এরপরই আগমন ২০০৭ থেকে এখনও খেলে চলা ও ইতিমধ্যে ১০৫ টেস্ট খেলা দিল্লির দীর্ঘদেহী (৬’৪’’) পেসার ইশান্ত শর্মার। ঘণ্টায় একশো চল্লিশ কিলোমিটারের আশপাশে বল করা সেই শুরুর দিনগুলোর শীর্ণকায় ইশান্তের ফিটনেসেও লক্ষণীয় উন্নতি ঘটেছে পরবর্তীকালে। পেসারদের পক্ষে একশো টেস্ট খেলতে পারা অবশ্যই কম কথা নয়। নিবন্ধটি রচনার মুহূর্ত অবধি ৩২.৪০ গড়ে ৩১১ টেস্ট উইকেট অর্জন করা ইশান্তের জন্ম সেপ্টেম্বর ২, ১৯৮৮-তে দিল্লিতে।
মরশুম ২০১৩-১৪। ঘরের মাঠে ক্যারিবিয়ানদের বিরুদ্ধে শচীন তেন্ডুলকরের বিদায়ী সিরিজ। সাদা পোশাকে দেশের হয়ে আবির্ভাব মহম্মদ শামির। মিটারের কাঁটা তখনও চড়েনি আজকের মতো চড়চড়িয়ে। এখনও অবধি ৫৯ টেস্ট খেলা শামির গতি লক্ষণীয় ভাবে বাড়ার পিছনে অবদান নিঃসন্দেহে শাস্ত্রী-কোহলি জমানার বোলিং কোচ ভরত অরুণের। সেপ্টেম্বর ৩, ১৯৯০-এ আমরোহায় জন্ম ঘরোয়া ক্রিকেটে বাংলার প্রতিনিধিত্ব করা এই ফাস্ট বোলারের। বলে রাখি, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২০০০-০১ মুম্বই (ওয়াংখেড়ে) টেস্ট (টেস্ট ক্রমাঙ্ক: ১,৫৩১) খেলা অর্থোডক্স রাহুল সাংভির জন্ম সেপ্টেম্বর ৩, ১৯৭৪-এ সুরাটে।
সাদা পোশাকে যশপ্রীত বুমরাকে পেতে ভারতবর্ষকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ২০১৭-১৮ দক্ষিণ আফ্রিকা সফর অবধি।
বুমরা ও শামির গতির সঙ্গে ইশান্তের অভিজ্ঞতার মিশেলে ক্রমে ভারতবর্ষের সমসাময়িক দুনিয়ার শ্রেষ্ঠতম পেস শক্তি হয়ে ওঠা। অবশ্যই উল্লেখ করতে হয় পরিস্থিতি বুঝে বিরাট কোহলির সঠিক পেসারকে ব্যবহারের বিষয়েও। মনে রাখতে হবে, নয়ের দশকের মধ্যপর্বেও দেশের প্রাচীন ক্রিকেট অনুরাগীদের মুখে হামেশাই শোনা যেত মহম্মদ নিসারের গতির পেসার স্বাধীন ভারতবর্ষের ইতিহাসে আর দ্বিতীয়টি না আসার দরুণ খেদোক্তি।
চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক শামিকে ব্যতিরেকে ইশান্ত ও বুমরার মধ্যবর্তী পর্বে টেস্ট ক্রিকেটের রঙ্গমঞ্চে আবির্ভূত ভারতীয় পেসারদের ঠিকুজিতে। জয়দেব উনাদকাট, প্রবীণ কুমার, বিনয় কুমার ও পঙ্কজ সিং-এর নাম যদিও আগেই এসেছে আলোচনায়।
২০১০—২০১১ পর্বে ৪ টেস্ট খেলা অভিমন্যু মিঠুন। সতেরো বছর বয়সের আগে ক্রিকেট বল না ছুঁতে পারা এই কর্ণাটকি পেসারই একুশের মধ্যে গায়ে চড়িয়েছিলেন জাতীয় দলের জামা। অক্টোবর ২৫, ১৯৮৯-এ ব্যাঙ্গালোরে জন্ম এঁর। বলে রাখি, অক্টোবর ২৫, ১৯৫৫-য় কালুস্তেতে জন্ম ১৯৮২-র লর্ডস টেস্টে (টেস্ট ক্রমাঙ্ক: ৯২৮) সুনীল গাভাসকারের সঙ্গে ভারতীয় ইনিংসের সূচনা করা মুম্বইকর ওপেনার গোলাম পার্কারের। এবং বুমরার আগমনের আগে অবধি টেস্ট দলের নিয়মিত মুখ উমেশ যাদবের জন্মও অক্টোবর ২৫, ১৯৮৭-তে নাগপুরে। ২০১১-১২ থেকে শুরু করে এখনও অবধি ৫২ টেস্ট খেলেছেন বিদর্ভের এই ফাস্ট বোলার।
