রাজস্থানের স্বস্তির জয়ের রাতে কপালে চিন্তার ভাঁজ নাইটবাহিনীর।

ব্রেবোর্নে অনুষ্ঠিত টাটা আইপিএলের ৬৩তম ম্যাচে লখনউকে ২৪ রানে পরাজিত করে ১৬ পয়েন্টের মাইলফলক স্পর্শ করল রাজস্থান রয়্যালস। 

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে রাজস্থান রয়্যালস ছয় উইকেটের বিনিময়ে ১৭৮ রান তোলে। যশস্বী যশওয়াল এবং পাডিক্কালের ইনিংস দলের সিংহভাগ রানের ভিত গড়ে দেয়। সাথে ক্যাপ্টেন সঞ্জু স্যামসনও দলের সমষ্টিগত রানকে টি-টোয়েন্টির এই ভরা বাজারে ভদ্রস্থ জায়গায় নিয়ে যেতে সহায়তা করেন। জস বাটলার যিনি কিনা এক মরশুমে বিরাট কোহলির ৯৭৩ রানের রেকর্ড ভাঙ্গার দৃঢ় সংকল্প নিয়েছিলেন তাঁকে এই নিয়ে পরপর দুই ম্যাচে এক অঙ্কের রান নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হলো। বরং তাঁর কাছে ডেভিড ওয়ার্নারের ৮৪৮ রানের রেকর্ড স্পর্শ করাই এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

এদিকে ডি-কক, লোকেশ রাহুলের মতো তারকাখচিত প্লেয়ার নিয়েও লখনউ ২৯ রানের মধ্যেই তিন উইকেট হারিয়ে দিশেহারা হয়ে যায়। আয়ুষ বাদনি গোল্ডেন ডাক হয়ে ফিরে যান। বাদনিকে শুরুর দিকে যতটা প্রতিশ্রুতিবান প্লেয়ার ভাবা হয়েছিল, শেষের দিকে তিনি ততটাই হতাশ করেছেন।

দীপক হুডা আশার আলো জোগান দিতে শুরু করলেও ৫৯ রান করে তিনি চাহালের বলে স্যামসনের হাতে স্টাম্পড হন। লখনউ এর শেষ বাতি হিসেবে স্টোয়নিস মরণকামড় নেওয়ার চেষ্টা করলেও শেষরক্ষা হয় না। 

১৮ নম্বর ওভারে ওবেড ম্যাককয়ের তৃতীয় বলে রিয়ান পরাগের হাতে স্টোয়নিসকে ধরা দিতে দেখা যায়। অনবদ্য প্রচেষ্টার সাফল্যের আনন্দে রিয়ানকে সেলিব্রেশন করতেও দেখা যায়। কিন্তু ভিডিও রিপ্লেতে দেখা যায় প্রাণপন ঝাঁপিয়ে রিয়ান বলটিকে তালুবন্দি করার চেষ্টা করলেও বলটি হাতে পৌঁছানোর আগেই মাটি স্পর্শ করে। 

শেষ ওভারে প্রসিদ্ধ কৃষ্ণর বলে স্টোয়নিস সেই রিয়ান পরাগের কাছেই ধরাশায়ী হলে রিয়ান হাসির ছলে স্টোয়নিসকে একপ্রকার ব্যঙ্গক্তিই করেন। এর আগে হর্ষল প্যাটেলের সাথে তাঁকে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। ম্যাচ জিতিয়ে বিহু নাচ প্রদর্শন করে মানুষের মন জিতে নেওয়ার পাশাপাশি খেলার মাঠে এধরনের অপরিণত আচরণ রিয়ানের সাদামাটা চরিত্রের সাথে ঠিক যায় না।

যাইহোক শেষমেশ আট উইকেটের বিনিময়ে ১৫৪ রানেই রথ থেমে যায় লখনউ এর। নেপথ্যে ছিলেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ, ট্রেন্ট বোল্ট এবং ওবেড ম্যাককয়। এঁরা প্রত্যেকেই দুটি করে উইকেট নেন। 

কিন্তু “কারও পৌষমাস, কারও সর্বনাশ”। এখানেও জড়িয়ে রয়েছে নাইটদের ললাটলিখন। 

নিজেদের শেষ দুই ম্যাচে জিতেও প্লে-অফে যাওয়ার অঙ্ক আরো জটিলতর হলো কোলকাতার। নেট রান রেটের বিচারে লখনউ কে টপকে লিগ টেবিলে দু’নম্বরে পদার্পণ করল তারা। হিসেব বলছে পিঙ্ক আর্মিদের প্লে-অফের টিকিট মোটামুটি কনফার্ম। এবার কোলকাতা শেষ ম্যাচ জিতলেও সর্বসাকুল্যে অর্জন করবে ১৪ পয়েন্ট, তাই স্বাভাবিকভাবেই তাদেরকে তাকিয়ে থাকতে হবে দিল্লি, ব্যাঙ্গালোর এবং পাঞ্জাবের দিকে। এখন অপেক্ষা, ক্রীড়ামোদী দর্শক ক্রিকেটের নন্দনকাননে বাংলার একমাত্র দলকে নিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়ার সুবর্ণ সুযোগ পাবেন কিনা!