অনুর্ধ-১৩ স্তর থেকে খেলা বাংলার জার্সিতে এবং ফার্স্ট ক্লাস কেরিয়ারে দীর্ঘ ১৬ বছরে বাংলার হয়ে খেলেছেন ১০০টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ, ৭৬টি লিস্ট-এ এবং ২২টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। বাংলার হয়ে উৎপল চ্যাটার্জীর পরে তিনিই দ্বিতীয় ক্রিকেটার যিনি প্রথম শ্রেণীর কেরিয়ারে ২,০০০ রান ও ২০০টি উইকেট নেওয়ার এই ‘ডাবল’ সম্পূর্ণ করেছেন। ২০১৬ সালে সব ফরম্যাট থেকে অবসর নেওয়ার পরে তিনি এসেছেন কোচিংয়ে। প্রথমে তিন বছর কোচের দায়িত্বে তিনি ছিলেন বাংলার অনুর্ধ-২৩ দলের। তিনবার ওয়ান-ডে টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠে শেষবার বাংলা হয় চ্যাম্পিয়ন। এবার তিনি সিনিয়র বাংলা দলের সহকারী কোচ, সেই সঙ্গে দায়িত্ব পেয়েছেন ইস্ট জোন টিমের। সিএবিতে বসে নিজের জন্মদিনের জন্য ‘উইলোর উইল’-কে ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে নিজের কোচিং দর্শনও ভাগ করে নিলেন সৌরাশিস লাহিড়ী।
প্রশ্ন:- অভিনন্দন। তুমি ইস্ট জোনের কোচ হিসেবে মরশুম শুরু করতে চলেছো।
সৌরাশিস:- ধন্যবাদ। অনেক ধন্যবাদ।
প্রশ্ন:- এখন তুমি বাংলা দলের কোচ। দু’বার বাংলার রঞ্জিতে খুব ভালো পারফরমেন্স। কিন্ত ট্রফি আসছেনা। এর কারণ তোমার কি মনে হয়?
সৌরাশিস:- ট্রফি আসছেনা এটা চিন্তার। কিন্ত এটা সত্যি যে ট্রফি আসা একটা পদ্ধতি। আমি আজ বললাম ট্রফি আসবে আর কাল চলে এলো এটা হয়না। আমি বলতে পারি যে জার্নি শুরু হয়ে গিয়েছে। একটা ক্লু পাওয়া যায় যে আমরা খুব কাছাকাছি সেটা আমরা পাচ্ছি। আমরা শুধু ফাইনাল হার্ডলটা টপকাতে পারছিনা। টিম কিন্ত ফাইনাল, সেমিফাইনাল প্রায় প্রতিবার খেলছে। সেই জায়গাটা আমাদের মেরামত করতে হবে। আমাদের যা পোটেনশিয়াল বা ট্যালেন্ট আছে তাতে আমি নিশ্চিত যে আর কিছু বছরের মধ্যেই আমরা ট্রফি পাবো।
প্রশ্ন:- তুমি অনুর্ধ-২৩ বাংলা দলের কোচ ছিলে যখন ওয়ান-ডে টুর্নামেন্ট তারা চ্যাম্পিয়ন হয়। তুমি নিজের টিমকে কিভাবে মোটিভেট করেছো?
সৌরাশিস:- আমি তিন বছর কাজ করেছি। আমি সবসময় বিশ্বাস করি যে যখন একটা প্রজেক্ট আমি হাতে নিই তখন তার একটা পন্থা থাকে। আমি একটা রোডম্যাপ তৈরী করি এবং চেষ্টা করি সেটা দিয়ে যাওয়ার। রাস্তাতে যেতে গেলে সিগন্যাল, স্টপ, বাম্পার থাকে কিন্তু আমি জানি আমার গন্তব্য কি। আমি একবার সি. কে. নাইডু ট্রফির ফাইনাল খেলি কোচ হিসেবে। দুবার ওয়ান-ডে ফাইনালে উঠি আমরা এবং একবার চ্যাম্পিয়ন হই। যদি ধারাবাহিক হতে চাও তবে তোমাকে বোরিং হতেই হবে। একটা ব্র্যান্ড অফ ক্রিকেট দিন-রাত খেলে যেতে হবে। আমি সেটাই করি। আমি কোনো রকেট সায়েন্স কিছু করিনি। কোচের কাজ খেলোয়াড়কে ডাইরেকশন দেওয়া, একজন সাপোর্ট স্টাফ হিসেবে আমার কাজ ছিল খেলোয়াড়কে সাপোর্ট করা। এভরিথিং ফর প্লেয়ার্স। আমার ফিলোসফি যে কোচ কখনো সামনে আসতে পারেনা। সবই প্লেয়ারদের।
প্রশ্ন:- ইস্ট জোনের চ্যালেঞ্জ কিভাবে দেখছো?
সৌরাশিস:- অবশ্যই এটা চ্যালেঞ্জ আমার ছোট কোচিং কেরিয়ারে। এর আগে আমি এনসিএতে ইমার্জিং প্লেয়ার্স ক্যাম্পে গিয়েছিলাম। দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমি মনে করি আমি এখান থেকে আমি খুব সমৃদ্ধ হবো। দলীপ ট্রফি দেশের একটা প্রিমিয়ার সিজন-ওপেনার। এই টুর্নামেন্টে ইস্ট জোনের কোচ হওয়া একটা সম্মানের ব্যাপার। আমি অনেক কিছু শেখার চেষ্টা করবো।
প্রশ্ন:- ইস্ট জোনে বাংলার সাতজন প্লেয়ার আছে। কিন্ত এমনও অনেক খেলোয়াড় আছে যাদের তুমি খুব ভালোভাবে চেনোনা। তাঁদের সাথে কিভাবে মানিয়ে নেবে?
সৌরাশিস:- এটা আমার ছোট থেকেই একটা ন্যাক যে আমি প্লেয়ারদের সম্মন্ধে জানতে ভালোবাসি। আজ আমি তোর সম্মন্ধেও জানি হয়তো। আমি মনে করি যে ফিল্ডে কাজ করি তাকে খুব ভালো করে জানা উচিত। আমি রিয়ান পরাগের সঙ্গে কখনো কাজ করিনি কিন্ত জানি। বিরাট সিংয়ের সম্বন্ধেও আমি জানি। নাদিমের (শাহবাজ নাদিম) সঙ্গে আমি প্রচুর খেলেছি। আমি সবাইকে জানি হয়তো আলাপ প্রথমবার হবে। নতুন কিছু নয় এটা। আমি এখান থেকেও শিখবো যে রিয়ান পরাগ কিভাবে তৈরী হয়, শাহবাজ নাদিম কিভাবে প্রস্তুতি নেয়, কিংবদন্তী স্পিনার ও এই দেশের। তাঁদের ওয়ার্ক এথিক্স দেখা, সব মিলিয়ে আমি খুব এক্সাইটেড।