বিগত দিনের ১৫-২ অবস্থা এবং হায়দ্রাবাদ দলের অপেক্ষাকৃত কম তারকাখচিত ব্যাটিং – দুইয়ে মিলে ম্যাচ একপেশে হওয়ার আশঙ্কা ছিলো বেশ কিছুটা। সঙ্গে যদি দোসর হয় প্রতিপক্ষ পেস-ত্রয়ীর নাম আকাশ-ঈশান-মুকেশ, তবে তো সেই আশঙ্কায় স্ফুলিঙ্গ পড়ে বেশ কিছুটা।
সকালের শুরুটাও খুব একটা অপ্রত্যাশিত হয়নি। হায়দ্রাবাদের ব্যাটসম্যান হিমালয় আগারওয়ালের (১৬) উইকেট নিয়ে হিমালয়সম লিড এর আশায় প্রায় এক কলসি জল ঢেলে দেন মুকেশ কুমার। পরবর্তীতে আসা উইকেটরক্ষক প্রতীক রেড্ডি (৬), অভিজ্ঞ ব্যাট রাহুল বুদ্ধি (৪) কেউই খুব সুবিধা করতে পারেননি। প্রতীক হন মুকেশের চতুর্থ উইকেট এবং রাহুল বুদ্ধি অভিষেক পোড়েলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান। কিছুক্ষন আরো খেলা চলার পরেই ঈশান পোড়েল তুলে নেন তন্ময়চিত্তে ব্যাট করতে থাকা অধিনায়ক তন্ময় আগারওয়ালকে (২৯)।
এরপর মিকিল জয়সওয়াল (২) সায়ন শেখর মন্ডলের বলে উইকেট দিয়ে ফেরার সময় যখন ৭০-৭ অবস্থায় ধুঁকছে তখন বাংলার সঙ্গে শারীরিক ও আত্মিকভাবে যুক্ত সবাইই তখন প্রায় উদ্ভাসিত একটি বড়ো মাপের লিডের স্বপ্নে। কিন্তু বাস্তব আর স্বপ্নের মাঝে যে ফারাক হয় সেখানেই যেন আজ গঁদের আঠার মতো বসেছিলেন রবি তেজা এবং তনয় ত্যাগরাজন। প্রথম ইনিংসে বল হাতে যথাক্রমে ৩ ও ৫ উইকেট নিয়ে বাংলাকে শেষ করার পরে আজ ব্যাট হাতেও বাংলার কিঞ্চিৎ আশাভঙ্গ করলেন তাঁরা। প্রথম থেকেই বেশ ধীরস্থির রবি ঈশান-মুকেশদের সামনে যেমন দেওয়াল তুলে দিলেন তেমনই উল্টোদিকে তনয় ত্যাগরাজন সুযোগসন্ধানী ভঙ্গিতে বাউন্ডারি মেরে রান সংখ্যায় বৃদ্ধি আনছিলেন। ৩৮ ওভার নিজেদের মধ্যে ব্যাট করে ১০৯ রানের পার্টনারশীপ করে বাংলাকে একটি বড়ো মাত্রার ল্যাজের ঝাপ্টা মেরে যান তারা। মনোজ তিওয়ারির একটি বলে অভিষেক পোড়েলের হাতে ক্যাচ দিয়ে তনয় ত্যাগরাজন (৫২) না ফিরলে হয়তো লিড পাওয়াও সম্ভব হতোনা বাংলার। এরপরে কিছুটা গতিতে রবি তেজা রান করলে ব্যক্তিগত ৮১ রানে পৌঁছে যখন শেষ বলে সিঙ্গল নেওয়ার প্রচেষ্টা করছেন তখন সায়ন শেখর মন্ডল ভুবনগিরি পুন্নাইয়াকে রান আউট করায় হায়দ্রাবাদ ইনিংস ২০৫ রানে শেষ হওয়ায় বাংলা লিড পায় ৩৭ রানের।
দিনে শেষে বাংলা ১৬ রানে ওপেনার সুদীপ ঘরামিকে হারিয়ে অভিমন্যু ঈশ্বরন (১০) এবং ঋত্বিক রায়চৌধুরীর (২) ওপর নির্ভর করে হায়দ্রাবাদকে একটা বড়ো লক্ষ্য দেওয়ার জন্য অপেক্ষারত।
বাংলার মাথায় বর্তমানে প্রথম চিন্তা যদি বারবার ল্যাজের ঝাপ্টা খাওয়া হয় তবে পরবর্তী ম্যাচগুলিতে কিন্তু অন্য চিন্তা হিসেবে ধারাবাহিক ব্যর্থ সুদীপ ঘরামি কিন্তু থেকেই যাচ্ছেন।