জুলাই ২১, ১৯৩৪। পুনায় জন্ম পঞ্চদশ ভারতীয় টেস্ট অধিনায়ক তথা ১৯৫৮-৫৯ থেকে ১৯৬৯-৭০ পর্বে ৫৫ টেস্ট খেলা মারাঠি অলরাউন্ডার চাঁদু বোরদের। একটি তথ্যেই হয়তো নমুনা পাওয়া যাবে সমকালীন ক্রিকেট দুনিয়ায় এঁর গুরুত্বের। বার্বাডোজের বিরুদ্ধে এক চারদিনের ম্যাচে (মরশুম ১৯৬৬-৬৭) সফররত অবশিষ্ট বিশ্ব একাদশে স্থান পাওয়া একমাত্র ভারতীয় ছিলেন বোরদে। বলে রাখি, জুলাই ২১, ১৯৪৭-এ বরেলিতে জন্ম ১৯৬৯-৭০ থেকে ১৯৮০-৮১ পর্বে ৪০ টেস্ট খেলা দিল্লি ওপেনার চেতন চৌহানের। টেস্ট ক্রিকেটের আসরে কোনও তিন অঙ্কের ইনিংস না খেলেও (সর্বোচ্চ ৯৭) সামগ্রিক ভাবে ২,০৮৪-র অর্জন ছিল যাঁর খাতায়।
ষোড়শ ভারত অধিনায়ক অজিত ওয়াড়েকরের নামটি ইতিমধ্যে এসেছে আমাদের আলোচনায়।
এপ্রিল ২১, ১৯৪৫। মাদ্রাজে জন্ম সপ্তদশ ভারতীয় টেস্ট অধিনায়ক তথা ১৯৬৪-৬৫ থেকে ১৯৮৩-৮৪ পর্বে ৫৭ টেস্ট খেলা মাদ্রাজি অফস্পিনার শ্রীনিবাস বেঙ্কটরাঘবনের। ছয় ও সাতের দশকের বিখ্যাত স্পিন চতুষ্টয়ের অন্যতম সদস্য এই মানুষটি বল হাতে বাকি তিনের তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও হতে পেরেছিলেন চারমূর্তির মধ্যে দীর্ঘতম টেস্ট কেরিয়ারের অধিপতি। ব্যাটের হাতটাও ছিল সব চাইতে খাসা।
অষ্টাদশ ভারত অধিনায়কের নামটি বারকয়েক উল্লিখিত হয়েছে এই নিবন্ধে। শ্রীমান সুনীল গাভাসকার।
সেপ্টেম্বর ২৫, ১৯৪৬। অমৃতসরে জন্ম ঊনবিংশ ভারতীয় টেস্ট অধিনায়ক তথা ১৯৬৬-৬৭ থেকে ১৯৭৯ পর্বে ৬৭ টেস্ট খেলা পাঞ্জাবি অর্থোডক্স বিষেন সিং বেদির। এঁর দখলে ছিল প্রাক্-কপিল পর্বের ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সর্বাধিক টেস্ট উইকেট দখলের (২৬৬) নজির। জানিয়ে রাখি সেপ্টেম্বর ২৫, ১৯৬২-তে বোম্বেতে জন্ম ১৯৮৬-৮৭ পর্বে ৩ টেস্ট খেলা মুম্বইকর পেসার রাজু কুলকার্নিরও।
কুড়ি ও একুশতম ভারত অধিনায়ক গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথ ও কপিলদেব নিখাঞ্জের নাম ইতিমধ্যে এসেছে আমাদের আলোচনায়।
বলে রাখি টেস্ট ক্রিকেটের একশো পঁয়তাল্লিশ বছরের ইতিহাসে আজ অবধি খেলা হওয়া মোট ২,৪৬১-টি টেস্টম্যাচের ভিড়ে মাত্র দু’টির ভাগ্যে অপেক্ষা করেছিল সেই বিরলতম পরিণাম। দু’ দলের স্কোর সমান সমান অবস্থায় রান তাড়া করা দলের সব ক’টি উইকেট পড়ে যাওয়া। পরিভাষায় যাকে বলা হয় টাই। ঘটনাচক্রে ইতিহাসের দ্বিতীয় টাই টেস্টের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ভারতের নাম। এবং অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১৯৮৬-৮৭ মাদ্রাজ (চিপক) টেস্ট (টেস্ট ক্রমাঙ্ক: ১,০৫২) টাই হয় কপিলদেবের অধিনায়কত্বেই।
