জন্মদিনের ক্যালেন্ডার – পঞ্চদশ পর্ব

এপ্রিল ১৮, ১৯৯২। ব্যাঙ্গালোরে জন্ম চৌত্রিশতম ভারতীয় টেস্ট অধিনায়ক তথা ২০১৪-১৫ থেকে শুরু করে এখনও অবধি ৪৩ টেস্ট খেলতে পারা কর্ণাটকি ওপেনার লোকেশ রাহুলের। প্রসঙ্গত, প্রায় আট দশক অতীতে ১৯১৪-র এই তারিখে নাগপুরে জন্ম হয়েছিল ১৯৩৩-৩৪ থেকে ১৯৫১-৫২ পর্বে ১১ টেস্ট খেলা অলরাউন্ডার সিএস নাইডুর। রক্তের সম্পর্কে যিনি ছিলেন প্রথম ভারত অধিনায়ক সিকে নাইডুর অনুজ।

চোখ রাখব টেস্ট ক্রিকেটের ময়দানে আজ অবধি দেশের উইকেটরক্ষা করা ছত্রিশ ভারতীয় পুরুষের ঠিকুজিতে। প্রথম তিনটি নাম (জনার্দন নাভলে, দিলওয়ার হুসেন ও খোদ দত্তারাম হিন্দলেকর) অন্য সূত্রে ইতিমধ্যে এসেছে আমাদের আলোচনায়।

অগাস্ট ৯, ১৯১১। বোম্বেতে জন্ম ১৯৩৬ ম্যাঞ্চেস্টার টেস্ট (টেস্ট ক্রমাঙ্ক: ২৫৩) খেলা খেরশেদ মেহেরহোমজির। ঘরোয়া ক্রিকেটে বোম্বে ও পারসিদের (অধুনালুপ্ত) প্রতিনিধিত্ব করা এই মানুষটির নাম অল্পের জন্য অন্তর্ভুক্ত হয়নি স্বামী ও শেখরের ক্লাবে। অমর সিং-এর বলে ইংরেজ অধিনায়ক গাবি অ্যালেনকে তালুবন্দি করায়। তবে তিনশো তিনের ভিড়ে সাত সদস্যের অন্যতর একটি ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ইতিহাসে রয়েই গিয়েছে মেহেরহোমজির নাম। যার বাকি সদস্যদের প্রত্যেকেই (কালানুক্রমে মন্টু ব্যানার্জি, থিরুমালাই শেখর, রশিদ পটেল, মার্গা বেঙ্কটরামানা, দেবাশিস মোহান্তি ও রবিন সিং জুনিয়র) ইতিমধ্যে এসেছেন আমাদের আলোচনায়। ব্যাট হাতে ক্রিজে গিয়ে দাঁড়ালেও টেস্ট ক্রিকেটের আঙিনায় খোলেনি এঁদের কারও রানের খাতাই।

পঞ্চম ও ষষ্ঠ নাম দু’টি (জামশেদ ইরানি ও প্রবীর সেন) ইতিমধ্যে এসেছে আমাদের আলোচনায়।

অক্টোবর ২৭, ১৯২৬। বরোদায় জন্ম ১৯৫১-৫২ থেকে ১৯৬০-৬১ পর্বে ১২ টেস্ট খেলা পদ্মনাভ যোশির। ইরফান পাঠানের জন্মদিনে অর্ধশতাব্দীরও বেশি আগে ভূমিষ্ঠ দুই পুরুষের ইনি প্রথম। ঘরোয়া ক্রিকেটে চিরকাল মহারাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করা যোশির ক্রিকেট জীবন অতিবাহিত হয় এমন একটা সময় যখন জাতীয় দলের উইকেটরক্ষক পদে চলছে প্রায় মিউজিক্যাল চেয়ারের খেলা।

অষ্টম ও নবম নাম দু’টি (মাধব মন্ত্রী ও বিজয় রাজিন্দরনাথ) ইতিমধ্যে এসেছে আমাদের আলোচনায়।

মার্চ ৫, ১৯২২। দমনে জন্ম সেই মিউজিক্যাল চেয়ার অধ্যায়েই ১৯৫২-৫৩ নাগাদ ২ টেস্ট খেলা ইব্রাহিম মাকার। নিম্নবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা মানুষটি অন্নসংস্থানের প্রয়োজনেই সেই বাজারে গুজরাট ও বোম্বের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলে ফেলেন দীর্ঘ দু’ দশক (১৯৪১-৪২ থেকে ১৯৬২-৬৩)। প্রসঙ্গত, মার্চ ৫, ১৯১৮-য় আবার নিমবহেড়ায় জন্ম ১৯৪৬ থেকে ১৯৫১-৫২ পর্বে ৪ টেস্ট খেলা অলরাউন্ডার রঙ্গ সোহনির। বোম্বে, মহারাষ্ট্র, হিন্দু (অধুনালুপ্ত) ও বরোদার প্রতিনিধিত্ব করা সোহনির প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট জীবন দীর্ঘায়িত হয়েছিল ১৯৩৫-৩৬ থেকে ১৯৬৩-৬৪ অবধি।

