দ্বিতীয় সপ্তাহে পড়লো চলতি আইপিএল। প্রতিটা দল একাধিক ম্যাচ খেলে ফেলেছে। একাধিক ম্যাচ খেলে ফেলেছেন সামি, ঋদ্ধি, শাহবাজ, আকাশদীপ, মুকেশ, অভিষেক – প্রত্যেকে। সম্ভবত এই প্রথমবার একসঙ্গে এতজন বাংলার খেলোয়াড় আইপিএলে মাঠে নামছেন। কিন্তু তাও কপাল ফিরলো না বছর চব্বিশের তরুণের।
বছর পাঁচেক আগের ঘটনা ততদিনে ফার্স্টক্লাস ক্রিকেট খেলা হয়ে গেছে, ক্রাইস্টচার্চে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে পাক ব্যাটারদের আক্ষরিক অর্থে কাঁপুনি ধরিয়ে তুলে নিয়েছিলেন চার উইকেট (প্ৰথম পাঁচটার মধ্যে চার উইকেট এনার), ফাইনালেও সাত ওভার বল করে তুলে নিয়েছিলেন দুই অজি ওপেনারকে। আর তারও আগে কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পাঁচ ওভারে খরচ করেছিলেন মাত্র ৮ রান।
হ্যাঁ শুভমন গিল, নাগরকোটি, শিবম মাভি, পৃথ্বী শ-দের মতো বিশ্বকাপ জয়ে বড় অবদান রেখেছিলেন চন্দননগরের ঈশানও। এর সঙ্গে যুক্ত হলো ফার্স্টক্লাস ক্রিকেটে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স। ফল? বাকিদের মতো তিনিও পেলেন আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি। কিন্তু গিল, মাভি, অনুকূল রায়, নাগরকোটিরা যখন ম্যাচের পর ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলেন ঈশানের ফ্র্যাচাইজি তখন তাকে তিন বছরে মাত্র একবার মাঠে নামালো!
অনুর্দ্ধ উনিশ বিশ্বকাপ জেতানো বোলারকে প্রায় নেটবোলার হিসেবে তিনটে মরসুম ব্যবহার করলো পাঞ্জাব কিংস ইলেভেন তথা অনিল কুম্বলে এন্ড কোম্পানি। দুমড়ে মুচড়ে দিলো তাঁর আত্মবিশ্বাস। সমসাময়িক গিল, শাহবাজরা যখন রনজি এবং আইপিএল-এর পারফরম্যান্সকে যৌথ হাতিয়ার করে ভারতীয় দলের দরজা খুলে ফেললেন, তখন ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগের সীমাহীন পেশাদারিত্ব এবং অদ্ভুত অঙ্ক ও রণকৌশল তাঁকে মাঠে নামতে দিলো না। শুধু অমূল্য তিনটে মরসুমই কেড়ে নিলো না, এমন অবস্থা করে দিলো যে এইবছর কোন দল তাঁর সম্পর্কে আগ্রহ পর্যন্ত দেখালো না।
এটা ঠিক যে ২৪ বছর বয়সটা খুব বেশি বয়স নয়। কিন্তু সবাইতো আর সৌরভ গাঙ্গুলিসম কলজে নিয়ে জন্মায় না যে চরম প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকেও কামব্যাক করবে, তাঁদের প্রয়োজন হয় কেরিয়ারের সেরা সময়ে সঠিক সুযোগের। কিন্তু দুঃখের বিষয় এটাই বুঝলেন না আঠারো বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আঙিনায় দাপিয়ে বেড়ানো কিংবদন্তী বোলার। বুঝলে ঈশান পোড়েল আজ মুকেশ আকাশদীপদের সঙ্গে দাপিয়ে আইপিএল তো খেলতেনই, সঙ্গে হয়তো জুটে যেত নীল রঙের টুপিটাও।