জন্মদিনের ক্যালেন্ডার – ষোড়শ পর্ব

মার্চ ১৪, ১৯৬৭। গোণ্ডায় জন্ম জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ১৯৯২-৯৩ দিল্লি টেস্ট (টেস্ট ক্রমাঙ্ক: ১,২১৮) খেলা বিজয় যাদবের। হরিয়ানার ১৯৯০-৯১ রণজি জয়ের নেপথ্যে বড় ভূমিকাই ছিল তাঁর। ১৯৯২-৯৩ থেকে ১৯৯৩ অধ্যায়ের বিদেশ সফরগুলিতে মোরের ডেপুটির পদটিও ছিল বাঁধাই। কিন্তু মোরে-যুগ শেষ হতেই যাদবকে টপকে জাতীয় দলে নিজের জায়গাটা পাকা করে ফেলেন আর-এক বরোদা উইকেটরক্ষক নয়ন মোঙ্গিয়া।

যাদব-উত্তর তিন উইকেটরক্ষক নয়ন মোঙ্গিয়া, মান্নাভা প্রসাদ ও সাবা করিমের নাম ইতিমধ্যে এসেছে আলোচনায়। বাড়তি যা বলার, দস্তানা হাতে মোঙ্গিয়াও পৌঁছেছিলেন শতাধিক শিকারে (৯৯ ক্যাচ ও ৮ স্টাম্পিং)।

মে ১০, ১৯৭৩। দিল্লিতে জন্ম জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ২০০০-০১ ঘরোয়া সিরিজে ২ টেস্ট খেলা বিজয় দাহিয়ার। ততদিনে বেজে উঠেছে মোঙ্গিয়া-পর্ব সমাপ্তির ঘণ্টা।

অক্টোবর ৮, ১৯৬৮। বোম্বেতে জন্ম ২০০০-০১ থেকে ২০০১ পর্বে ৬ টেস্ট খেলা সমীর দিঘের। অনেকটাই বেশি বয়সে সুযোগ পাওয়া এই মুম্বইকরের। কেরিয়ার দীর্ঘায়িত হওয়ার আর সময় ছিল না।

ঊনত্রিশতম নামটি (দীপ দাশগুপ্ত) এসেছে আমাদের আলোচনায়। ঘটনা হল, ব্যাট হাতে সন্তুষ্ট করতে পারলেও তেকাঠির পিছনে দস্তানা হাতে এঁর দক্ষতা পড়েছিল প্রশ্নচিহ্নের মুখে।

ডিসেম্বর ১৩, ১৯৮১। ফরিদাবাদে জন্ম ২০০২ মরশুমেই ৬ টেস্ট খেলা অজয় রাতরার। অ্যান্টিগা টেস্টে (টেস্ট ক্রমাঙ্ক: ১,৬০২) শতরান থাকলেও ওই ইনিংসটি ব্যতিরেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেটে এঁর ব্যাটিং নিয়ে আবার আহ্লাদিত হওয়ার বিশেষ উপায় ছিল না। দস্তানা হাতে যদিও সন্তুষ্টই করছিলেন মোটের উপর।

মার্চ ৯, ১৯৮৫। আমদাবাদে জন্ম ২০০২ থেকে ২০১৭-১৮ পর্বে ২৫ টেস্ট খেলা পার্থিব পটেলের। এঁর কেরিয়ার খানিক বিচিত্র। মহেন্দ্র সিং ধোনির পরিচয় যেদিন রাঁচির জনৈক টিকিট কালেক্টরের বেশি কিছুই নয় সেই যুগে টেস্ট খেলে, ধোনি-অধ্যায়ে প্রায় বিস্মৃত হয়েও ধোনির অবসর ঘোষণার পর টেস্ট ক্রিকেটের ময়দানে প্রত্যাবর্তন ঘটেছিল এঁর। মোঙ্গিয়া ও ধোনির মধ্যবর্তী পর্বে সফলতম উইকেটরক্ষক ধরাই যাবে পার্থিবকে।

পরবর্তী চারমূর্তি দীনেশ কার্তিক, মহেন্দ্র সিং ধোনি, ঋদ্ধিমান সাহা ও নমন ওঝার নাম ইতিমধ্যেই এসেছে আলোচনায়। স্রেফ পরিসংখ্যানের বিচারে ধোনিকে দেশের শ্রেষ্ঠতম উইকেটরক্ষক হিসেবে তো চিনেছিই আমরা। বলে রাখা দরকার, কেরিয়ারের সোনালি সময়টা ধোনির দৌলতে রিজার্ভ বেঞ্চে বসেই কাটাতে হলেও দস্তানা হাতে সাহাও পৌঁছতে পেরেছেন শতাধিক শিকারে (৯২ ক্যাচ ও ১২ স্টাম্পিং)।