২০১১-১২ থেকে ২০১৫-১৬ পর্বে ৯ টেস্ট খেলা বরুণ অ্যারন। গতির খামতি না থাকলেও লাইন-লেন্থের গোলমালে টেস্ট ক্রিকেটের আসরে প্রায়শই মার খেতে হয়েছে এঁকে। অক্টোবর ২৯, ১৯৮৯-এ সিংভূমে জন্ম এই ঝাড়খণ্ডি ফাস্ট বোলারের।
২০১২-১৩ থেকে ২০১৭-১৮ পর্বে ২১ টেস্ট খেলা ভুবনেশ্বর কুমার। ঘরোয়া ক্রিকেটে উত্তরপ্রদেশের প্রতিনিধিত্ব করা এই পেসারের অস্ত্র ছিল স্যুইং ও নিয়ন্ত্রণ। দেশীয় প্রথম শ্রেণির খেলায় শচীন তেন্ডুলকরকে খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফেরাতে পারা একমাত্র ভারতীয় পেসারের জন্ম ফেব্রুয়ারি ৫, ১৯৯০-এ মীরাটে।
যশপ্রীত বুমরার পর সাদা পোশাক গায়ে চড়ানোর সুযোগ ঘটেছে আরও জনা চার ভারতীয় পেসারের। এঁদের মধ্যে শার্দূল ঠাকুর ও থঙ্গারাসু নটরাজনের নাম দু’টি ইতিমধ্যে এসেছে নিবন্ধে। বাকি দুই?
২০২০-২১ অস্ট্রেলিয়া সফরের মাঝেই পিতৃবিয়োগের সংবাদ পেয়েও দেশে না ফিরে ক্রিকেটেই মনোযোগ দেওয়া মহম্মদ সিরাজ। ব্যাট-বলের এই খরুচে খেলায় যাঁর উত্থানের নেপথ্যে অটোচালক পিতার অবদান ছিল অসামান্য। উক্ত অস্ট্রেলিয়া সফরেই টেস্ট ক্যাপ অর্জন করে এখনও অবধি ১২ টেস্ট খেলতে পারা এই পেসারের জন্ম মার্চ ১৩, ১৯৯৪-এ হায়দরাবাদে।
উক্ত সফরেই ২ টেস্ট খেলা দিল্লির নভদীপ সাইনি। নভেম্বর ২৩, ১৯৯২-এ কার্নালে জন্ম এই ফাস্ট বোলারের।
জানিয়ে রাখি, পূর্বোক্ত সেই দুশো দু’টি গ্রেগরিয়ান তারিখের অন্তিম প্রতিনিধি হিসেবে সাম্প্রতিক অতীতে নিষ্ফলার দুর্নাম ঘুচেছে ২০ জানুয়ারির। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২০২০-২১ চেন্নাই (চিপক) টেস্টে (টেস্ট ক্রমাঙ্ক: ২,৪১১) গুজরাটের অর্থোডক্স-অলরাউন্ডার অক্ষর পটেলের টেস্ট ক্যাপ প্রাপ্তির সুবাদে। এখনও অবধি ৬ টেস্ট খেলা অক্ষরের জন্ম ১৯৯৪-এর এই তারিখে আনন্দে।
অক্ষর পটেলের নামোল্লেখের সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের প্রথম মাসে ভূমিষ্ঠ চব্বিশ ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটারের একুশকে নিয়েই আলোচনা সেরে ফেললাম আমরা।
একেবারে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক বাকি তিনের খতিয়ানেও।