্যেক প্লেয়ারের সঙ্গে সম্পূর্ণ আলাদাভাবে কাজ করেন। আমি আশাবাদী দল তো টুলটুল স্যার থাকায় ভালো করবেই, প্রতিটা খেলোয়াড় টুলটুল স্যারের উপস্থিতিতে ভালো খেলবে।”
যাকে নিয়ে সবাই আপ্লুত, সেই প্রণব নন্দী বললেন “আশা করবো ভালো কিছু করতে হবে। নতুন জায়গা, মানে পুরোনোই জায়গা, মোহনবাগানের সঙ্গে বহু বছর আলাদা ছিলাম, আবার ফিরে এসেছি। এইবার দল প্রায় নতুন, কিছুদিন প্র্যাক্টিস করে তার ওপর কাজ করে তারপরে খেলতে নামতে হবে। দল যতক্ষণ মাঠে না নামলে বলা যায়না। টিম কেমন খেলবে তা সময় বলবে। আমি সৎভাবে কাজ করবো এবং আমি আশাবাদী।”
গতবছর একটু অফ ফর্মে ট্রফিহীন মরশুম গেলেও এইবছর মোহনবাগানকে পুনরায় ট্রফির সরণীতে ফিরতে দেখা যেতে পারে এমনটাই আশাবাদী সদস্যরা। বাকিটা তো কোচ প্রণব নন্দীর ভাষায় “সময়ই বলবে।”

*কভার ছবি: মোহনবাগান ক্লাব