আচ্ছা, দিলীপ ভেঙ্গসরকার নাকি তাঁর ক্রিকেট-জীবনের একদম গোড়ার দিকে, সত্তর দশকের প্রথম দিকে দাদারের কিং জর্জ স্কুলের উঠতি ক্রিকেটার হিসেবে, উইকেট-কিপিংও করতেন? কেন জানতে চাইছি?
লাল-বলের প্রথাগত টেস্টম্যাচ-জাতীয় খেলায় উনি কি রাহুল দ্রাবিড়ের সঙ্গে উইকেট-কিপিংয়ের দায়িত্বটা কিছুটা ভাগ করে নিতে পারবেন? নাহ্, তেমন ভরসা হচ্ছেনা – তাহ’লে একটা লাল-বলের সাদা-পোশাকের দিনের-বেলার ‘একদিবসীয়’ ম্যাচই হোক!
সে আবার কেন? একটা ভারতীয় একাদশ তৈরি করছি – আজ মোহালিতে Team India-র বিরুদ্ধে একটা প্রদর্শনী ম্যাচ খেলবার জন্য, উপলক্ষ্যটা আন্দাজ করে নিন – নাহ’লে বিরাট কোহলিকে জিজ্ঞাসা করুন না, উনি অবশ্যই জানবেন!
এবার দলটা তৈরি করে ফেলা যাক, ব্যাটিং অর্ডার অনুযায়ী – ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে তর্কের অবকাশ থাকতেই পারে (আছেও), কিন্তু দলটা নিয়ে কোনও কথা হবেনা। কারণটা রচনার শেষেই দেখে নিন। আমি অবলম্বন করছি সনাতন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক-নির্বাচন নীতি – দল নির্বাচন হ’লে নির্বাচিতদের মধ্যে থেকে অধিনায়ক বেছে নেওয়া, অধিনায়ক আগে ঠিক করে তাঁর হাতে বাকি দলটা তুলে দেওয়া নয়।
০১. বীরেন্দ্র সেহবাগ
০২. শচীন তেন্ডুলকর
০৩. সৌরভ গাঙ্গুলি
০৪. ভি.ভি.এস লক্ষ্মণ
০৫. দিলীপ ভেঙ্গসরকার
০৬. রাহুল দ্রাবিড় [উইকেট-কিপার]
০৭. সুনীল গাভাস্কর
০৮. কপিল দেব
০৯. হরভজন সিং
১০. অনিল কুম্বলে
১১. ঈশান্ত শর্মা
১২. মহম্মদ আজহারউদ্দিন
ব্যাটিংটা তো জোরদার [মিডল-অর্ডারে কে কোথায় নামবেন, সেটাই এক সমস্যা!] – চার-বোলারের বোলিংটাও খারাপ নয় [কি বলেন?], পঞ্চম-ষষ্ঠ বোলারের ব্যবস্থাও আছে পেস-স্পিন মিলিয়ে – ফিল্ডিংয়ে আউট-ফিল্ডিংটা অবশ্য একটু নড়বড়ে [তা সেটা দরকারে দ্বাদশ ব্যক্তি নেমে সামলে দেবেন খানিকটা!] – সব মিলিয়ে ভরসা করবার মতই দল, বিশেষত ‘স্পোর্টিং পিচ’ হলে।
অধিনায়কত্বের দাবিদার অনেক – ১৯৮৩ বিশ্বকাপ, ১৯৮৫ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, ২০০০ আই.সি.সি. নক-আউট প্রতিযোগিতা (ফাইনাল), ২০০২ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, ২০০৩ বিশ্বকাপ (ফাইনাল) – এইসব বহুদলীয় আন্তর্জাতিক একদিবসীয় প্রতিযোগিতায় কৃতিত্বের কান্ডারীরা সবাই দলে রয়েছেন। আমি সুনীলের পক্ষপাতী – ১৯৮৫-টাই ভারতের বহুদলীয় আন্তর্জাতিক একদিবসীয় প্রতিযোগিতায় সবার সেরা পারফরমেন্স, আমার মতে, কপিলও হয়ত এটা মানবেন।
ও হ্যাঁ, তিন আম্পায়ার – সাইমন টাউফেল, বিলি বাওডেন ও রুডি ক্যোয়ের্জেন – কোনও ‘ভারতীয়’ (এমনকি ‘উপমহাদেশীয়’) পক্ষপাতিত্বের অভিযোগের ফাঁকফোকর নেই।
তাহলে ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি হোক – একশো বা তার বেশি টেস্ট-খেলা ভারতীয় ক্রিকেটারদের তাঁদের উত্তরসূরীদের মাঠের মাঝে মুখোমুখি দেখতে দর্শকরা উদগ্রীব হবেন বলেই তো মনে হয় – may the better team win!
[পুনশ্চ: আইডিয়াটা ধার নিয়েছি – ১৯৪৮ সালে প্রকাশিত, লিয়ারি কনস্ট্যান্টাইনের লেখা “Cricketers’ Carnival” বইটা থেকে – সব ক্রিকেটপ্রেমীদের সুযোগ পেলে বইটা পড়ে দেখতে অনুরোধ করছি।]