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি তথ্যটা। ফ্লাইট, লুপ ও বৈচিত্রে সমকালে বিষেন সিং বেদির সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে চিহ্নিত হওয়া দিল্লির অর্থোডক্স মনিন্দর সিংকে ঘিরে জন্ম নেওয়া আশার কিছুই হয়তো পূরণ হয়নি ভবিষ্যতে। কিন্তু উক্ত মাদ্রাজ টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে অস্ট্রেলীয় অফস্পিনার গ্রেগ ম্যাথুজের অন্তিম (তথা গোটা টেস্টে দশম) শিকার হিসেবে পতনের সঙ্গে সঙ্গেই ইতিহাসে লেখা হয়ে গিয়েছে মনিন্দরের নাম। ১৯৮২-৮৩ থেকে ১৯৯২-৯৩ পর্বে ৩৫ টেস্ট খেলা এই অর্থোডক্সের জন্ম জুন ১৩, ১৯৬৫-তে পুনায়।
এপ্রিল ৬, ১৯৫৬। রাজাপুরে জন্ম বাইশতম ভারতীয় টেস্ট অধিনায়ক তথা ১৯৭৫-৭৬ থেকে ১৯৯১-৯২ পর্বে ১১৬ টেস্ট খেলা মুম্বইকর মিডল-অর্ডার ব্যাটার দিলীপ বেঙ্গসরকারের। নিজের দিনে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠতম বোলিং আক্রমণকেও স্রেফ ছারখার করার ক্ষমতা রাখত যাঁর নয়নাভিরাম ড্রাইভগুলি।
তেইশতম ভারত অধিনায়ক রবি শাস্ত্রীর নামটি ইতিমধ্যেই এসেছে আমাদের আলোচনায়।
ডিসেম্বর ২১, ১৯৫৯। মাদ্রাজে জন্ম চব্বিশতম ভারতীয় টেস্ট অধিনায়ক তথা ১৯৮১-৮২ থেকে ১৯৯১-৯২ পর্বে ৪৩ টেস্ট খেলা তামিল ওপেনার কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্তের। আটের দশকের দর্শকপ্রিয় এই ওপেনিং ব্যাটারকে চিহ্নিত করা যায় বীরেন্দ্র শেহবাগের পূর্বসূরি হিসেবে। এবং, টেস্ট ক্রিকেটের ময়দানে শচীন তেন্ডুলকরের প্রথম অধিনায়কের নামটিও ছিল শ্রীকান্ত।
পঁচিশ থেকে একত্রিশতম ভারত অধিনায়কদের (আজহার, শচীন, সৌরভ, দ্রাবিড়, শেহবাগ, কুম্বলে ও ধোনি) নামগুলি হরেক প্রসঙ্গে ইতিমধ্যে এসেছে আমাদের আলোচনায়।
নভেম্বর ৫, ১৯৮৮। দিল্লিতে জন্ম বত্রিশতম ভারতীয় টেস্ট অধিনায়ক তথা ২০১১ থেকে শুরু করে এই মুহূর্ত অবধি ১০১ টেস্ট খেলা মিডল-অর্ডার ব্যাটার বিরাট কোহলির। কিছুকাল আগেও যাঁর সম্পর্কে ভাবা হত ব্র্যাডম্যানের অমানুষিক গড় ব্যতিরেকে বিশ্ব ক্রিকেটের আর যে কোনও ব্যাটিং নজিরই যে কোনওদিন চুরমার হতে পারে এঁর হাতে। যাক, অধিনায়ক হিসেবে নিঃসন্দেহেই কোহলির সব চাইতে বড় অর্জন সাত দশকের বিস্তৃত ইতিহাসে প্রথম (লালা অমরনাথের অধিনায়কত্বে সেই ১৯৪৭-৪৮ সফর থেকে ধরে) অস্ট্রেলিয়ার মাটি থেকে রাবার জিতে আনা (মরশুম ২০১৮-১৯)। বলে রাখি, নভেম্বর ৫, ১৯৭৭-এ ভুবনেশ্বরে জন্ম ২০০০-০১ থেকে ২০০২ পর্বে ২৩ টেস্ট খেলা ওড়িয়া ওপেনার শিবসুন্দর দাশের। দেবাশিস মোহান্তির পর ওড়িশা থেকে দ্বিতীয় পুরুষ হিসেবে যিনি টেস্ট ক্রিকেটের আঙিনায় প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন ভারতবর্ষের।
যথাক্রমে তেত্রিশতম ও অধুনা দুই ভারত অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানে ও রোহিত শর্মার নাম দু’টি আগেই এসেছে আমাদের আলোচনায়।