“তিনটে ট্রফিই জেতার জন্যই টিম হয়েছে আমাদের”- হীরক সেনগুপ্ত।


হীরক সেনগুপ্ত- ময়দানের একজন সিনিয়র ক্রিকেটার হওয়ার পাশাপাশি কালীঘাট ক্লাবের দল তৈরী করার অনেকটা বড়ো দায়িত্বই তার কাঁধে, এছাড়াও বলা ভালো যে ক্লাবের ক্রিকেটের সব দায়িত্বই তার কাঁধে। কালীঘাট ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পরে ক্লাবকর্তা বাবলু কোলের কথাতেই ক্লাবের এত বড়ো দায়িত্ব নেন হীরকবাবু। গতবছর হীরক সেনগুপ্ত, সঞ্জীব সান্যাল খেলোয়াড়দের সঙ্গে সম্পূর্ণ মরশুম যুক্ত থেকে ক্লাবকে তিনটি টুর্নামেন্টেই ভালো খেলতে সাহায্য করেছিলেন এবং এই বছর দলটি একার হাতেই তৈরী করেছেন হীরক সেনগুপ্ত। নিজের তৈরী করা দল নিয়ে কালীঘাট মাঠে সরাসরি কথা বললেন হীরকবাবু।


প্রশ্ন:- এইবছর ব্যাটিং লাইনআপ কেমন দেখছো?
হীরক:- এইবছর টিম বানানো হয়েছে তিনটে ফরম্যাটের জন্যই। সাদা বল,লাল বল- দুটোর জন্যই তৈরী করেছি টিম। বাকি রেজাল্ট বলবে।
প্রশ্ন:- বোলিং এইবছর তো বেশ পাওয়ারহাউস!
হীরক:- ব্যাটিংও পাওয়ারহাউস বলতে পারো। আমরা সুদীপ ঘরামিকে নিয়েছি, রাণজ্যোৎ খাইরাকে নিয়েছি, দেবব্রত দাস এসেছে এবং গতবারের মোটামুটি একইরকম দলই আছে।
প্রশ্ন:- সুদীপ ঘরামি, রাণজ্যোৎ খাইরা একটা বড়ো সময় বাংলা দলের সঙ্গে থাকবে। এটার জন্য কিভাবে তৈরী তোমরা?
হীরক:- সেই জন্য দুজন বাইরের খেলোয়াড়কে সই করানো । সঙ্গে ভালো স্থানীয় খেলোয়াড়ও আছে। আমরা স্থানীয়দের প্রেফারেন্স দেব।
প্রশ্ন:- বোলিংয়ে প্রীতম চক্রবর্তী, সায়ন ঘোষ, বদুপল্লী অমিত, অনন্ত সাহা..
হীরক:- অনন্ত সাহা নেই। বীরপ্রতাপ সিং আছে, ভালো পেসার, বাংলার হয়ে অনেক ম্যাচ খেলেছে এবং আইপিএলও খেলেছে। স্পিনে অরিত্র চ্যাটার্জী, মিথিলেশ দাস, কৌশিক মাইতি আছে সঙ্গে বিকাশ সিং আছে।
যে জায়গা আগেরবার খামতি ছিল তা মেরামতের চেষ্টা করেছি এবং চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইট করার চেষ্টা করছি।
প্রশ্ন:- আগেরবার সাদা বলে কাগজে কলমে খুব ভালো ছিলনা। এইবার কি বলবে?
হীরক:- কাগজে কলমে শক্তিশালী ছিলনা ঠিকই তবে আমরা টিটোয়েন্টি সেমিফাইনাল এবং ওয়ানডে ফাইনাল খেলেছি। সবটাই প্রস্তুতির ব্যাপার। সঞ্জীব সান্যাল অসাধারণ কাজ করেছে এবং আমাদের একটা আত্মবিশ্বাস ছিল। কোনো বর্তমান বাংলা দলের খেলোয়াড় ছিলনা এবং জুনিয়র স্তরেরও কেউ না, তাও আমরা ভালো খেলেছি। ভালো লাগতো যদি আরো কিছু ছেলে কালীঘাট ক্লাব থেকে বাংলা স্কোয়াডে থাকতো। প্রীতম চক্রবর্তী আগেরবার দারুণ বল করেছে, ও স্কোয়াডে থাকলে ভালো লাগতো। আমাদের ক্লাব থেকে অরিত্র চ্যাটার্জী সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি হলো, রেজাল্টই কথা বলছে।
প্রশ্ন:- সঞ্জীব সান্যালের না থাকা কতটা প্রভাব ফেলবে?
হীরক:- অবশ্যই একটা প্রভাব ফেলবে। আগেরবার আমরা একসাথে কাজ করেছি তো সেই প্রস্তুতিটাই চালিয়ে যাবো আমরা। আগেরবার অনেক লম্বা মরশুম ছিল এবং আমরা বছরভর খেলেছি কারণ অনেক আগে প্র্যাক্টিস শুরু করেছিলাম। জুলাই মাসে প্র্যাক্টিস শুরু করি আমরা এবং সিজন শেষ হয় তার পরের জুলাই তে। এবার খেলোয়াড়দের একটু বিশ্রাম দরকার ছিল তাই একটু দেরিতে প্র্যাক্টিস শুরু করেছি। আমরা সেই প্রিপারেশন চালিয়ে যাচ্ছি।
প্রশ্ন:- এইবছর ট্রফি জেতার ব্যাপারে কতটা আশাবাদী তুমি একজন সিনিয়র খেলোয়াড় হিসেবে?
হীরক:- একশো শতাংশ আশাবাদী এবং তিনটে ট্রফি জেতার ব্যাপারেই আশাবাদী আমি। যাতে ট্রফি জিতি, সেই অনুযায়ী টিম হয়েছে।


এবার সবচেয়ে ভালো লাগলো যেটা এবং সিএবিকে আমি ধন্যবাদ জানাই এই জন্য যে আগে এ. এন. ঘোষ ট্রফি দিয়ে মরশুম শুরু হতো এবং তা হত রনজি ট্রফির আগে। সেখানে খেলোয়াড়রা এ. এন. ঘোষ ট্রফিতে ভালো খেলে রনজি ট্রফিতে ডাক পাওয়ার সুযোগ পেতো। এইবছর সুপার লিগ রনজি ট্রফির আগে শুরু হচ্ছে। সেখানে খেলোয়াড়দের কাছে পারফরমেন্স করে নজরে চলে আসার সুযোগ রয়েছে। দলের জন্যও ভালো হবে।
প্রশ্ন:- এইবছর ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে কি ভাবছো ক্লাবের?
হীরক:- আমরা ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে যা চিন্তাভাবনা করেছি তা হলো শেষবার শুভম চ্যাটার্জী দারুণ ক্যাপ্টেন্সি করেছে এবং কাকা(সঞ্জীব সান্যাল) তো ছিলই। কাকা এবং আমি মিলে অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এইবছর যেহেতু কাকা থাকছে না তাই একটা ভয়েস এবং ফিগার দরকার টিমে। তাই সব দিক বিবেচনা করে আমরা দেবব্রত দাসকে ক্যাপ্টেন্সি দিয়েছি। দেবব্রত বাংলার হয়ে রনজি ট্রফি, টিটোয়েন্টি, ওয়ান ডে সব খেলেছে। এছাড়া দুইবার কেকেআরের হয়ে আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং মোহনবাগান ক্যাপ্টেনও ছিল। সুতরাং ওর অভিজ্ঞতার কথা বিবেচনা করে ওকে ক্যাপ্টেন হিসেবে নির্বাচিত করলাম আমরা।