দু’বার তিনি আক্রান্ত হয়েছেন কোভিডে। বয়স ও অসুস্থতার কারণে, এমনকি বাড়ির মধ্যেও হাঁটাচলা খুব কমই করেন, আর করলেও সেটা ক্রাচ নিয়ে। ফোন এলে সচরাচর তাঁর স্ত্রীই ধরেন এবং নেহাৎ খুবই পরিচিত বা ঘনিষ্ঠ কেউ না হ’লে তাঁকে কথা বলতে দেন না।
এহেন ভাগবৎ চন্দ্রশেখরকে আজ “উইলোর উইল”-এর পক্ষ থেকে সাতাত্তর পূর্ণ করবার অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাতে ফোন করা হ’ল। কার ফোন জানবার পর শ্রীমতী চন্দ্রশেখর তাঁর স্বামীকে ধরিয়ে দিলেন। উত্তরে চিরকালের ভদ্র, নম্র, বিনয়ী, মৃদুভাষী মানুষটি ধন্যবাদ জানালেন।
তাঁকে একঝলক মনে করানো হ’ল ১৯৬৪ অক্টোবরের ব্রেবোর্ণ, ১৯৭১ অগাস্টের ওভাল, ১৯৭৭ ডিসেম্বরের মেলবোর্ন আর ১৯৭৫-এর ১লা জানুয়াারির ইডেনের কথা – ভারতীয় ক্রিকেটের গৌরবময় লোকগাথার কয়েকটা অধ্যায় যাঁর অন্যতম সৃষ্টিকর্তা তিনি নিজে। সেইসব অবিস্মরণীয় ‘পল দোপল কা শায়র’ তো তিনিই। তাঁর অতিপ্রিয় গায়ক মুকেশ-এর এই গানটা কি তাঁর মনে পড়ল? কে জানে!
তাঁর ‘স্যাঙ্গাৎ’-দের অন্যতম “বিষ”-ও যে হুইল-চেয়ারে তা সম্প্রতি জেনেছেন তিনি। বেশ অসুস্থ তাঁরই শহরের ‘দোসর’ ব’লে খ্যাত “প্র্যাস”। ষাটের দশকের মাঝামাঝি থেকে আরম্ভ হওয়া পরবর্তী এক দশকের স্পিন-বোলিংয়ের যুগন্ধর জাদুকররা আজ তাঁদের জীবন-সায়াহ্নে উপনীত। কিন্তু তাঁদের উপহার দেওয়া সেইসব দিনগুলো ক্রিকেট-প্রেমীরা ভুলতে পারবেন কী?
ইডেনের প্রিয় “চন্দ্র” তাঁর জীবনের ‘স্পেল’ চালিয়ে যান, এই আন্তরিক প্রার্থনা জানাচ্ছে “উইলোর উইল”।