কালীঘাট ক্লাবে আসার কারণ জানালেন দেবব্রত দাস। ট্রফি দেখছেন হীরক সেনগুপ্ত।


বিগত মরশুমে সিএবি লীগের বি গ্রুপ থেকে উন্নীত হয়ে এ গ্রুপে এসেছে কালীঘাট দল। তারা তিন ফরম্যাটেই নকআউট স্তর অবধি খেলেছে যার মধ্যে ওয়ান ডে এবং লাল বলের লিগ, দুক্ষেত্রেই তারা খেলেছে ফাইনাল। দুর্ভাগ্যবশত ট্রফি ঘরে আসেনি তাঁদের। কিন্ত সেইসব ভুলে এবার মাঠে নামতে চলেছে কালীঘাট দল। অভিজ্ঞতা সম্পন্ন দেবব্রত দাস, রনজি ট্রফিতে সেঞ্চুরি করা সুদীপ কুমার ঘরামি, বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে ভালো পারফরমেন্স করা রাণজ্যোৎ সিং খাইরা,কৌশিক মাইতি। রাণজ্যোৎ অবশ্য বাংলার হয়ে ওয়ান ডে টুর্নামেন্টও খেলেছেন। অভিজ্ঞ বোলার সায়ন ঘোষ দলে এসেছেন নতুন হিসেবে।


এবার প্রায় পনেরো বছরের সবুজ মেরুন কানেকশন ছিন্ন করে কালীঘাট ক্লাবে এসেছেন বাংলা ও কলকাতা নাইট রাইডার্স এর প্রাক্তন ক্রিকেটার দেবব্রত দাস। কালীঘাট টেন্টে বসে ‘উইলোর উইল’কে সরাসরি ব্যাখা করলেন সেই ছেড়ে আসার কারণ।
প্রশ্ন:-পনেরো বছর বাদে তুমি আবার কালীঘাটে। মোহনবাগান ছাড়ার কারণ কি?
দেবব্রত:- মোহনবাগান ছেড়েছি টিম ম্যানেজমেন্ট এর জন্য। পনেরো বছর ধরে যে ম্যানেজমেন্ট পেয়েছি তার ব্যতিক্রম দেখেছি। তার জন্যেই ছাড়া।
প্রশ্ন:- কালীঘাটে নতুন করে শুরু করছো। কিরকম আশাবাদী তুমি?
দেবব্রত:- যেরকম আশাবাদী আমি মোহনবাগানে বরাবর ছিলাম, তার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। আমি আসার আগে হীরক ও যাদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম, বলেছিলাম যে এরকম টিম হোক যাতে কালীঘাটে ট্রফি যেন আসে, যেমন একবার পাঁচটা ট্রফি এসেছিল। এবার তিনটে টুর্নামেন্ট হচ্ছে। তিনটে ট্রফি যেন আসে। সেই চেষ্টাই চলছে, প্র্যাক্টিসের বন্দোবস্ত সেরকমই করার চেষ্টা কালীঘাট করছে।
প্রশ্ন:- এইবছর একজন সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে তুমি কালীঘাট দলকে কেমন দেখছো?
দেবব্রত:- গতবার যা টিম ছিল তাতে ওরা যা পারফরমেন্স করছে তা তুলনার বাইরে। যেই জায়গা থেকে উঠে এসে সেমিফাইনাল, ফাইনাল খেলেছে তাতে এইবছর আরো সাত-আটজন ছেলে আরো জয়েন করেছে। কোয়ালিটি ছেলে তারা। ফলে আশা আরো বেড়ে গেছে। সবার সাথে কথা বলে যা বুঝলাম যে ওরা শুধু ট্রফিটাই দেখছে।
প্রশ্ন:- মোহনবাগান ছেড়ে এলে, পনেরো বছর যুক্ত ছিলে এই ব্যাপারটা কতোটা ইমোশনাল ছিল?
দেবব্রত:- সত্যি বলতে আজকে আমি যখন সই করতে যাচ্ছি তখনও একপ্রকার ইমোশনাল হয়েই যাচ্ছিলাম যে আজ কালীঘাটে সই করতে যাচ্ছি যেটা প্রতিবার মোহনবাগান দলের হয়ে করে থাকি। মোহনবাগান আমার কাছে একটা পরিবারের মতো ছিল, তাই ছাড়াটা খুব কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্ত খেলাটাই আমার কাছে প্রথম ছিল। তাই আমি মনে করি যে এটাই ক্লাব পরিবর্তনের সঠিক সময়। আমার কাছে এটা একটা বড়ো দুঃখ হিসেবে থাকবেই।
টিম গঠন সম্পূর্ণ একার হাতেই করেছেন হীরক সেনগুপ্ত। টিমকে কেমন দেখছেন? হীরক সেনগুপ্ত সরাসরি বললেন “তিনটে ট্রফি দেখছি। সাদা বল-লাল বল, সব ফরম্যাটেই ট্রফি জেতার মতো টিম তৈরী করা হয়েছে।”
ব্যাটারদের মধ্যে সুদীপ কুমার ঘরামি, রাণজ্যোৎ খাইরা, শুভম চ্যাটার্জী,অভিজ্ঞ ঋতম পোড়েল, শ্রেয়াংস ঘোষ,অভিষেক মিত্র, দেবব্রত দাস রয়েছেন, গুজরাট থেকে রয়েছেন রেক্সলী টেলর, বরোদা থেকে রয়েছেন অশ্বিন দাস। এছাড়া কিপার হিসেবে রয়েছেন বিদ্যুৎ অধিকারী এবং অভিষেক বোস। স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে গত মরশুমের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী অরিত্র চ্যাটার্জী, মিথিলেশ দাস এবং কৌশিক মাইতি রয়েছেন, এছাড়া গতবারের সুপার লিগের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী বিকাশ সিং এসেছেন কালীঘাটে, আছেন আমান সিংও। এবার বদুপল্লী অমিত, প্রীতম চক্রবর্তী, অমিত কুইল্যা এবং বাংলা ও আইপিএল খেলা খেলোয়াড় সায়ন ঘোষকে নিয়ে কালীঘাট দল এবার রীতিমতো দুরন্ত দল। হীরক সেনগুপ্ত জানালেন টিম পরিদর্শনের জন্য তারা সৌনক দাসকে এপয়েন্ট করেছেন। কালীঘাট ক্লাব কিন্ত এই বছর অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দাবিদার।