তুলনায় বেশ সহজ পিচ ছিল ব্যাটিংয়ের জন্য। দিনের প্রথম ঘন্টায় যখন দুর্দান্ত শুরু করেছেন অভিষেক কুমার রামন এবং অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরণ তখন দেখে একবারের জন্যও মনে হয়নি যে বাংলাকে ব্যাক-ফুটে ঠেলতে পারেন সুশান্ত মিশ্র সহ অন্য ঝাড়খন্ডী বোলাররা।
অভিষেক রামন ৪১ রান করে আহত হয়ে ড্রেসিংরুমে ফিরলেও লড়াই চালিয়ে যান অভিমন্যু ঈশ্বরণ এবং একটি খারাপ জাজমেন্ট দিয়ে আউট হয়ে ফেরার আগে অবধি তাঁর রান হয়েছিল ৬৫। সঙ্গে পেয়েছিলেন সুদীপ কুমার ঘরামিকে। সেই সুদীপ কুমার ঘরামি, যিনি রনজি ফাইনালে অভিষেক করে দুর্দান্ত শুরু পেলেও পরের বছর গ্রুপ স্তরে ৬টি ইনিংস থেকে সংগ্রহ করেছিলেন মাত্র ৭৪ রান, গড় ছিলো ১২.৩৩। সুদীপ ঘরামির মাথার ওপর ছিল বহুবিধ চাপ। একে সিনিয়র-লেভেলে ব্যাট কথা বলছেনা তাঁর, তার ওপর আবার রিজার্ভ বেঞ্চে বসে আছেন অভিজ্ঞ সুদীপ চ্যাটার্জি, ইন-ফর্ম ব্যাটার কৌশিক ঘোষ এবং প্রতিভাধর ঋত্বিক রায়চৌধুরী।
বাংলা টিম ম্যানেজমেন্ট এতো ব্যর্থতার পরেও পাশে দাঁড়িয়েছিল সুদীপ ঘরামির। কারণ ছিল সুদীপের নিজের ব্যাটিং ব্যুৎপত্তি। সেই ব্যুৎপত্তি নিয়েই রঞ্জি ট্রফির ব্যর্থতার পরে সুদীপ করেছিলেন বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে একশোর বেশী গড়ে রান এবং ছিলেন ইস্টবেঙ্গলের দুটি ট্রফি জেতার অন্যতম কারিগর। সুদীপ সুযোগ পেলেন এবং কাজেও লাগালেন দুরন্তভাবে। আজ দিনের শেষে ১০৪ রানে অপরাজিত থেকে দলকে ভরসা ফিরিয়ে দিলেন এবং নিজের ফিরে আসার বার্তা দিলেন।
সঙ্গে ছিলেন অনুষ্টুপ মজুমদার। গতবার নক-আউটে ওড়িশার বিরুদ্ধে করেছিলেন অসাধারণ সেঞ্চুরি এবং আজ স্থিতধী থেকে তিনি যে ৮৫ রান করলেন তাতে আশা করাই যায় যে কাল ১৫টি রান যুক্ত করে আরো একটি সেঞ্চুরি তিনি পাবেন।
সব মিলিয়ে দিনের শেষে বাংলা ৩১০-১। অভিমন্যু ঈশ্বরণের একমাত্র উইকেট তুলতে সফল হয়েছেন সুশান্ত মিশ্র। এছাড়া আজ বাংলার পরিস্থিতি বেশ ভালো। দিনের শেষে অভিষেক রামনকে চোটের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করায় তিনি কাল ব্যাট করার আশ্বাস দিলেন। সুতরাং ব্যাটিং বলতে এখনও আছেন অভিষেক রামন,মনোজ তিওয়ারি, অভিষেক পোড়েল, সায়নশেখর মন্ডল এবং অবশ্যই আছেন দুই সেট ব্যাটার।
অস্বাভাবিক কিছু না হলে কাল দ্বিতীয় সেশনের মধ্যেই ৫৫০ রান তুলে ঝাড়খন্ডকে তীব্র চ্যালেঞ্জ দিতে চলেছে বাংলা।