“নামিবিয়াতেও নিজের খেলা খেলতে চাই।”- শ্রেয়ান্স ঘোষ

প্রবল বৃষ্টির মধ্যে ময়দানের জল-কাদা ঠেলে যখন পূর্ব নির্ধারিত কথা অনুযায়ী ইডেন গার্ডেন্স পৌঁছে যাই তখন দেখি শ্রেয়ান্স ঘোষ একটা সোফায় বসে আছেন। আরো গুরুত্বপূর্ণ কথা যে আমাকে সময় দিয়েছিলেন বেলা আড়াইটের সময় এবং আমি যখন গিয়ে পৌঁছাই তখন ঘড়ির কাটায় বেলা তিনটে দুই। মাঝখানে কেটে গিয়েছে ৩২ মিনিট এবং শুধুমাত্র একজন সামান্য চেনা ক্রিকেট লিখিয়ের জন্য অপেক্ষা করেছেন নামিবিয়া সফরে নির্বাচিত হওয়া বাংলার ক্রিকেটার! এই ঘটনা রীতিমতো তাঁকে আমার কাছে করে তুলল বেশ সন্মানীয়। সঙ্গে থাকা কৌশিক বিশ্বাস বললেন “অন্য ক্রিকেটার হলে কিন্তু বাড়ি চলে যেত।”
অতঃপর সিএবিতে বসে শুরু হলো ইন্টারভিউ।
প্রশ্ন:- অভিনন্দন। সিলেকশনের জন্য।
শ্রেয়ান্স:- ধন্যবাদ।
প্রশ্ন:- তুমি ক্লাব ক্রিকেট খুব ভালো খেললে এবং তোমার নির্বাচন হলো। কেমন লাগছে?
শ্রেয়ান্স:- ভালো তো লাগছেই তবে আমি নির্বাচন ভেবে তো খেলিনি। আমার কাজ ছিল ভালো করে তৈরী হওয়া এবং ক্লাবের জন্য রান করা। ওটা করতে পেরেছি, ভালো লাগছে এবং সিলেকশন হওয়ায় আরো ভালো লাগছে।


প্রশ্ন:- পুরো মরশুমে তোমার প্রস্তুতি কিভাবে চলত?
শ্রেয়ান্স:- যখন প্র্যাক্টিস স্টার্ট হয় তখন আমাদের কোচ সঞ্জীব সান্যালের সঙ্গে কথা হয় যে কি কি প্ল্যান আছে। আমি ভেবেছিলাম টপ রান স্কোরার হবো এবং ভেবেছিলাম যে ম্যাচ খেলবো ভালো করে খেলবো। কয়েকটা ম্যাচ এমন হয়েছে যে ডিসিশন আমার বিরুদ্ধে যায় কিন্তু ওটার জন্যও অতো কিছু মনে হয়নি। আমি মেন্টাল, ফিজিক্যাল দুই ধরণের প্র্যাক্টিস খুব প্রোডাক্টিভভাবে করতে চেয়েছি।
প্রশ্ন:- লাল বলের ক্রিকেট খেলে এসেই আবার সাদা বল। সাদা বল খেলেই আবার লাল বল। এই ট্রানসিশন কিভাবে সামলেছো?
শ্রেয়ান্স:- লাল বলের ম্যাচের আগে ওইরকম প্র্যাক্টিস করেছিলাম আবার সাদা বলের ম্যাচের আগে সাদা বলের মতো প্র্যাক্টিস করেছি। আমি জানি আমার খেলা কেমন। আমি ভালো খেলবো এই আত্মবিশ্বাস ছিল। খুব এপ্রোচ বদলাইনি।
প্রশ্ন:- লাল বলের ক্রিকেটে ওপেনার বা নাম্বার তিনেই ব্যাট করেছ। প্রায় নতুন বল তোমায় খেলতে হয়েছে। কি স্ট্রাটেজি ছিল তোমার?
শ্রেয়ান্স:- ভালো বল ছাড়া এবং মেরিট বুঝে খেলাই স্ট্রাটেজি ছিল, এছাড়াও আমার স্কোরিং জায়গাগুলো আরো ভালো করেছিলাম। একই গ্রিনটপে খেলেছি সেইখানে আমি লেট খেলেছি এবং উইকেট বুঝে খেলেছি যে কোথায় কোন শট খেলবো আর খেলবোনা। আমার একটা আইডিয়া আছে যে কোথায় কি বোলিং হয় আর কিরকম উইকেট হয়। মোটামুটি লম্বা ব্যাটিং করতে চাই ওপেনার হিসেবে এবং পুরো দিন খেলতে চাই। নতুন বল কাটিয়ে পরের দিকে শট খেলতাম।
প্রশ্ন:- ওয়ান ডে ক্রিকেটে খুব বেশী সিঙ্গল বা ডাবলস খেলতে হয় তার জন্য কি কি ট্রেনিং করেছ?
শ্রেয়ান্স:- জিম আমাদের আলাদা করতে হয় কারণ ওটা ক্লাব করে দেয়না। ক্লাবে শাটল রানিং, লং রানিং বা স্প্রিন্ট করতাম। ওয়ান ডের আগে বেশি শাটল রানিং করতাম।
প্রশ্ন:- জুনের শুরুতে একটা চোট লাগে তোমার পায়ে। কিভাবে রিহ্যাব করেছ?
শ্রেয়ান্স:- ম্যাচে ফিল্ডিং করতে গিয়ে চোট লেগেছিল। অতটা বড়ো কিছু হয়নি, ব্যাটিং করেছি ঠিকঠাক। আমি ক্লোস-ইন ফিল্ডিং বেশী করি অর্থাৎ স্লিপ বা গালিতে যেখানে খুব বেশি দৌড়োতে হয়না। একদিকে ভালো হয়েছে চোটটা গুরুতর হয়নি।


প্রশ্ন:- নামিবিয়া ট্যুরে তোমার আশা কিরকম?
শ্রেয়ান্স:- আমি কলকাতা ক্লাব ক্রিকেটে যা করে এসেছি আমি ওটাই করতে চাই। খুব বিশাল পরিবর্তন করবো না। যেমন টিটোয়েন্টি খেলে এসেছি সেইভাবেই খেলবো।
প্রশ্ন:- টিটোয়েন্টিতে তোমার পছন্দের ব্যাটিং জায়গা কোনটা?
শ্রেয়ান্স:- আমি নিজেকে ওপেনার ভাবি এবং ওপরে ব্যাট করতে চাই। পাওয়ারপ্লে খুব বড়ো অ্যাডভান্টেজ কারণ ফিল্ডার ওপরে থাকে এবং ব্যাট করা সহজ হয়। প্রথম ছয় ওভার কেটে গেলে সিঙ্গল ডাবলস নিয়ে ভাবি এবং স্লগে অন্যরকম খেলা হয়।
প্রশ্ন:- অনেক ধন্যবাদ।
শ্রেয়ান্স:- ওয়েলকাম।