ফিরে এল সেই সেলিব্রেশন। ব্যাট হাতে তরোয়াল ঘোরানোর সেই পরিচিত এবং জনপ্রিয় ভঙ্গি। ফিরে এল জাদেজার জাদুও। বার্মিংহাম টেস্টে তাঁর যোগ্য সঙ্গত না পেলে ঋষভে উজ্জ্বল হত না ভারতও। পন্থের অনবদ্য সেঞ্চুরিতে যখন গোটা ভারত মাতোয়ারা, তিন অঙ্কের রানে পৌঁছে আসমুদ্রহিমাচল মাতিয়ে দিলেন ‘স্যর’ রবীন্দ্র জাদেজাও।
হঠাৎই সব কেমন যেন এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল। গত আইপিএলের আগে জাড্ডুর হাতে চেন্নাই সুপার কিংসের নেতৃত্বের ব্যাটন তুলে দিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। কিন্তু নতুন ভূমিকায় একেবারেই সফল হতে পারেননি। জাদেজার নেতৃত্বের ধরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নেতৃত্বের চাপ সামলাতে রীতিমতো নাজেহাল হয়েছেন। সহজ, লোপ্পা ক্যাচ ফেলেছেন একাধিকবার। তার থেকেও বড় কথা, জাদেজার সেই বিস্ফোরক, মারকাটারি ব্যাটিংই উধাও! ১০ ম্যাচে রান মাত্র ১১৬। উইকেট ৫টি। তারপর অধিনায়কের পদ থেকে সরতে হয়েছে। শোনা যায় টিম ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত তাঁর ভাল লাগেনি। নেতৃত্বের ভার আবার গিয়ে পড়েছিল মাহির ঘাড়ে। তখন ধোনি বলেছিলেন, কাউকে তো মুখে চামচ করে খাইয়ে দিতে পারব না! এই কথাটাও নাকি ভাল লাগেনি জাড্ডুর। পাঁজরের চোটে ছিটকেও যেতে হয়েছিল দল থেকে। সব মিলিয়ে একটা খারাপ অধ্যায়।
অবশেষে আবার আলোয় ফেরা। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে স্থিতধী ইনিংসে আবার নজর কাড়া। ১৯৪ বলে ১০৪। ক্রিজে ২৬৯ মিনিট কাটিয়ে জাদেজা মেরেছেন ১৩টি চার। স্ট্রাইক রেট ৫৩.৬০। প্রথম দিনের খেলা শুরু হওয়ার পর যখন ৯৮ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল ভারত, ঋষভের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যেমন স্টোকস-শিবিরে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন, নিজের দলেও ছড়িয়ে দিতে পেরেছেন আত্মবিশ্বাস। ঋষভের সঙ্গে জাদেজার ২২২ রানের জুটিতেই এজবাস্টনে প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছে ভারত। কঠিন পরিস্থিতিতে উল্টোদিকে জাড্ডুর সহযোগিতা না পেলে ঋষভ মোটেই ওই অকুতোভয় ইনিংস খেলতে পারতেন না।
এজবাস্টনের ইনিংস দেখিয়েছে লাল বলের ক্রিকেটে ব্যাটার জাদেজার টেকনিক বেশ মজবুত। তাঁর ব্যাটে যেমন আগ্রাসন আছে, তেমনই লোভ সামলে অফ-স্টাম্পের বাইরের বলও ছাড়তে পারেন। অনেক প্রাক্তন ক্রিকেটারই মনে করেছিলেন আইপিএল–অধ্যায় খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে জাদেজার পারফরমেন্সে। কিন্তু চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে কেরিয়ারের তৃতীয় টেস্ট শতরানে সবাইকেই ভুল প্রমাণ করলেন তিনি।