কিউয়িদের দেশে শুরু হয়ে গেল দ্বাদশ প্রমীলা বিশ্বকাপ 

ছবি : গুগল

(প্রত্যাশিতভাবেই) প্রবল ‘বিরাট-বন্দনা’-র মধ্যেই আজ থেকে শুরু হয়ে গেল একমাসব্যাপী মহিলাদের ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২২-এর প্রতিযোগিতা, নিউজিল্যান্ডে – চলবে ৩রা এপ্রিল পর্যন্ত। ১৯৭৩ সালে প্রথমবার (আজ্ঞে হ্যাঁ, ‘Ladies first’ এই সাহেবি কেতা মেনে ১৯৭৫ সালে পুরুষদের আগেই) এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়, ইংল্যান্ডে। হিসেবমত গেলে এবারের এই প্রতিযোগিতাটা হয়ে যাওয়ার কথা ২০২১-এর ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসেই, কিন্তু কোভিড-১৯ এসে সবকিছু এলোমেলো করে দিয়েছে, তাই ‘পথে হ’ল দেরি’।

আটটা দেশ – নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ – খেলছে, ছ’টা জায়গায় – ক্রাইস্টচার্চ, অকল্যান্ড, মাউন্ট মাউঙ্গানুই, হ্যামিল্টন, ওয়েলিংটন, ডানেডিন – খেলা হবে, ৩০শে ও ৩১শে মার্চ সেমি-ফাইনাল, যথাক্রমে ওয়েলিংটন ও ক্রাইস্টচার্চ শহরে, আর ৩রা এপ্রিল ফাইনাল, ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালের মাঠে – সব মিলিয়ে মোট ৩১টা ৫০-ওভারের ম্যাচ হবে যার মধ্যে ফাইনাল ও একটা সেমি-ফাইনাল সমেত ১৭টা দিন-রাতের ম্যাচ। আটটা দলের প্রত্যেকে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একবার করে খেলবে, লিগ-প্রথায়। এই ২৮টা ম্যাচের পর সেরা চারটে দল (পয়েন্টের হিসেবে) সেমি-ফাইনালে খেলবে।

একঝলকে চটপট দেখে নেওয়া যাক কোন দলের কেমন ইতিহাস আগের ১১টা প্রতিযোগিতায়।

  • অস্ট্রেলিয়া: ১১ বারের মধ্যে ছ’বার চ্যাম্পিয়ন, দু’বার রানার্স-আপ, একবার করে তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান, একবার সেমি-ফাইনালিস্ট – শেষবার (২০১৭) সেমি-ফাইনালিস্ট;
  • ইংল্যান্ড: ১১ বারের মধ্যে চারবার চ্যাম্পিয়ন, তিনবার রানার্স-আপ, একবার করে তৃতীয় ও পঞ্চম স্থান, দু’বার সেমি-ফাইনালিস্ট – শেষবার (২০১৭) চ্যাম্পিয়ন;
  • নিউজিল্যান্ড: ১১ বারের মধ্যে একবার চ্যাম্পিয়ন, তিন বার রানার্স-আপ, চারবার তৃতীয় স্থান, একবার করে চতুর্থ স্থান ও পঞ্চম স্থান, একবার সেমি-ফাইনালিস্ট – শেষবার (২০১৭) পঞ্চম স্থান;
  • ভারত: ন’বারের মধ্যে (১৯৭৩ ও ১৯৮৮-তে খেলেনি) দু’বার রানার্স-আপ, একবার তৃতীয় স্থান, তিনবার চতুর্থ স্থান, দু’বার সেমি-ফাইনালিস্ট, একবার সপ্তম স্থান – শেষবার (২০১৭) রানার্স-আপ;
  • ওয়েস্ট ইন্ডিজ: (১৯৯৩ থেকে শুরু করে) ছ’বারের মধ্যে (২০০০-এ খেলেনি) একবার রানার্স-আপ, একবার পঞ্চম স্থান, তিনবার ষষ্ঠ স্থান, একবার দশম স্থান – শেষবার (২০১৭) ষষ্ঠ স্থান;
  • দক্ষিণ আফ্রিকা: (১৯৯৭ থেকে শুরু করে) ছ’বারের মধ্যে দু’বার সেমি-ফাইনালিস্ট, একবার কোয়ার্টার-ফাইনালিস্ট, একবার ষষ্ঠ স্থান, দু’বার সপ্তম স্থান – শেষবার (২০১৭) সেমি-ফাইনালিস্ট;
  • পাকিস্তান: (১৯৯৭ থেকে শুরু করে) চারবারের মধ্যে (২০০০ ও ২০০৫-এ খেলেনি) একবার পঞ্চম স্থান, দু’বার অষ্টম স্থান, একবার একাদশ স্থান – শেষবার (২০১৭) অষ্টম স্থান;
  • বাংলাদেশ: এইবার অভিষেক হতে চলেছে।

ঐতিহ্য ও সাম্প্রতিক ফলাফলের নিরিখে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মূল জায়গায় অবশ্যই এগিয়ে রয়েছে সনাতন প্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড, কাছাকাছিই রয়েছে ভারত, লড়াইতে থাকতেই পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকাও, আর নিজের দেশের সুবিধে কাজে লাগিয়ে ২০০০-এর চ্যাম্পিয়ন নিউজিল্যান্ড দু’দশক বাদে আবার কোন চমক দেয় কিনা দেখা যাক।

ছবি : গুগল

শেষ করি এই দিয়ে যে আজ মাউন্ট মাউঙ্গানুই-এ দিন-রাতের প্রথম ম্যাচেই হয়েছে রুদ্ধশ্বাস লড়াই – টসে হেরে ব্যাট করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ (২৫৯/৯) দল, এক বল বাকি থাকতে তিন রানে হারিয়েছে আয়োজক নিউজিল্যান্ড (২৫৬/১০) দলকে; ম্যাচে দু’টো শতরান হয়েছে – করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের হেইলি ম্যাথুজ (১২৮ বলে ১১৯) ও নিউজিল্যান্ডের সোফি ডিভাইন (১২৭ বলে ১০৮) – সুতরাং প্রতিযোগিতার সূচনা উত্তেজনাকর। আগামীকাল (৫ই মার্চ) হ্যমিল্টনে রয়েছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যে দিন-রাতের ম্যাচ। ভারতের প্রথম খেলা ৬ই মার্চ, দিন-রাতের, মাউন্ট মাউঙ্গানুই-এ, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে।