২০১৩–র ৬ মে। মোহালিতে ছিল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব (এখন পাঞ্জাব কিংস) বনাম রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বাঙ্গালোরের ম্যাচ। প্রথমে ব্যাট করে একটা ঝড় তুলেছিলেন আরসিবি–র ক্রিস গেল (৩৩ বলে ৬১)। কিন্তু সাইক্লোনের পূর্বাভাস সেদিন কেউই পায়নি। ১৯০ তাড়া করতে নেমে ৬৪ রান তোলার ফাঁকে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল পাঞ্জাব। কিন্তু একজন ভেবেছিলেন একটু অন্যরকম। মারলেন ৮টি চার, ৭টি ছয়। আই এস বিন্দ্রা স্টেডিয়ামে রানের বান এসেছিল। ৩৮ বলে অপরাজিত ১০১ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংস। আইপিএলের ইতিহাসে তৃতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি। একাই ম্যাচের রং পাল্টে দিয়েছিলেন বাঁ-হাতি প্রোটিয়া ব্যাটার। তিনি ডেভিড মিলার। ২০১৩–য় তাঁকে ৬ কোটি দিয়ে নিয়েছিল পাঞ্জাব। সেই মরশুমে দলের হয়ে প্রতিটা ম্যাচ খেলেছিলেন মিলার। ওই আরসিবি ম্যাচে ৪১ রানের মাথায় তাঁর ক্যাচ ফেলেছিলেন বিরাট কোহলি। তার বড় খেসারত দিতে হয়েছিল বেঙ্গালুরুকে। পরে বিরাট জানিয়েছিলেন মিলারের ইনিংস তাঁর দেখা অন্যতম সেরা।
মঙ্গলবারও ইডেন দেখল ‘কিলার’ মিলারকে। প্রথমার্ধে ঝড় তুলেছিলেন রাজস্থান রয়্যালসের জস বাটলার (৫৬ বলে ৮৯)। কিন্তু ইংরেজ ব্যাটারকে ম্লান করে আবার সাইক্লোনে পরিণত হলেন মিলার। ৩টি চার, ৫টি ছয়ে সাজালেন ৩৮ বলে অপরাজিত ৬৮ রানের অনবদ্য ইনিংস। গুজরাট টাইটান্সকে তুলে দিলেন ফাইনালে।
কী আশ্চর্য, এবার মেগা নিলামের প্রথম দিন আনসোল্ড ছিলেন মিলার। পরের দিন তাঁকে ৩ কোটি দিয়ে নেয় গুজরাট। তাঁর প্রতি যে আস্থা দেখিয়েছে এবারের আইপিএলের অন্যতম নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি, তার দাম দিচ্ছেন প্রোটিয়া। চলতি মরশুমে মিলার রয়েছেন দুরন্ত ছন্দে। রান করেছেন ৪৪৯, স্ট্রাইক রেট ১৪০–এর ওপরে, গড় ৬৪.১৪। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে মিডল-অর্ডারে ভরসা দিচ্ছেন দলকে। রাহুল তেওয়াটিয়া, হার্দিক পান্ডিয়া, রশিদ খানদের সঙ্গে গড়ে তুলছেন দারুণ পার্টনারশিপ।
২০২০, ২০২১ – গত দুই মরশুমে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে বিশেষ সাফল্য পাননি। এবার প্লে-অফে প্রথম কোয়ালিফায়ারে রাজস্থান বধে মিলারের চওড়া ব্যাটই বড় ভূমিকা নিল। মঙ্গলবার ম্যাচের পর তাঁর টুইট বেশ নজর কেড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। প্রাক্তন দলের কাছে দুঃখপ্রকাশ করে মিলার লিখেছেন, ‘সরি রয়্যালস ফ্যামিলি’!