আই.পি.এল-এর সাম্প্রতিক অতীতের বোলারদের নিয়ে কিছু কথা – মধ্যম পর্ব

ক্রিকেটে একটা পুরনো কথা আছে – ম্যাচ জিততে হলে, এমনকি বিপক্ষের রান তোলা আটকাতে গেলেও, সেরা পন্থা হচ্ছে উইকেট নেওয়া, অর্থাৎ বোলিংশক্তি হওয়া চাই ভাল ও বৈচিত্র্যময়। তাই বিগত তিন আই.পি.এল-এর নিরিখে কয়েক ধরণের কিছু বোলারকে নিয়ে খুব সংক্ষেপে কিছু কথা বলবার জন্যই এই লেখা।

আলোচিত এই বোলারদের মধ্যে কে এবারের প্রতিযোগিতায় কোন দলে গেছেন বা অংশগ্রহণ করছেন না বা কোনও দলই পাননি, তার মধ্যে যাচ্ছিনা। কারণ সেটা সবাই জেনে গেছেন বা জেনে নিতে পারেন।

আরেকটা জরুরি কথা খেয়াল রাখবেন – এই বোলাররা এবারের প্রতিযোগিতায় কেমন করবেন তা নির্ভর করবে (অন্যান্য কারণের সঙ্গে) তাঁদের দল-পরিচালন সমিতি তাঁদের কেমনভাবে ব্যবহার করবেন এবং তাঁদের সহ-বোলাররা কারা ও কেমন করেন।

এবার এগোনো যাক – কেমন?

ছবি : গুগল

প্রথম পর্বে ছিল ডান-হাতি সিমারদের কথা।

এবার আসি বাঁ-হাতি সিমারদের কথায়, যাঁদের সংখ্যা খুব একটা কম নয়।

  • নটরাজন ৩০ ছুঁয়েছেন, কমই খেলছেন চোট-আঘাত-অসুস্থতার  কারণে। PP-তে উইকেট নেওয়ার ব্যাপারে বিশেষ কার্যকরী না হলেও প্রথম ১৪ ওভারের মধ্যে ওভারপ্রতি গড়ে সাতের নিচেই রান দিয়েছেন।
  • বোল্ট ৩২ ছুঁয়েছেন তবে গত কয়েক মরসুমের প্রতিযোগিতায় বাঁ-হাতি সিমারদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছেন। বুমরার সঙ্গে বোলিং করার ফলও রয়েছে।
  • মুস্তাফিজুর গত মরসুমে দারুণ করেছেন এবং ২৬ বছরে তাঁর ভাল করবার সম্ভাবনাও বজায় থাকবে যদি না তাঁর কাঁধের চোট ভোগায়। 
  • অর্শদীপ সিং গত মরসুমে PP-তে উইকেট নিয়েছেন, তবে দেখা যাক এই মরসুমে কেমন করেন।
  • সাকারিয়া PP-তে ওভারপ্রতি রান বেশি দেননি, কিন্তু উইকেটও তেমন নেননি। 
  • খলিল আহমেদের রেকর্ড ভালই কিন্তু গত মরসুম তাঁর ভাল যায়নি। PP-তে তাঁর থেকে ভাল কিছু আশা করা যায়।
  • কট্টেল PP-তে উইকেট নেন আবার রানও দিয়ে থাকেন।
  • মার্কো ইয়ানসেনকে খুব বেশি খেলতে দেখা যায়নি কিন্তু উচ্চতা তাঁর একটা বড় সুবিধা হয়ে উঠতে পারে।
  • উনাদকাট PP-র পক্ষেই কার্যকরী এবং রানও খুব বেশি দেননা যদিও আরো বেশি উইকেট তাঁর নেওয়া উচিৎ। MO-তে ওভারপ্রতি গড়ে ১০ রান ও DO-তে ওভারপ্রতি গড়ে ১৩ রান বিশেষ ভরসাব্যঞ্জক নয়। 
  • ড্যানিয়েল স্যামস প্রধানত পার্ট-টাইম বোলার, তবে তাঁর আক্রমণাত্মক ব্যাটিং দলকে কিছু বাড়তি উপযোগিতা যোগাতে পারে। 

এরপর চলে আসি ডান-হাতি স্পিনারদের কথায় – শুরু করি অফ-স্পিনারদের দিয়ে।

  • মঈন আলি ব্যাটিংয়ের জোরটা না থাকলে শুধুমাত্র বোলিং দিয়ে দলের উপযোগিতা বাড়াতে বিশেষ সক্ষম নন।
  • সুন্দর ওভারপ্রতি রান দেওয়ার ব্যাপারে অশ্বিনের থেকে ভাল এবং ব্যাটিংয়ে দখল আছে ২২ বছরের এই তরুণের।
  • অশ্বিন ৩৫ ছুঁয়েও এখনও অগ্রগণ্য, তাঁর ব্যাটিংয়ের হাতটাও মন্দ নয়।
  • সুনীল নারিনের রক্ষণাত্মক বোলিং এখনও প্রয়োজনীয়। 
  • জয়ন্ত যাদব ৩২ ছুঁয়েছেন, ব্যাটিংটা করতে পারেন তবে দলে অনিয়মিত।
  • মহম্মদ নবীর পরিসংখ্যান ভালই, উইকেট নেওয়া ও রান আটকানো দুই ব্যাপারেই দক্ষ। তবে ব্যাটিংয়ে সুবিধে করতে পারছেন না, বয়সটাও বাড়তির দিকে।
  • মুজিব-উর-রহমানকে হয়ত ঠিক ‘অফ-স্পিনার’ বলা যায়না, আর যদিও বিপক্ষদলগুলো অনেকেই ওঁকে নিয়ে একটু দ্বিধায় থাকে, উনি হয়ত দলের মূল স্পিনার হিসেবে গণ্য হবেননা।
  • দীপক হুদা মূলত স্পিনার অল-রাউন্ডার হিসেবে হলেও গত মরসুমে ১২টা ম্যাচে ১৬ ওভারের বেশি বোলিং করেননি আর ব্যাটিংয়ে ১৬ গড় নিয়ে তাঁকে একটু নড়বড়েই লাগছে।
  • কৃষ্ণাপ্পা গৌতম ব্যাটিং ও বোলিং দুইই পারেন – ব্যাটিংয়ে আক্রমণাত্মক বলেই পরিচিত – তবে গত মরসুমের একটা ম্যাচেও দলে জায়গা পাননি। 

আজ এই পর্যন্ত থাক – শেষের পর্বে লেগ-স্পিনার, এবং বাঁ-হাতি স্পিনারদের কথা বলা যাবে।