একাদশ নামটি বিজয় মঞ্জরেকরের। মুম্বই ঘরানার যে ধ্রুপদী মিডল-অর্ডার ব্যাটারকে নিয়ে ইতিপূর্বেই আলোচনা করেছি আমরা। ১৯৫২-৫৩ ক্যারিবিয়ান সফরের কিংস্টন টেস্টে (টেস্ট ক্রমাঙ্ক: ৩৭১) দস্তানার দায়িত্বে ছিলেন সিনিয়র মঞ্জরেকর। সৌজন্যে পদ্মনাভ যোশির খারাপ ফর্ম ও ইব্রাহিম মাকার হাতের হাড়ে চিড় ধরা।

অগাস্ট ৪, ১৯৩১। বোম্বেতে জন্ম ১৯৫৪-৫৫ থেকে ১৯৬০-৬১ পর্বে ২১ টেস্ট খেলা মুম্বইকর নরেন তামানের। বিজয় মঞ্জরেকরকে বাদ দিলে (সংগত কারণেই) প্রথম ভারতীয় উইকেটরক্ষক হিসেবে তামানেই খেলেন অন্তত কুড়িটি টেস্ট। বলে রাখি, ১৯৬৮-র এই তারিখে মান্নারে জন্ম ১৯৯৬-৯৭ থেকে ১৯৯৭-৯৮ পর্বে ১০ টেস্ট খেলা আবে কুরুভিল্লারও। সাড়ে ছয় ফিটের যে মুম্বইকর পেসারকে মনে করা হয় সাদা পোশাকে আজ অবধি দেশের প্রতিনিধিত্ব করা দীর্ঘতম ভারতীয় পুরুষ। 

ত্রয়োদশ ও চতুর্দশ নাম দু’টি ইতিমধ্যে আমাদের আলোচনায় আসা চন্দ্রকান্ত পতনকর ও বুধি কুন্দরনের। প্রসঙ্গত, বিজয় মঞ্জরেকরকে বাদ দিলে প্রথম ভারতীয় উইকেটরক্ষক হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটের ময়দানে কুন্দরনই হাঁকিয়েছিলেন শতরান।

ফেব্রুয়ারি ২৫, ১৯৩৮। বোম্বেতে জন্ম ১৯৬১-৬২ থেকে ১৯৭৪-৭৫ পর্বে ৪৬ টেস্ট খেলা মুম্বইকর ফারুক ইঞ্জিনিয়ারের। বিশেষ করে ভগবৎ ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ চন্দ্রশেখরকে দস্তানা হাতে সাফল্যের সঙ্গে সামলানোতেই টের পাওয়া যায় যাঁর প্রতিবর্তের।

জুন ১৫, ১৯৩৭। জামনগরে জন্ম ১৯৬৪-৬৫ থেকে ১৯৬৯-৭০ পর্বে ৪ টেস্ট খেলা কুমার ইন্দ্রজিৎসিংজির। ঘরোয়া স্তরে সৌরাষ্ট্র ও দিল্লির প্রতিনিধিত্ব করা মানুষটির জীবনের সব চাইতে বড় ভুল ছিল কুন্দরন ও ইঞ্জিনিয়ারের সমকালে জন্মানো।

সপ্তদশ ও অষ্টাদশ নাম দু’টি ইতিমধ্যে আমাদের আলোচনায় আসা পোচিয়া কৃষ্ণমূর্তি ও সৈয়দ কিরমানির। প্রথম ভারতীয় উইকেটরক্ষক হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটের আসরে শতাধিক শিকার (১৬০ ক্যাচ ও ৩৮ স্টাম্পিং) দস্তানাবন্দির নজির রয়েছে কিরমানির নামে।

নভেম্বর ১২, ১৯৫৪। মাদ্রাজে জন্ম কিরমানির অনুপস্থিতিতে ১৯৭৯-র ইংল্যান্ড সফরে ৪-টি টেস্টই খেলা ভরত রেড্ডির। তেকাঠির পিছনে ১১ শিকারের (৯ ক্যাচ ও ২ স্টাম্পিং) সূত্রে ইংল্যান্ডের মাটিতে ভারতীয় উইকেটরক্ষক হিসেবে নতুন নজিরই গড়ে ফেলেছিলেন সেবার এই তামিল ভদ্রলোক।

কুড়ি ও বাইশতম নাম দু’টি ইতিমধ্যেই আলোচনায় আসা কর্ণাটকি সদানন্দ বিশ্বনাথ ও মুম্বইকর চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের।

সেপ্টেম্বর ৪, ১৯৬২। বরোদায় জন্ম ১৯৮৬—১৯৯৩ পর্বে ৪৯ টেস্ট খেলা কিরণ মোরের। কিরমানির পর দ্বিতীয় ভারতীয় উইকেটরক্ষক হিসেবে তেকাঠির পিছনে দাঁড়িয়ে শতাধিক শিকারের (১১০ ক্যাচ ও ২০ স্টাম্পিং) নজির রয়েছে যাঁর।