দেশবন্ধু পার্ক ওভালে চলছিল ইস্টবেঙ্গল এবং কলিকাতা পুলিশের মধ্যে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল। ইস্টবেঙ্গল ক্লাব আগে ব্যাট করে একসময় হয়ে গিয়েছিলো ১৪৭-৫। সেইখান থেকে তাদের রানের গন্ডি পেরোলো ৫৬৭ রান। রান তোলার মূল কান্ডারী ছিলেন সায়ন শেখর মন্ডল। যিনি ব্যাট হাতে বিগত কয়েক মরশুমে হয়ে উঠছেন রীতিমতো ‘ফ্লেক্সিবল’। এই ম্যাচেও হলোনা ব্যতিক্রম। ১০৮ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে দলকে ভালো জায়গায় পৌঁছে দিলেন সায়ন। সঙ্গীবদল হয়েছে বেশ কিছুবার। আদিত্য ভার্মা করেন ৬৮, শুভঙ্কর বল করেন ৪৪ এবং শেষে অধিনায়ক সোহম ঘোষ করেন ৩৯।
বল হাতে রোহিত কুমার, সন্দীপন ৩টি করে এবং আকাশ পান্ডে এবং সোহম ঘোষ ২টি করে উইকেট তুলে নেওয়ায় ৪২৩ রানের একটি বড়ো ব্যবধানে জয় পায় ইস্টবেঙ্গল।
ম্যাচের পরেই জামা পরিবর্তন করে একটি ঠান্ডা জলের বোতল হাতে নিয়ে এলেন সায়ন শেখর মন্ডল। লেখার জন্য ছবি চাওয়ায় অন্তত তিনবার নিজের ছবিটি দেখে নিলেন তিনি এবং এরপর নিজেই ছবি পাঠানোর আশ্বাস দিলেন। সঙ্গে ছিলো পাঁচ মিনিট ব্যাপী ইন্টারভিউ।
প্রশ্ন:- দুটো ক্লাব ম্যাচ। দুটোতেই বড়ো ইনিংস, একটি হাফসেঞ্চুরি এবং এই ম্যাচে সেঞ্চুরি। গরমের মধ্যে খেলার চ্যালেঞ্জ নিচ্ছ কীভাবে?
সায়ন:- ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, কালীঘাট বড়ো ক্লাবে কাউন্ট হয়, এরা সেমিফাইনাল, ফাইনাল খেলে। এই তিনটে ক্লাব মিলিয়ে এটা আমার বারোতম বছর। সুতরাং গরমে খেলার অভ্যাস আছে, এই আর কি। এই বছর সেটাকে পারফরমেন্সে কনভার্ট করার চেষ্টা করছি কারণ আমাদের ইস্টবেঙ্গল টিম এই বছর ইয়ং আছে। সিনিয়ররা ভালো করে খেললে সেটা দলের ভালো। এই নতুন দল নিয়ে আমরা আশাবাদী আছি।
প্রশ্ন:- ইস্টবেঙ্গল এর মতো বড়ো দলে একজন ব্যাটার এবং ‘গো-টু’ বোলার হিসেবে তোমার দায়িত্ব কতটা সিগনিফিকেন্ট হতে পারে?
সায়ন:- সিগনিফিকেন্ট তো আছেই। ভালো করলে টিমেরই ভালো, সেই সঙ্গে ফিটনেসে ফোকাস দিয়েছি এই বছর। বেঙ্গল ক্যাম্পে ফিটনেসে অনেক জোর দেওয়া হয়েছিলো এবং সেটাই আমাকে লাভবান করছে। ক্লাব ম্যাচের মাঝে অফ থাকলেও সিএবি ট্রেনিং চলে, এটাই বেনিফিট করছে।
প্রশ্ন:- বেঙ্গল টিমে প্রথম ম্যাচে টিমে ছিলেনা এবং সেকেন্ড ম্যাচে টপ অর্ডারে ব্যাট করছো এবং সাত নম্বরে খেলছো। সব মিলিয়ে কতটা চ্যালেঞ্জিং?
সায়ন:- অবশ্যই নতুন বল খেলা চ্যালেঞ্জিং। দলে যে রোল দেওয়া হয় সেরকম খেলার চেষ্টা করি। এরকম তো না যে আমি অনেক রান করলে একটা স্পট আমার অধিকারে। যেটুকু সুযোগ পাবো, চেষ্টা করি কাজে লাগানোর।
প্রশ্ন:- অধিকার নয়, একজন ব্যাটারের তো প্রেফারেন্স থাকে…
সায়ন:- প্রেফারেন্স বলতে আমি বেঙ্গলে ওপেনিং করেছি….
প্রশ্ন:- সেঞ্চুরিও করেছ।
সায়ন:- সেঞ্চুরি করেছি। সাতে খেলেছি, ছয়ে খেলেছি এবং ঘুরে ফিরে সব জায়গায় খেলেছি। এখন নিজেকে ওই ‘কনস্ট্যান্ট’ করতে চাইনা।
প্রশ্ন:- তোমার এই ফ্লেক্সিবিলিটি কিভাবে এসেছে? ওপেনে একরকম খেলা এবং সাতে অন্যরকম খেলা- দুদিকে।
সায়ন:- দেখো আমি এখন যখন খেলতে নামি তখন ভাবি এটাই আমার লাস্ট ম্যাচ। চারে বা আটে- যেখানেই ব্যাটিং করি, ভালো খেলার চেষ্টা করি।
প্রশ্ন:- চন্ডীগড় ম্যাচে ৯৭ রানের মাথায় আউট অফ পার্টনার হওয়া কতটা খারাপ লেগেছিলো?
সায়ন:- খারাপ তো লেগেছিলো অবশ্যই। আর যদি তিনটে বল পেতাম তবে হয়তো অন্যরকম হতো, আউটও হতে পারতাম। যখন মুকেশ ব্যাট করতে নামে আমি ৪০ রানে ব্যাটিং। তখন ভাবিনি যে একশোর কাছে যাবো। আফসোস তো আছেই তবে এরকম হয়েই থাকে।