অক্টোবর ৪, ১৯৯৭। হরিদ্বারে জন্ম ২০১৮ থেকে এখনও অবধি ৩০ টেস্ট খেলা ঋষভ পন্থের। ইতিমধ্যেই দস্তানা হাতে পন্থের শিকারের সংখ্যা অতিক্রম করেছে একশোর গণ্ডী (১০৭ ক্যাচ ও ১১ স্টাম্পিং)। এত তড়িঘড়ি উক্ত মাইলফলকে পৌঁছতে পারেননি কিরমানি, মোরে, মোঙ্গিয়া, ধোনি বা সাহার কেউই।

তবে সেই পুরনো কথাটাই এখানে ফিরে বলার। উইকেটরক্ষকের শিকারের সম্ভাবনা বহুলাংশেই দলীয় বোলিং আক্রমণের শক্তিমত্তার সমানুপাতিক। এবং ঘটনা হল ২০১৭-উত্তরকালের মাপের পেস আক্রমণ স্বাধীন ভারতবর্ষের ক্রিকেট ইতিহাসেই আসেনি আর কখনওই। হ্যাঁ, কপিলদেবকে মাথায় রেখেই বলা হল কথাটা। যেহেতু সেকালে কপিলদেব ছিলেন একাই। আজকের মতো দুই প্রান্ত থেকেই বিপক্ষ ব্যাটারের উপর চাপ সৃষ্টির উপায়ই ছিল না সেদিন।

ফয়সালাবাদের মাটিতে তরুণ কপিলের অভিষেক টেস্টে (টেস্ট ক্রমাঙ্ক: ৮৩১) অপর প্রান্ত থেকে বোলিং-এর সূচনা করেন মিডিয়াম পেসার মোহিন্দর অমরনাথ। ১৯৬৯-৭০ থেকে ১৯৮৭-৮৮ অধ্যায়ে ৬৯ টেস্টে দেশের জার্সি গায়ে চড়ানো স্বনামধন্য মিডল-অর্ডার মোহিন্দরের শক্তিমত্তাকে খাটো করার ধৃষ্টতা এই ক্ষুদ্র কলমচির নেই। তবে টেস্ট ক্রিকেটের ময়দানে তাঁর নতুন বল হাতে রান-আপে আসা থেকেই বেশ আঁচ পাওয়া যায় সেকালের ভারতীয় পেস আক্রমণের শক্তিসামর্থ্যের। প্রসঙ্গত, লালা অমরনাথের তিন পুত্রের (কনিষ্ঠ রাজিন্দর প্রথম শ্রেণির বেশি এগোতে পারেননি আর) মধ্যে সব চাইতে সফল মধ্যমের জন্ম সেপ্টেম্বর ২৪, ১৯৫০-এ পাটিয়ালায়।

১৯৭৮-৭৯ থেকে ১৯৯৩-৯৪ অবধি সুদীর্ঘ যাত্রাপথে পেসার হিসেবে কাদের সাহচর্য পেয়েছিলেন কপিল?

দেখে নেব নামগুলো। আগে বলি, কালানুক্রমে এই তালিকায় থাকা কারসন ঘাউড়ি, সুরেন্দ্র নায়ক, বলবিন্দর সিং সাঁধু, থিরুমালাই শেখর, রাজু কুলকার্নি, রশিদ পটেল, সলিল আঙ্কোলা, জাভাগল শ্রীনাথ ও সুব্রত ব্যানার্জিদের কথা বলা হয়েছে আগেই।

১৯৭৪—১৯৮৬ পর্বে ৩৯ টেস্ট খেলা মদন লাল। ঘরোয়া ক্রিকেটে দিল্লি ও পাঞ্জাবের প্রতিনিধিত্ব করা এই অলরাউন্ডারের জন্ম মার্চ ২০, ১৯৫১-য় অমৃতসরে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ১৯৭৮-৭৯ ঘরোয়া সিরিজে ২ টেস্ট খেলা ধীরাজ পারশানা। ঘরোয়া ক্রিকেটে গুজরাট, সৌরাষ্ট্র ও রেলওয়েজের প্রতিনিধিত্ব করা এই অলরাউন্ডারের জন্ম ডিসেম্বর ২, ১৯৪৭-এ রাজকোটে।

১৯৭৯-৮০ থেকে ১৯৮৬-৮৭ পর্বে ২৭ টেস্ট খেলা রজার বিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে কর্ণাটক ও গোয়ার প্রতিনিধিত্ব করা এই অলরাউন্ডারের জন্ম জুলাই ১৯, ১৯৫৫-য় ব্যাঙ্গালোরে। প্রসঙ্গত, ২০১৪ থেকে ২০১৫-১৬ অধ্যায়ে ৬ টেস্টে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন এঁর অলরাউন্ডার পুত্র স্টুয়ার্ট বিনিও (জন্ম জুন ৩, ১৯৮৪-তে ব্যাঙ্গালোরে)।