প্রাক্তনীর মার নাইটদের? কেনই বা রিটেন হননি রাহুল?

বর্তমানে আনক্যাপড ক্রিকেটারদের মধ্যে আইপিএলে সর্বাধিক রান রয়েছে তাঁর। আইপিএল টুর্নামেন্টে মোট ১,৫০০ রান করেছেন রাহুল ত্রিপাঠি এবং একমাত্র আনক্যাপড ব্যাটার হিসেবে করেছেন ১,৫০০ রান।

বর্তমানে একটি আদর্শ টিটোয়েন্টি দলে থাকেন মোটামুটি সব ধরণের ব্যাটার। পাওয়ার-প্লে হিটার, রান অ্যাক্যুমুলেটর, পেস হিটার, স্পিন হিটার এবং ডেথ স্পেশালিস্ট – সব ধরণের ব্যাটার নিয়ে তৈরী হয়ে একটি টিটোয়েন্টি দল। এখন রাহুল ত্রিপাঠির কথা বললে যেটি আসে সেটি হলো তিনি একজন দুরন্ত স্পিন হিটার। সেই সঙ্গে বর্তমানে নিজের পেস খেলা এবং তাতে শট খেলার দক্ষতা বাড়িয়ে রাহুল বর্তমানে একটি টিটোয়েন্টি দলের “রান অ্যাক্যুমুলেটর বা অ্যাঙ্কর” রোল বাদে যে কোনো ভূমিকাতেই সমানে লড়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখেন।

খুব কম ক্রিকেটার আছেন যাঁরা পেস এবং স্পিন উভয়কেই স্ট্রাইক করতে পারেন সমানে। এখনও পর্যন্ত ১৪০ স্ট্রাইক রেট রাখতে পারা ছয়জন ব্যাটার হলেন ময়াঙ্ক অগ্রবাল, জস বাটলার, নিকোলাস পুরান, কায়রণ পোলার্ড, সঞ্জু স্যামসন এবং পৃথ্বী সাউ। এই হাই-প্রোফাইল ব্যাটারদের লিস্টে আসতে পারতেন রাহুল কিন্তু শুধুমাত্র স্পিনের বিরুদ্ধে স্ট্রাইক রেট ১৩৮.৬৯ আসায় ব্যর্থ হন (পেসের বিরুদ্ধে ১৪৪.৬৯)।

এর পাশাপাশি ডেথ ওভারে তাঁর মুন্সিয়ানার কথা নিশ্চয়ই ২০২০ সালের কলকাতা-দিল্লী ম্যাচ মনে পড়লেই খেয়াল করতে পারবেন। আনরিখ্ নর্তজের মতো পেসারকেও রেয়াত করেননি সেদিন। এর আগে জোফ্রা আর্চারের মতো জোরে বোলারকে খেলতে বেশ সমস্যায় পড়তে দেখা যেত তাকে। তবে এবার কিন্তু সেই সমস্যাও কাটিয়ে উঠেছেন। আন্দ্রে রাসেলের মতো হিট-দ্য-ডেক বোলিংকেও যে অনায়াস ভঙ্গিতে পাঠালেন গ্যালারিতে তাতে অন্তত প্রমাণিত হয় তাই।

তথ্যগতভাবে ব্যক্তিগত ইনিংসের প্রথম ১০ বলে ১৫৮.১৩ স্ট্রাইক রেট রাখেন রাহুল ত্রিপাঠি, গতদিন কলকাতার বিরুদ্ধে তা ছিলো ২২০.০০! এরপরে যখন বরুণ চক্রবর্তী আউটসাইড অফ-স্টাম্প ফ্লাইট দিয়ে সোজা ব্যাটে তিনবার গেলেন এক্সট্রা-কভার বাউন্ডারির বাইরে, তখন তাঁর স্ট্রাইক রেট একেবারে সপ্তমে। এরপরে নিজের ইনিংসের ২০ বল শেষে তাঁর স্ট্রাইক রেট ২৪৫! শেষ অবধি নিজের ইনিংস যখন ১৯৪ স্ট্রাইক রেটে শেষ করছেন রাহুল তখন তাঁর দলের আস্কিং রেট আটের আশেপাশে। এখান থেকে খেলা সহজ ছিলো আইডেন মার্করামের জন্য এবং তা করলেনও তিনি সহজভাবে।

এখন প্রশ্ন হলো এমন একজন টিটোয়েন্টি ক্রিকেটারকে কেন ছেড়ে দিল কলকাতা নাইট রাইডার্স? উত্তর খুঁজলে দেখা যাবে পাওয়ার-প্লে হিটার হিসেবে ভেঙ্কটেশ আইয়ার, অ্যারন ফিঞ্চ; রান অ্যাক্যুমুলেটর হিসেবে অজিঙ্ক্য রাহানে, শ্রেয়স আইয়ার; মিডল-অর্ডার স্পিন হিটার হিসেবে নীতিশ রানা, সুনীল নারিনকে নিয়ে দল সাজিয়েছে কেকেআর এবং ডেথ-হিটিং স্পেশালিস্ট হিসেবে আন্দ্রে রাসেল রয়েছেন এবং বর্তমানে উপরি পাওনা প্যাট্রিক জেমস কাম্মিন্স। সেখানে একমাত্র নীতিশ রানার পরিবর্তে ভাবা যেত রাহুল ত্রিপাঠিকে। সম্ভব হলোনা রানা বাঁহাতি ব্যাটার এবং ডিবলি-ডবলি বোলার হয়ে যাওয়ায়। এছাড়া আরো বড়ো কারণ হয়তো শ্রেয়স আইয়ারের জন্য মানিব্যাগের ১২.৫০ কোটি চলে যাওয়া এবং রাহুল ত্রিপাঠির যোগ্যতা নির্ধারণমূল্য ৮ কোটি হওয়া।

রিটেন না হয় না হতে হোক, ফ্রাঞ্চাইজি হোক না পরিবর্তন। তবুও কিন্তু একজন বহুমুখী ব্যাটার এবং একজন শক্তিশালী ফিল্ডারের টিটোয়েন্টি মূল্য উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।