রবিবার ভারত পাকিস্তানের ম্যাচের দিন। দুপুরে ঘড়ির কাঁটা ১২টা স্পর্শ করেছে। তার আগেই দুবাইয়ের রাস্তায় নেমে পড়েছেন ভারত, পাকিস্তানের জার্সি পরা সমর্থকেরা। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও হংকং দল উঠেছে হিলটন হোটেলে। একমাত্র ভারতীয় দলই আছে গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে। যেহেতু হিলটনেই পাঁচ দলের অবস্থান, অনেক ভক্তও নাকি প্রিয় ক্রিকেটারদের কাছ থেকে দেখার জন্য এই হোটেলে উঠেছেন।
ভারতীয় দলের হোটেলে ভাড়াটা একটু বেশিই। ক্রিকেটারদের একনজরে দেখার জন্য সাধারণ ভক্তদের সেই হোটেলে থাকাটা কঠিন। তবু অনেকে উঠেছেন ভারতীয় দলের হোটেলেও। এমন উন্মাদনা আসলে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ঘিরেই সম্ভব।
ভারত-পাকিস্তান দ্বৈরথ ঘিরে কিন্তু মূল ব্যবসাটা সেখানেই। ম্যাচের আবেদন যে শুধু মাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় তা বোঝা যায় ম্যাচটির ব্যবসায়িক আবেদন দেখলে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম কিংবা টিভিতে এ ম্যাচ দেখেছেন পৃথিবীর প্রায় এক–চতুর্থাংশ মানুষ। যেখানে প্রতি ১০ সেকেন্ডের বিজ্ঞাপন বিক্রি হয়েছে ভারতীয় মুদ্রায় ২০ লাখ টাকাতে।
শুধু ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ম্যাচ দেখেছেন ২০ কোটির বেশি মানুষ, যা এযাবৎকালের কোনো ক্রিকেট ম্যাচে সর্বোচ্চ।
২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের ওয়াচটাইম ছিল ৩০.৪ বিলিয়ন মিনিট। টি-টোয়েন্টিতেও ওয়াচটাইম রেকর্ডে শীর্ষে এই দুই দলের ম্যাচ। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই ভারত–পাকিস্তান ম্যাচের ওয়াচটাইম ছিল ২২ বিলিয়ন মিনিটের মতো।
ধারণা করা হচ্ছে, এশিয়া কাপে ভারত পাকিস্তানের সাক্ষাৎকার আরো হতে পারে। যদি হয়ে থাকে তাহলে এবার ভেঙে যাবে অতীতের সব রেকর্ডই। তাই সামনের এই দুই দলের ম্যাচগুলোর দিকে তাকিয়ে হোটেল ব্যবসায়ীরা থেকে বিজ্ঞাপনদাতা ও প্রচারস্বত্ব পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো। বিশেষ করে বিজ্ঞাপন দাতারা। কারন, টি-টোয়েন্টির একটা ক্রিকেট ম্যাচে ১০ সেকেন্ড স্লট ধরে, ১৫০ থেকে ২ হাজার সেকেন্ড পর্যন্ত বিজ্ঞাপনের স্লট বিক্রি করা যায়। ২৮ তারিখের ম্যাচে বিক্রি হয়ে গেছে আড়াই হাজার সেকেন্ড স্লট! সেটাও ম্যাচের বিরতির সময়টা (স্ট্র্যাটিজিক টাইমআউট) ছাড়াই। যে স্লট প্রতি ১০ সেকেন্ডের জন্য বিক্রি হয়েছে ২০ লাখ টাকাতে!
এশিয়া কাপের সূচিটাও এই দুই দলকে বারবার মুখোমুখি করার ভাবনা থেকেই তৈরি।
১৬ দিনের এশিয়া কাপের সূচিটাই করা হয়েছে এমনভাবে যে ক্রিকেট বিশ্ব যেন তিনবার দেখতে পারে পাকিস্তান-ভারত দ্বৈরথ। ২৮ তারিখে গ্রুপ পর্বে দুই দলের প্রথম ম্যাচটি ছাড়া দ্বিতীয় পর্বেও দুই দলের দেখা হওয়াটা প্রায় নিশ্চিত। আর যদি ফাইনালে দুই দলই জায়গা করে নেয়, তাহলে তো কথাই নেই। টাকার অঙ্কটা তখন কোথায় গিয়ে থামে, সেটিই দেখার অপেক্ষা।
এই দুই দলের ম্যাচ ঘিরেই যে এশিয়া কাপ ক্রিকেটের যত ব্যবসা!