আক্রমণ যে প্রতিরক্ষার সর্বশ্রেষ্ঠ রাস্তা – এই কথা সর্বৈব প্রচলিত। আজ নিজেদের চতুর্থ গোলাপি বলের টেস্ট খেলতে নেমে যেন সেটা আবার প্রমাণ করলো ভারতীয় দল। বলা ভালো এই প্রমানের মূল পথিকৃৎ দুজন – শ্রেয়স সন্তোষ আইয়ার এবং ঋষভ রাজেন্দ্র পন্থ।
আজ দিনের শুরু থেকেই বল হঠাৎ নিচু হচ্ছিলো পিচে পড়ার পর থেকেই এবং স্কিডও ছিলো সমানতালে। সামঞ্জস্য রাখতে না পারার কারণে বেশ সমস্যায় পড়ছিলো ভারতও। একমাত্র মায়াঙ্ক আগারওয়ালের উইকেট বাদ দিলে বাকি প্রত্যেকের উইকেটে পিচের কাছে পরাজয় ছিলো বেশ প্রস্ফুটিত। রোহিত শর্মা যেমন ডিফেন্স করতে গিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ধনঞ্জয় ডি সিলভার তালুবন্দি হয়ে ১৫ রানে ফিরে গেলেন তেমনই প্রাক্তন অধিনায়ক বিরাট কোহলি ধনঞ্জয় ডি সিলভার টার্ন বুঝতে না পেরে ফিরে গেলেন ২৩ রানে। শুরু থেকে বেশ ছন্দে লাগছিলো হনুমা বিহারীকে। তার ইনিংস স্ট্রোকপূর্ণ না হলেও একজন তিন নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে যা করার তা করে গেলেন মোটামুটি। প্রবীণ জয়বিক্রমের বিক্রমে পরাজিত হওয়ার আগে মূল্যবান ৩১টি রান করে যান হনুমা।
এখান থেকেই “অ্যাটাক ইজ দ্য বেস্ট ডিফেন্স” মোড চালু করেন শ্রেয়স ও ঋষভ। ঋষভ বেশিক্ষণ থাকেননি ক্রিজে। মাত্র ২৬ বল খেলে ৭টি চার মেরে ৩৯ রান করে রানের গতিকে বেশ বাড়িয়ে দেন ঋষভ। উল্টোদিকে শ্রেয়স ছিলেন দোর্দন্ডপ্রতাপ। ধনঞ্জয় ডি সিলভাকে পরপর দুটি ছয় মেরে পঞ্চাশ পূর্ণ করাই হোক বা তার পরে ব্যাটিং-ল্যাজ নিয়ে ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাওয়া – সবেতেই শ্রেয়স ছিলেন অনবদ্য। অপরপ্রান্তে রবীন্দ্র জাদেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন কেউই খুব ভরসা দিতে পারেননি।
নিজের ইনিংস ১০টি চার ও ৪টি ছয় দিয়ে সাজানো শ্রেয়স আজ পেতেই পারতেন সেঞ্চুরি এবং শতকই হতো তার এই ইনিংসের যোগ্য পুরস্কার, কিন্তু প্রবীণ জয়বিক্রমের টার্ন করা বল স্টাম্পড হওয়াই শেষ করলো মহাপরাক্রমশালী ইনিংসের।
ব্যাট করতে নামা শ্রীলঙ্কার ওপর খুব বেশি আস্থাভাজন ছিলেন না তাদের অতি বড়ো সমর্থকও। এবং খেলা শুরুর আধঘন্টার মধ্যে কুশল মেন্ডিস (২), দিমুথ করুণারত্নে (৪) এবং লাহিরু থিরিমানে (৮) পরপর প্যাভিলিয়নে ফিরে গিয়ে ১৬-৩ করে দেওয়ায় ভারতের ২৫২ এর সামনেও ফলো-অনের শিকার হওয়ার আশঙ্কা নির্মূল করা যাচ্ছিলোনা। কিন্তু এখানে তাদের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাট অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস মহীরুহ হয়ে দাঁড়ানোয় তা সম্ভব হয়নি। ৮৫টি বল কঠিন অবস্থায় ৭৪% কন্ট্রোল পার্সেন্টেজে খেলে ৪৩ রান করে আবারও প্রমান করলেন তিনি এবং যেখানে সঙ্গী ধনঞ্জয় ডি সিলভা, চারিত আসলঙ্কা একেবারেই ব্যর্থ তখনই ইনিংসের মূল্য বাড়িয়ে দেয় তার।
নিরশন দিকওয়েলা ২৯ বল খেলেছেন দর্শনীয়ভাবে এবং একবারও মনে হয়নি তিনি নড়বড়ে এবং শেষবেলায় ম্যাথিউসের উইকেট না পড়লে হয়তো মোটামুটি ভালো অবস্থায় শেষ করতো শ্রীলঙ্কা।
আপাতত ৩০ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কা ৮৫-৬। প্রথম দিন পড়েছে ১৬ উইকেট। দ্বিতীয় দিন কোন মোড় নেয় দেখার জন্য অপেক্ষা ১৫ ঘন্টার।