প্রায় হারিয়ে যাওয়া সন্দীপন কি উত্থান ঘটাচ্ছেন আবার?

২০১২ সালে বিশ্ববিজয়ী হওয়া অনুর্ধ-১৯ ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ২০১৪-১৫ পর্যন্ত নিয়মিত থাকতেন বাংলার রনজি ট্রফি ও বিজয় হাজারে ট্রফির টিমে। তারপরে হয়েছে ছন্দপতন। সেই থেকে আজ অবধি হয়ে রয়েছেন ব্রাত্য। ক্লাব স্তরে রয়েছে পারফরমেন্স, হয়েছেন একাধিক প্রথম সারির ক্লাব দলের অধিনায়ক, কিন্তু নিজের প্রথম প্রথম-শ্রেণীর ম্যাচে একটি সাহসী হাফ-সেঞ্চুরি পাওয়ার পরে আর কোনো হাফ-সেঞ্চুরি না আসা এবং অস্বাভাবিকভাবে ব্যাটিং গড় পড়ে যাওয়াই যেন সন্দীপন দাসকে আর পরতে দেয়নি বাংলার জার্সি।


এখন ভবানীপুর ক্লাবের অধিনায়ক সন্দীপন। করছেন নিয়মিত পারফরমেন্স। কখনো ব্যাট হাতে রান তো কখনো বল হাতে সুযোগ পেলেই তুলে নিচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। আজ পর্যন্ত লাল-বলের ক্রিকেটে এই মরশুমে সন্দীপনের পারফরমেন্স তাঁর ক্লাবের জন্য হয়েছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। পুলিশ এসি দলের বিরুদ্ধে লিগের প্রথম ম্যাচে ওপেনাররা তাড়াতাড়ি আউট হয়ে যাওয়ায় হাল ধরতে এসে করেন সন্দীপন এবং ২৪৪ বল খেলে ৮৬ রান করে ভবানীপুরকে করিয়েছিলেন ৩৫০ পার। মোহনবাগান দলের বিরুদ্ধে ৫৪৫ তাড়া করে যখন রেকর্ড করলো ভবানীপুর, সেদিন অভিষেক রমনের ১১১, কৌশিক ঘোষের ১৭৬, শুভ্রজিৎ দাসের ৮৩ এর পাশে জরুরি ছিলো একটি ঝোড়ো ইনিংসের যা কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে ভবানীপুরকে। ৬১ বলে ৬৯ রানের ইনিংস খেলে অধিনায়কচিতভাবে ভবানীপুরকে জিতিয়ে আনেন সন্দীপন।
এরপরে এলো আদিত্য অ্যাকাডেমির মাঠে আজকের এই অনবদ্য ইনিংস। শুরুতে ৬ রান-রেট রেখে দুই ওপেনার অভিষেক দাস এবং শুভ্রজিৎ দাস যখন ফিরে গিয়েছেন তখনই কৌশিক ঘোষের সঙ্গে ইনিংসকে একটি শক্ত খুঁটিতে বাধলেন সন্দীপন। কৌশিক ঘোষ ছিলেন বরাবরের মতোই দাঁতে দাঁত চেপে থাকা মানসিকতা নিয়ে এবং করে গেলেন আরো একটি সেঞ্চুরি। উল্টোদিকে সন্দীপন প্রায় ১০০ স্ট্রাইক রেটে পাইকপাড়া বোলিংকে ধ্বংস করে গেলেন। দিনের শেষে ১৯৩টি বল খেলে ১৮০ রান করেছেন ২৪টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে।
এতো কিছুর পরেও সন্দীপন যেন ফিকে হয়ে যাচ্ছেন তাঁর ধারাবাহিকতার অভাবে। লিগে গ্রুপ স্তরে দুটি ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে ১৫৫ রান সংগ্রহ করার পরেও তাঁর মোট রান ২১৬ এবং যার মধ্যে পাইকপাড়ার বিরুদ্ধে গ্ৰুপ স্তরের লো-স্কোরিং ম্যাচে ১৩৩ স্ট্রাইক রেটে ২৪ ও একটি ২৩ রয়েছে। এছাড়া কোয়ালিফায়ার স্তরে প্রথম ম্যাচেও রান পাননি রাজস্থান ক্লাবের বিরুদ্ধে।
সন্দীপন নিজের স্ট্রোক খেলার ক্ষমতা দিয়ে অপরিহার্য হয়েছেন ক্লাবে। এবার দরকার শুধু ধারাবাহিকতা। ব্যাস, তবেই তো ফেরার আবেদন হবে আরো জোরালো।