জয়-পরাজয় দোদুল্যমান চতুর্থ দিনে।

শিরোনাম দেখে অবাক হওয়ার কারণ পাঠকের অবশ্যই নেই। বিগত দিনের ১৬-১ অবস্থায় আজ সকালে যখন ঋত্বিক রায় চৌধুরী এবং অভিমন্যু ঈশ্বরন ব্যাট করতে নামলেন তখন থেকেই যেন বাংলার ইনিংস ভাসছিলো খুব নিয়মিতভাবে। ভাগ্য যেন তখন থেকেই দোদুল্যমান বেশী। কীভাবে?

ছবি : সিএবি

দিনের শুরুতে অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরন এবং ঋত্বিক রায়চৌধুরী ছিলেন বেশ স্থিতধী। ধীরে ধীরে ইনিংস টেনে নিয়ে যেতে যেতে যখন এক সময় মনে হচ্ছে বাংলা আজ একটি বড়ো রান করার দিকে এগোবে অবশ্যই এবং এই জুটিই হবেন পথিকৃৎ ঠিক তখনই অভিমন্যু ফিরে গেলেন ২৪ রান করে ভুবনগিরি পুন্যইয়ার বলে।

এরপর ঋত্বিক রায়চৌধুরী এবং সায়ন শেখর মন্ডল বেশ স্থির গতিতে রান তুলতে থাকেন এবং নিজেদের মধ্যে পার্টনারশীপ করেন ৯০ বলে ৩৫ রান তুলেছেন এবং মনে হচ্ছে যে সকালের ফাঁড়া কেটে গেছে বাংলার ওপর থেকে তখনই তনয় ত্যাগরাজনের বলে প্রতীক রেড্ডির হাতে ব্যক্তিগত ১৭ রানের মাথায় স্ট্যাম্প হলেন সায়ন। সায়নের আউট হওয়ার পরে বাংলার বহু যুদ্ধের সৈনিক মনোজ তিওয়ারি আসলেও মাত্র ১৭ বল স্থায়ী হয় তার ইনিংস। নিজের ১০ রানের মাথায় হঠাৎ রানআউট হন তিনি।

বাংলা কোথাও গিয়ে খুব ভাগ্যবান যে আজ ঋত্বিক রায়চৌধুরী ছিলেন বেশ প্রত্যয়ীভাবে। নচেৎ বিপর্যয় নামতে পারতো আরো ভয়ানক রকম। আজ ৪১ রানে তনয় ত্যাগরাজন তাকে না ফেরালে পরবর্তীতে রানের গতির পরিবর্তন এনে লিড কোথায় নিয়ে যেতে পারতেন তা আন্দাজ করা খুব কঠিন নয়। আজ ঋত্বিক আউট হওয়ার পরে অনুষ্ঠুপ মজুমদার এবং শাহবাজ আহমেদ ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ না হলে বেশ সমস্যায় পড়তো বাংলা। আগের মরশুমে বেশ কিছু ম্যাচ তারা একসঙ্গে রক্ষা করেছেন বাংলাকে এবং আজ নিজেদের মধ্যে ৬৫ রানের পার্টনারশীপ করে লিডকে ২১৮ রানে পৌঁছে দিয়েছেন তখন অনুষ্ঠুপ আউট হলেন তনয় ত্যাগরাজনের বলে এবং তার ৪২ রান ছিলো ভয়ঙ্কর কার্যকরী। এরপর নবাগত অভিষেক পোড়েল এলেও প্রথম বলেই রানআউট হয়ে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে নিজের প্রথম আক্ষরিক ব্যর্থতার শিকার হলেন।

বাংলার ইনিংসে এরপর আর ঘটেনি বলার মতো কিছু। শাহবাজ আহমেদ এরপর কিছু বাউন্ডারি মেরে নিজের অর্ধশতক পূর্ণ করেন।

বিগত ইনিংসে বাংলার মনোজ তিওয়ারি করেছিলেন পার্টনারশীপ ভাঙার কাজ এবং আজ তার হায়দ্রাবাদী ভার্সন সামনে আনলেন তিলক ভার্মা। শেষ দিকে এসে অর্থাৎ ইনিংসের ৭৮তম ওভারে প্রতি দুই বলের ব্যবধানে বাংলার শেষ তিন ব্যাট শাহবাজ আহমেদ(৫১), মুকেশ কুমার(২) এবং আকাশদীপ(০) তিলকের বলে ফেরেন প্যাভিলিয়নে। ঈশান পোড়েল শেষ অবধি ৩ রানে নটআউট থাকায় বাংলা লিড পায় ২৩৮ রানের।

২৩৯ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যাট করতে নেমে হায়দ্রাবাদী ওপেনার তন্ময় আগারওয়াল মুকেশ কুমারের করা ইনিংসের প্রথম বলে ফিরে যাওয়ায় বিসিসিয়াই স্কোরবোর্ডে দেখাচ্ছে ৪/১। তবে বিশ্বস্ত সূত্রের খবর অনুযায়ী বর্তমানে হায়দ্রাবাদ ১৬-৩।

সুতরাং বর্তমানে ২৩৫ বা ২২৩ যাই প্রয়োজনীয় থাক বাংলার সামনে জয়ের হাতছানি বেশ ভালোই আছে। কিন্তু একটা বড়ো পার্টনারশীপ ভাঙতে না পারার ভ্রূকুটি জয়কে করেছে দোদুল্যমান।