কলকাতা নাইট রাইডার্স থেকে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর দীনেশ কার্তিক কি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর রক্ষাকবচ হয়ে উঠলেন? ৩ ম্যাচে ৯০ রান করেছেন। এবং একবারও আউট করতে পারেনি কেকেআর, পাঞ্জাব কিংস এবং রাজস্থান রয়্যালসের বোলাররা। উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করছেন সুনীল গাভাসকার, ‘সারাক্ষণ ওর মাথায় ঘুরছে কীভাবে ও চাপের মুখে দলকে জেতাতে পারবে। এবং অফ-টাইমেও ওর মাথায় ঘুরছে যে, অল্প কয়েক বলের জন্য মাঠে নেমে জেতাতে হবে দলকে। কঠিন কাজ। কিন্তু ভেতরের আগুন দিয়ে ও এই কঠিন কাজ অনায়াসে করে ফেলছে।’ বুধবার সকালে কথা বলতে গিয়ে গাভাসকার বলছিলেন, ‘ওর পকেটে যেন চলমান ম্যাচের আগাম ছবি থাকে। ডিকে যেন দেখতে পায়, কোথায় কোথায় কোন ফিল্ডার দাঁড়িয়ে আছে। তাই ও অনবদ্যভাবে ফিল্ডিংয়ের ফাঁক খুঁজে পাচ্ছে।’ উদাহরণ দিতে গিয়ে ভারতের চিরশ্রেষ্ঠ ব্যাটসম্যান বলে গেলেন, ‘ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ধারাভাষ্য দেওয়ার জন্য আমার সঙ্গে ডিকে ছিল। ইংল্যান্ড পৌঁছোনোর আগে ওদেশের কোভিড–এর নিয়ম অনুযায়ী আমাদের দু’জনকেই বেলগ্রেডে থাকতে হয়েছিল ১২ দিন। তখন থেকেই দেখছি, ওর মাথায় শুধু ঘুরছে কীভাবে সাজানো ফিল্ডিংয়ে গ্যাপ খুঁজে পাওয়া যায়।
একস্ট্রা-কভার যদি পিছিয়ে রাখা হয়, তাহলে শেষ পর্যন্ত ও ড্রাইভ মারবে কোন অঞ্চল দিয়ে? ল্যাপ-শট, পুল, ড্রাইভ, লফটেড স্ট্রোককে ও জলভাত বানিয়ে ফেলেছে। তাই, শেষের দিকে নেমেও দিব্যি গতিতে রান তুলতে পারছে।’
আর স্বয়ং দীনেশ কী বলছেন? মঙ্গলবার গভীর রাতে হোটেলে ফিরে জানালেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে অনুশীলনের ফল পাচ্ছি। কৃতিত্ব শুধু আমার নয়, যাঁরা আমাকে কোচিং করাচ্ছেন, তাঁদের সবার কথা গুরুত্ব দিয়ে বলতে চাইব। ফিজিক্যাল ফিটনেস অন্য ব্যাপার। কিন্তু পজিশন অনুযায়ী ফিল্ডিং সাজিয়ে তার মধ্যে থেকে রান চুরি করে নেওয়ার প্র্যাকটিসটা নিয়মিত করছি। আলাদাভাবে। জানি, আমাকে নীচের দিকে পাঠানো হবে। এই নীচের দিকে ব্যাট করে সফল হওয়ার মূল মন্ত্র হল, প্রথম বল থেকেই চালিয়ে খেলতে হবে। আগে নামালে সেট হতে পারতাম, এ জাতীয় আলোচনায় থাকা অর্থহীন। মাথাতেই রাখি না। তাই, প্রথম ম্যাচে কেকেআর–এর বিরুদ্ধে ম্যাচ শেষ করতে হয়েছিল ৭ বলে ১৪ রান করে।’ এর মধ্যে ছিল একটি ৬ এবং একটি ৪। ম্যাচ ওখানে শেষ করে দিয়ে এসেছিলেন। পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে করেছিলেন ১৪ বলে ৩২। তাই বোধহয় ধারাভাষ্যকাররা তাঁকে চলতি মরশুমে ‘লিটল ডিনামাইট’ হিসেবে চিহ্নিত করছেন। কেকেআর শিবিরে দীনেশের এই সাফল্যে হতাশা আছে কি না জানি না, তবে, আখেরে লাভ হয়েছে আরসিবি–র, শুরুর দিকের ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা সত্ত্বেও দীনেশ নিজের মতো করে প্রতিদান দেওয়ার চেষ্টা করছেন।