সি.এম.আর.আই থেকে প্রথম ডিভিশন, ছন্দে ফেরালেন মাইকেল

বিগত প্রায় দু’টি মাস আগেও নেতাজি সুভাষ ইনস্টিটিউটের ম্যাচগুলোয় তাকে দেখা যেতো কাঁধে একটি ব্যাগ হাতে ছোট মেয়েকে নিয়ে এসেছেন। একবার রাজস্থান মাঠে তাকে জিজ্ঞেস করি তিনি খেলছেন না কেন? উত্তরে বলেছিলেন খাদ্যজনিত বিষক্রিয়া (ফুড পয়জনিং) এর জন্য বেশ কিছুদিন ভর্তি ছিলেন ক্যালকাটা মেডিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটে (সি.এম.আর.আই)। সুতরাং দুর্বলতা তাকে ঘিরে ধরায় ম্যাচ খেলতে পারবেন না তিনি।

লোকটি মাইকেল প্রিয়দর্শন বেহেরা। বাঁ-হাতি স্পিনার হওয়ার পাশাপাশি লোয়ার-অর্ডারে ব্যাট করে বেশ নির্ভরতা দেন দলকে। কিন্তু এই মরশুমে যখন শারীরিক দুর্বলতার কারণে বল বেশী করতে পারছেন না তখন ব্যাট হাতেই যেন দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ালেন মাইকেল।

দীপাঞ্জন মুখার্জী ব্যাট-বল দুক্ষেত্রেই নেতাজি দলকে অবনমনের ম্যাচগুলিতে দিয়েছেন ভরসা। তাঁর ১৫৬ রান এবং ৯ উইকেট তাঁর ইমপ্যাক্টের কথা বলে ভালোভাবেই। কিন্তু নেতাজি দলের অনভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের যে সমস্যা ছিলো উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে আসায় সেই জায়গাটি মেরামত করতে এসে সম্পূর্ণ সফল মাইকেল।

লিগের প্রথম ম্যাচে একেবারেই ব্যর্থ হওয়ার পরে পরপর তিনটি ম্যাচে তাঁর স্কোর বেশ প্রভাবশালী। বি.এন.আর ম্যাচে ১০২ রানে ৬ উইকেট চলে যাওয়ার পর ৬৩ বল খেলে করেন ৪৩। চা-বিরতির আগে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে না ফিরলে সেদিন কিন্তু বড়ো স্কোর আশা করাই যাচ্ছিলো। এরপরে টালিগঞ্জ অগ্রগামী ম্যাচে ১৭২-৮ হওয়ার পরে ৫৪ বল খেলে করেন ২১। এখানেও সঙ্গী দীপাঞ্জন মুখার্জীকে যোগ্য সঙ্গত দেন কিন্তু লফ্ট করে বাঁ-হাতি স্পিনারকে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে বসেন মিড-অনে।

ঐদিনই শুভ্রজিৎ দাস বলছিলেন যে এই দলে চার নম্বর হতে পারেন মাইকেলদা। কারণ খেলা ধরে রাখতে পারছেন। সেই মতোই অবনমন ম্যাচের সেমিফাইনালে ব্যাট করতে নামেন পাঁচ নম্বরে। কালীঘাট মাঠের প্রখর গরমে ২ ঘন্টা ৫ মিনিট ব্যাট করে ১১০ বল খেলে করেন ৪৪।

এই ছোট ছোট অবদানগুলিই কোথাও পাচ্ছিলোনা নেতাজি দল। ওপেনার ইপু সাহা প্রতি ম্যাচে খেলছিলেন অনেক বল এবং গড়ে ৩৫ রান করে করছিলেন। দীপাঞ্জন মুখার্জী লিগ ম্যাচে অনিয়মিত খেললেও অবনমনের প্রতি ম্যাচেই ছিলেন উজ্জ্বল। ধারাবাহিকভাবে উইকেট নিচ্ছিলেন প্রতীক রঞ্জন। কিন্তু একটা ‘মিসিং লিঙ্ক’ এর খুব দরকার ছিলো দলটার এবং গতকাল পোর্ট ট্রাস্ট ম্যাচে জিতে অবনমন ঠেকানোর পরে সেই ভূমিকায় সফলই বলতে হয় মাইকেল প্রিয়দর্শন বেহেরাকে।

অবনমন লিগের ম্যাচে আবার হতে হয়েছিল অধিনায়ক এবং ব্যাট হাতেও ক্রমাগত হয়েছেন সফল। নেতাজী দলের থেকে কিন্তু ধন্যবাদ অবশ্যই প্রাপ্য মাইকেলের।