দুটো তো হচ্ছেই। তিনটেও হয়ে যেতে পারে! শিহরণ জাগানো ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচের কথাই বলছি। চলতি বছরেই অস্ট্রেলিয়ায় হবে টি২০ বিশ্বকাপ। ২৩ অক্টোবর মুখোমুখি হবে ক্রিকেট বিশ্বের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। এই তারিখটা জেনে গেছেন অসংখ্য ক্রিকেটপ্রেমী। সেই উদ্দীপনা আরও বাড়িয়ে দিল এশিয়া কাপের ক্রীড়াসূচি। মঙ্গলবার ঘোষিত সূচিতে দেখা যাচ্ছে ২৭ আগস্ট শ্রীলঙ্কা–আফগানিস্তান ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে প্রতিযোগিতা। আর পরের দিনই, অর্থাৎ ২৮ আগস্ট দুবাইয়ে মুখোমুখি হবে উপমহাদেশের ক্রিকেটের দুই শক্তিধর দেশ। আমরা ভাবছি, সেদিন কলকাতার কী হবে! কারণ সেদিনই এবারের ফুটবল মরশুমের প্রথম ডার্বি খেলতে নামবে মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল। সব মিলিয়ে আগস্টের শেষ রবিবার উত্তেজনার পারদ উঠবে তুঙ্গে।
শুধু ২৮শেই নয়, এবারের এশিয়া কাপের সূচি অনুযায়ী, ভারত–পাকিস্তানের আবার মুখোমুখি হবার সম্ভাবনা ৪ সেপ্টেম্বর। ‘এ’ গ্রুপে ভারত, পাকিস্তান ছাড়াও খেলবে কোয়ালিফায়ার থেকে উঠে আসা একটি দল। ‘বি’ গ্রুপে আছে শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ। সূচি অনুযায়ী, সুপার ফোরে ৪ সেপ্টেম্বর খেলবে ‘এ’ গ্রুপের প্রথম ও দ্বিতীয় দল। শক্তির বিচারে সেই ম্যাচে রোহিত শর্মা বনাম বাবর আজম ব্রিগেডেরই আমনে সামনে হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট উজ্জ্বল, ক্রিকেট অনুরাগী হিসেবে যা হবে আমাদের উপরি পাওয়া। শেষবার ভারত–পাক মুখোমুখি হয়েছিল গতবছর টি২০ বিশ্বকাপেই। সেই দুবাইতেই। সেদিন পাকিস্তান ১০ উইকেটে হারিয়েছিল ভারতকে। কোনও বিশ্বকাপে সেটাই ছিল ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের প্রথম জয়। বিশ্বকাপ মানেই ভারতের সামনে হার স্বীকার করা, এই ‘মিথ’ সেদিন ভেঙে দিয়েছিল পাকিস্তান। এবার দেখার, ২৮শে সেই হারের মধুর প্রতিশোধ রোহিতরা নিতে পারেন কিনা।
২০১৮–তে শেষবার এশিয়া কাপ হয়েছিল একদিনের ফরম্যাটে। দুবাইতে রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে বাংলাদেশকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। এবার ফরম্যাট বদলে হয়েছে টি২০। স্বাভাবিকভাবেই আসন্ন টি২০ বিশ্বকাপের আগে এটাই ভারতের কাছে শেষ প্রস্তুতি সফর হতে চলেছে। যাবতীয় কম্বিনেশন দেখে নেওয়া এবং পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে নিতে হবে নেতা রোহিতকে। সবথেকে বেশি নজর থাকবে বিরাট কোহলির ওপর। তাঁর রান খরা অব্যাহত। শেষ ইংল্যান্ড সফরেও তাঁর ফর্ম হতাশ করেছে ভারতীয় সমর্থকদের। ওয়েস্ট ইন্ডিজে সীমিত ওভারের সিরিজে খেলে রানে ফেরার সুযোগ নিতে চাননি বিরাট। বরং বিশ্রাম নেওয়াই শ্রেয় মনে করেছেন। এই অবস্থায় নির্বাচকরা নাকি চেয়েছিলেন বিরাটকে জিম্বাবোয়ে সফরে পাঠাতে। অন্তত এশিয়া কাপের আগে ব্যাটে বড় রান নিয়ে ফিরুন বিরাট, আত্মবিশ্বাস বাড়ান প্রাক্তন অধিনায়ক, এমনটাই চেয়েছিলেন নির্বাচকরা। এক্ষেত্রেও বিরাট রাজি হননি। কোনও কোনও মহল থেকে বলা হচ্ছে, এই অবস্থায় এশিয়া কাপের দলে কি ঠাঁই হবে বিরাটের? ‘সেট’ টিম ভেঙে বিরাটকে কি ঢোকানো হবে এশিয়া কাপের দলে? কিন্তু মনে হয় না, বিরাটকে বাদ দিয়ে এশিয়া কাপের দল তৈরির ঝুঁকি নির্বাচকরা নেবেন। কারণ টি২০ বিশ্বকাপের আগে ম্যাচ প্র্যাকটিসের এই সুযোগ তাঁকে না দিলে বিরাটের আত্মবিশ্বাস আরও তলানিতে ঠেকতে পারে। অনেক প্রাক্তন ক্রিকেটারই মনে করছেন, একবার ফর্মে ফিরলে বিরাট ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবেন। আর সেই বিরাটই হয়ে উঠতে পারেন টি২০ বিশ্বকাপে ভারতের অন্যতম সেরা অস্ত্র। তাঁর সমালোচকরা যতই হইচই করুন না কেন, নেতা রোহিত ক্রমাগত পাশে দাঁড়িয়েছেন বিরাটের।
শুরু করেছিলাম ভারত–পাক ম্যাচ দিয়ে। এমন হাইভোল্টেজ ম্যাচে বিরাট কোহলি না থাকলে খেলা জমে নাকি! মাঠে আগ্রাসী বিরাটের মেজাজ বদলে দিতে পারে ভারতীয় দলের শরীরীভাষা, ছন্দে থাকা পাক ব্রিগেডকে পর্যুদস্ত করতে যা অত্যন্ত জরুরী।