ফিনিশারের আলোচনায় কার্তিক, তেওয়াটিয়া

‌আগামী মাসেই দক্ষিণ আফ্রিকা আসছে ভারত সফরে। দুই দেশ খেলবে পাঁচ ম্যাচের টি২০ সিরিজ। সাড়ে চার মাস পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বসবে টি২০ বিশ্বকাপের আসর। তার আগে প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে সিরিজ অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ভারতের কাছে। কারণ এখন থেকেই দল গুছিয়ে নেওয়ার কাজটা শুরু করা দরকার। অনেকের মতে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টি২০ সিরিজ হতে চলেছে ভারতের কাছে বিশ্বকাপের ড্রেস রিহার্সাল। দিল্লিতে ৯ জুন প্রথম ম্যাচ। বাকি ম্যাচগুলো হবে যথাক্রমে কটক, বিশাখাপত্তনম, রাজকোট এবং বেঙ্গালুরুতে। তবে এটা নিশ্চিত যে, দীর্ঘ আইপিএল খেলার ধকল, বায়ো-বাব্‌লে থাকার ক্লান্তি থেকে মুক্তি পেতে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে খেলবেন না অনেকেই। সেই তালিকায় আছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুল, যশপ্রীত বুমরা, ঋষভ পন্থরা। আগামী ইংল্যান্ড সফরের কথা ভেবেই সিনিয়র ক্রিকেটারদের তরতাজা রাখতে চাইছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। খুব স্বাভাবিকভাবেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে আসন্ন সিরিজে বেশ কয়েকজন তরুণ ক্রিকেটারকে দেখে নেওয়ার সুযোগ পাবেন নির্বাচকরা। আইপিএলের পারফরমেন্সের ভিত্তিতেই নাম উঠে আসছে তিলক ভার্মা, ঋতুরাজ গায়কোয়াড়, রাহুল ত্রিপাঠি, উমরান মালিক, অর্শদীপ সিং, আবেশ খানদের। এটাও বলার অপেক্ষা রাখে না যে, প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে সুযোগ পেলে এই ক্রিকেটাররাও নিজেদের আরও মেলে ধরার চেষ্টা করবেন, যাতে নির্বাচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়। 

টি২০–র মতো ফরম্যাটে যে কোনও দলেই ফিনিশারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগামী বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখেই ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টকে তাই ভাবতে হচ্ছে ফিনিশারের ভূমিকায় কাদের ভাবা যেতে পারে। আইপিএলের ফর্মই ভারতীয় দলে ঢোকার একমাত্র মাপকাঠি নয়। তবুও নিজ নিজ ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে এবার যেভাবে ব্যাট করছেন দীনেশ কার্তিক এবং রাহুল তেওয়াটিয়া, তাতে জাতীয় দলে ফিনিশারের ভূমিকায় কাকে রাখা উচিত, নির্বাচকদের এই আলোচনায় ওই দু’‌জনের নাম নিশ্চিতভাবে আসা উচিত। এবারের আইপিএলকে বলা হচ্ছে হার্দিক পান্ডিয়ার ‘‌কামব্যাক টুর্নামেন্ট’‌। ভাল ব্যাট করছেন, আবার ভারতীয় দলের দরজায় টোকা মারছেন। তবে গুজরাটের হয়ে ওপরের দিকে ব্যাট করছেন হার্দিক। আলোচনায় উঠবে রবীন্দ্র জাদেজার নামও। অতীতে তাঁকেও দেখা গেছে ফিনিশারের ভূমিকায়। যদিও চলতি আইপিএলে নিজের ব্যাটকে একেবারেই কথা বলাতে পারেননি জাড্ডু।

 

যুক্তির পাল্টা যুক্তিও আছে। কেউ বলছেন টি২০ ফরম্যাটে দেশের হয়ে ধারাবাহিকভাবে ভাল খেলেছেন কার্তিক। নিদাহাস ট্রফিও তার অন্যতম প্রমাণ। সাম্প্রতিক ফর্মের কথা ধরলে অবশ্যই তাঁর বিশ্বকাপ দলে থাকা উচিত। সুনীল গাভাসকারও সরাসরি বলে দিয়েছেন, বিশ্বকাপে ফিনিশারের ভূমিকায় কার্তিককে ভাবা যেতেই পারে। যদিও কেউ কেউ বলছেন, যে দলে ঋষভ পন্থ আছেন উইকেটকিপার হিসেবে, সেখানে কি শুধু ব্যাটার হিসেবে নেওয়া হবে কার্তিককে?‌ বরং অলরাউন্ডার হিসেবে হার্দিক বা তেওয়াটিয়ার কথা ভাবাই বেশি যুক্তিসঙ্গত। এই আইপিএলে ধারাবাহিকভাবে না হলেও মাঝে মাঝেই হাত ঘুরিয়েছেন হার্দিক। কিন্তু বিপুল অভিজ্ঞতার কথা ভাবলে, মুহূর্তে ম্যাচের রং পালটে দেওয়ার কথা ভাবলে ব্যাটার কার্তিক এগিয়ে থাকবেন অনেকটাই। গতবার এবং এবারের আইপিএলেও কয়েকটা ম্যাচে নাটকীয়ভাবে নিজের দলকে জয় এনে দিয়েছিলেন তেওয়াটিয়া। তাঁর কিছু শট নির্বাচন অবিশ্বাস্য। চাপের মুখে কার্তিকের মতো তাঁর মাথাও থাকে হিমশীতল। তাই সব মিলিয়ে ফিনিশারের ভূমিকায় এই দু’‌জন এগিয়ে থাকবেন অনেকটাই।