১২৪টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচে ডান হাতের ব্যাটিংয়ে ৫১৫ রান করার পাশাপাশি ১৯.৬৯ গড়ে ৫৮৯ উইকেট নিয়েছিলেন বাঁ হাতি অর্থোডক্স স্পিনার পদ্মাকর শিভালকার, যার ভালবাসার ডাকনাম ছিল “প্যাডি”। ১৯৪০ সালে আজকের দিনে জন্মেছিলেন তিনি।
১৯৬২-তে ২২ বছরে শুরু করে রণজি ট্রফি থেকে অবসর নিয়েছিলেন যখন, তখন তাঁর বয়েস ৪৭ বছর। কিন্তু তিনি বিষেন সিং বেদীর সমসাময়িক খেলোয়াড় হওয়ায় ভারতের হয়ে একটি টেস্টেও খেলার সুযোগ পাননি। যেটা ছিল একান্তই দুর্ভাগ্যজনক।
দাদার ইউনিয়নের হয়ে খেলতেন শিভালকার। ১৯৬১-৬২ সালে সিসিআই-র হয়ে অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে ৩ ম্যাচে ১৫ উইকেট নেওয়ার ফলস্বরূপ ওই বছরেই প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলতে নামেন সিসিআই-র হয়ে।
রণজি ট্রফিতে প্রতিপক্ষের দুঃস্বপ্ন ছিলেন তিনি। রঞ্জি ট্রফিতে মুম্বাইয়ের হয়ে ৭৪ ম্যাচে ৩৬১ উইকেট এবং ইরানি কাপে ১০ ম্যাচে ৫১ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়াও মুম্বাইয়ের হয়ে অন্য ২টি ম্যাচে ৭ উইকেট ছিল তাঁর। তাই ২৫ বছরেরও বেশি খেলে মুম্বাইয়ের হয়ে মোট ৮৬ ম্যাচে ৪১৯ উইকেট পেয়ে তিনি অবসর নিয়েছিলেন। ১৯৮০-৮১ মরশুমে রণজি ট্রফিতে খেলার পর তিনি ১৯৮৭-৮৮ সালে শেষবারের মত রণজি ট্রফিতে খেলার ডাক পান ও দুটি ম্যাচ খেলেন। সেবার সানি গাভাসকার মুম্বাই দলে থেকেও খেলেননি। অন্যদিকে শচীন তেন্ডুলকার সেবার মুম্বাই দলে থেকেও রণজি ট্রফিতে খেলার সুযোগ পাননি, বয়েস (১৪+) কম বলে।
পশ্চিমাঞ্চল-এর হয়ে দলীপ ট্রফিতে ১৫ ম্যাচে ৭৪ উইকেট পাওয়া স্পিনারের নাম ছিল পদ্মাকর শিভালকার। মঈন-উদ-দৌল্লা ট্রফিতে ৭ ম্যাচে ২৩ উইকেট ছিল তাঁর। ভারতের হয়ে বেসরকারী টেস্টে ২ ম্যাচে ৪ উইকেট পেয়েছেন তিনি, ১৯৭৩-৭৪ সালে শ্রীলঙ্কা সফরে গিয়ে।
ভারত সফরে আসা বিদেশী দলগুলির বিরুদ্ধে ৯ ম্যাচে ৩৬ উইকেট এবং বিদেশে সফরকারী ভারতীয় দলের হয়ে ট্যুর ম্যাচে ৪ ম্যাচে ১৯ উইকেট আছে তাঁর ঝুলিতে। ডারহ্যামের হয়ে (যখন ডারহ্যাম প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলতনা) মাইনর কাউন্টি খেলে ৫ ম্যাচে ১৩ উইকেট পেয়েছেন পদ্মাকর শিভালকার।
রোহিংটন বারিয়া ট্রফিতে ২ ম্যাচে ১৪ উইকেট ছিল তাঁর, যার মধ্যে ছিল ফাইনালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ৭ উইকেট। মুম্বাইয়ের হয়ে রণজি ট্রফি আর ইরানি ট্রফি জেতা ছাড়াও মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে রোহিংটন বারিয়া ট্রফি জিতেছেন তিনি।
তখন মুখ্যত স্পিনের উপর নির্ভরশীল ভারতীয় দলে তাঁর মাপের বাঁ-হাতি অর্থোডক্স স্পিনারের সুযোগ না পাওয়াটা ছিল নিখাদ দুর্ভাগ্য। এই পরিপ্রেক্ষিতে মাপলে, আর এক ভারতীয় বাঁ-হাতি অর্থোডক্স স্পিনার রাজিন্দার গোয়েল এবং পদ্মাকর শিভালকার ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা যুগ্ম দুর্ভাগা স্পিনার ছিলেন।
২০২০ সালে রাজিন্দার গোয়েলের মৃত্যুর পরে পদ্মাকর শিভালকার স্মৃতিচারণ করেছিলেন এইভাবে:-
“End of an era is actually a cliche but I just cannot think of anything else to summarise my feelings on the sad demise of Rajinder Goel, a left-arm spinner with guile and a thorough gentleman. In many ways, with our careers overlapping each other, I had the privilege of playing with and against him a few times. Unfortunately, we didn’t have as much of off-the-field camaraderie with each other. So I didn’t know him as an individual as well some of our contemporaries.
But all those common friends and cricketers would rave about him being one of the gentlest human beings one would come across. And my experience during the limited interactions with him was no different. We both were fortunate to have been mentored by two of the greatest cricketers in India. While Goel sahab had Lala Amarnath monitoring his progress early on, I was fortunate to have bumped into Vinoobhai (Vinoo Mankad) at a chance trial at Bombay Gymkhana that changed my life forever. But our bowling styles were a little different. While he relied more on dipping the ball in and using flight variation in between, I was more of a spinner who preferred to deceive the batsman in flight.
Despite our bowling style, the commonest aspect of our sojourn was the fact that we both were perhaps born in the wrong era. With Bishan Singh Bedi being a permanent fixture in the national team and the selectors somehow not looking at another left-arm spinner in the team, we both had to be content with an India cap in ‘unofficial’ Tests. But as both of us have often been saying, we were not destined to play international cricket. And a lot of common friends tell me that the fact that neither of us is bitter about it is yet another common factor between us.”
বিসিসিআই একই দিনে Lifetime Achievement Award দিয়েছিল তাদের দুজনকেই। দুজনেই সেদিন সপরিবারে থাকায়, সেদিনও তাঁরা খুব বেশি সময় পরস্পরের সঙ্গে কাটাতে পারেন নি। কিন্তু, এক অদ্ভুত প্রশান্তি সেদিন ছুঁয়ে ছিল তাঁদের দুজনকেই।
সুনীল গাভাসকার তাঁর ‘আইডল’ গ্রন্থে যে দুজন মাত্র টেস্ট-না-খেলা খেলোয়াড়ের উল্লেখ করেছিলেন তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন রাজিন্দার গোয়েল (“Simply Unlucky” শিরোনামে)। এবং অবশ্যই অন্যজন ছিলেন আজ ৮২ পেরিয়ে যাওয়া পদ্মাকর শিভালকার (শিরোনাম ছিল “Honest Trier, who missed out”)।
শুভ জন্মদিন, পদ্মাকর “প্যাডি” শিভালকার।