অভিষেক না হলেও কিন্তু অভিষেক ফিকে হননা

২০২১ সালের উনিশে ডিসেম্বর চূড়ান্ত পনেরোর নাম ঘোষণা হলো যারা ক্যারিবিয়ান ভূমিতে পা রাখতে চলেছেন ভারতের অনুর্ধ-১৯ দলের প্রতিনিধি হয়ে তখন চন্দননগরের বাড়িতে নেমে এসেছে বেশ হতাশা। সেই হতাশার পারদ চড়েছে কোচবিহার ট্রফি খেলতে থাকা বাংলা দলের ড্রেসিংরুম থেকে দূর্গাচরণ মিত্র স্ট্রিটে কোচ বিভাস দাসের বাড়িতেও। হতাশার কারণ অবশ্যই অনুর্ধ-১৯ বঙ্গ অধিনায়কের সুযোগ না পাওয়া।

অভিষেক পোড়েল ছবি সৌজন্যে: ফেসবুক


বঙ্গ-অধিনায়ক অভিষেক পোড়েল সম্পূর্ণ ২০২১ মরশুমে ছিলেন ফর্মের তুঙ্গে। বাংলার হয়ে কোচবিহার ট্রফিতেই গ্রুপ স্তরের চারটি ম্যাচে করেছেন তিনটে সেঞ্চুরি এবং যেই ম্যাচে সেঞ্চুরি পাননি সেই ম্যাচে করেছিলেন ৮৮। আক্ষেপ ছিলো একটাই। অনুর্ধ-১৯ চ্যালেঞ্জার ট্রফিতে মোট ১৯.৫০ গড়ে তিনি করেছিলেন ৭৮, ছিলো একটি মাত্র হাফসেঞ্চুরি(৫৪)। যদিও এক্ষেত্রে কিছুটা অসহায় ছিলেন অভিষেক। কতটা অসহায়? কেরিয়ারের শুরু থেকে টপ অর্ডারে ব্যাট করা খেলোয়াড়কে যদি কোনো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টে ৭-৮ নম্বরে খেলানো হয় তবে যতটা অসহায় লাগে ততটাই। এবং সেই জায়গাতেই দলে অন্তর্ভুক্তি হয় উইকেটেরক্ষক দীনেশ বানার। নির্বাচকরা হয়তো চেয়েছিলেন একজন নীচের দিকে ব্যাট করতে পারা একজন উইকেটকিপার এবং সেখানেই বাজিমাত দীনেশের।

ছোট বয়স থেকেই খুব সাহসী ছেলে অভিষেক। মাত্র ৯ বছর বয়সে অনুর্ধ-১৩ স্তরে দাপটের সঙ্গে খেলেন এবং সেই সুবাদে মাত্র ১৫ বছর বয়সে ভবানীপুর ক্লাবে নির্বাচিত হন এবং অভিষেক ম্যাচেই করেন ৮০। তারপরে খেলে ফেলেন অনুর্ধ-১৬ এবং অনুর্ধ-১৯ স্তরে। এক সময়ে যুববয়সজনিত কারণে বিক্ষিপ্তচিত্ত হয়ে পড়েন অভিষেক। বাধা হয় লকডাউন। লকডাউনের সময়ে বিভিন্ন আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়ায় আবার ক্রিকেটিয় রাস্তার মূলস্রোতে ফেরেন তিনি। এই সময়ে পাশে দাঁড়ান কোচ বিভাস দাস এবং লক্ষীরতন শুক্লা। এরপর থেকে যে অশ্বমেধের ঘোড়া ছুটতে শুরু করেছে অভিষেকের তা আপাতত তাকে দিয়েছে অনুর্ধ-১৯ দলের হয়ে রিসার্ভ খেলোয়াড় হিসেবে সুযোগ এবং বাংলার রঞ্জি ট্রফি স্কোয়াডে প্রথম ২০ জনের মধ্যে জায়গা। আপাতত বাংলার ক্রিকেট মহলে শতকরা ৮০ শতাংশ লোক চাইছেন অন্য কিপার শাকির হাবিব গান্ধীকে সরিয়ে খেলুন অভিষেক।

অনুর্ধ-১৯ বিশ্বকাপে আর বাকি দুটো ম্যাচ। হয়তো যশ ধুল, আংক্রিস রঘুবংশী, রাজ্যবর্ধন হ্যাংরেকারের পাশে খেলতে পারবেন না অভিষেক। তবে ১৬ তারিখ থেকে শুরু হতে চলা রঞ্জি ট্রফিতেই হয়তো প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক ঘটছে অভিষেকের। তাতে ভালো পারফরমেন্স হয়তো খুলে দিতে পারে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, জসপ্রীত বুমরাহর সতীর্থ হওয়ার সুযোগ।

অনুর্ধ-১৯ জার্সি গায়ে অভিষেক না হলেও ভবিষ্যতে কিন্তু অভিষেক ফিকে হবেননা।