মনে করিয়ে দেব, মহম্মদ নিসারের জন্মদিনে (১ অগাস্ট) ভূমিষ্ঠ দুই উত্তরসূরির নাম। যজুর্বেন্দ্র সিং ও অরুণ লাল।
জুন ৮, ১৯২৯। তখনও টেস্ট-কৌলীন্য পায়নি দেশ। নাজির আলির জন্মদিনে ব্যাঙ্গালোরে ভূমিষ্ঠ হলেন পাঁচ ও ছয়ের দশকের সন্ধিক্ষণে ২ টেস্ট খেলা অফস্পিনার (তথা মিডিয়াম পেসার) বেনাতাপ্পা মুড্ডিয়া।
অক্টোবর ৩১, ১৯৪৬। সিকে নাইডুর জন্মদিনে বোম্বেতে জন্ম রামনাথ পার্কারের। ১৯৭২-৭৩ মরশুমে সুনীল গাভাসকারের সঙ্গী হয়ে ২-টি টেস্টে যিনি সূচনা করেন ভারতীয় ইনিংসের।
ফেব্রুয়ারি ১, ১৯৭১। জাহাঙ্গীর খানের দীর্ঘ একষট্টি বছর পর একই তারিখে জামনগরে জন্ম ১৯৯২-৯৩ থেকে ১৯৯৯-০০ অধ্যায়ে ১৫ টেস্ট খেলা মিডল-অর্ডার ব্যাটার অজয় জাডেজার।
ডিসেম্বর ৪, ১৯৭৭। অমর সিং-এর দীর্ঘ সাতষট্টি বছর পর একই তারিখে বোম্বেতে জন্ম ১৯৯৮-৯৯ থেকে ২০০৫-০৬ পর্বে ২৬ টেস্ট খেলা পেসার অজিত আগরকরের।
সেপ্টেম্বর ৫, ১৯৮৬। ফিরোজ পালিয়ার দীর্ঘ ছিয়াত্তর বছর পর ভুবনেশ্বরে জন্ম ২০০৯-১০ থেকে ২০১৩-১৪ পর্বে দেশের হয়ে ২৪ টেস্ট খেলা অর্থোডক্স গোত্রের স্পিনার প্রজ্ঞান ওঝার। ঘটনাচক্রে বোলার ফিরোজও ছিলেন এই প্রজাতিরই প্রতিনিধি।
মরশুম ১৯৩৩-৩৪। বোম্বের জিমখানা ময়দানে আয়োজিত দেশীয় ক্রিকেট ইতিহাসের দ্বিতীয় (তথা দেশের মাটিতে প্রথম) টেস্টেই প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়নকে পেয়ে যাওয়া ভারতবর্ষের। রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যাওয়া অভিষেক টেস্টে শতরানের মুখ দেখা প্রথম ভারতীয় পুরুষ লালা অমরনাথেরও। উনিশ বছরের বিস্তৃত কেরিয়ারে (যার মধ্যে দশ বছরই নষ্ট হয় বিশ্বযুদ্ধে) দেশের হয়ে ২৪ টেস্ট খেলা এই পাঞ্জাবি অলরাউন্ডারের জন্ম সেপ্টেম্বর ১১, ১৯১১-য় কাপুরথালায়। দীর্ঘ পঁয়ষট্টি বছরের ব্যবধানে ১৯৭৬-এর যে তারিখে আবার মাদ্রাজে জন্ম হয় ১৯৯৯-০০ থেকে ২০০৪-০৫ অধ্যায়ে ৮ টেস্ট খেলা অর্থোডক্স মুরলী কার্তিকের।
লালা অমরনাথের সঙ্গেই জিমখানায় ইন্ডিয়া ক্যাপ পাওয়া আরও চার ভারতীয় পুরুষের। এঁদের মধ্যে লাধা রামজির বিষয়ে ইতিমধ্যেই জেনেছি আমরা। বাড়তি যা বলার, রক্তের সম্পর্কে মানুষটি ছিলেন অমর সিং-এর অগ্রজ। বাকি তিনের জন্ম ও কর্ম দুই-ই বোম্বেতে। যথাক্রমে এঁরা ছিলেন টপ ও মিডল-অর্ডারে বিজয় মার্চেন্ট ও লক্ষ্মীদাস জয় এবং অর্থোডক্স রুস্তমজি জামশেদজি।
অক্টোবর ১২, ১৯১১। বোম্বেতে জন্ম বিজয় থ্যাকার্সের। স্কুলের ক্লার্কের সৌজন্যে যাঁর দুনিয়ার কাছে পরিচিত হয়ে যাওয়া বিজয় মার্চেন্ট নামে (পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন থ্যাকার্সেরা)। ১৯৩৩-৩৪ থেকে ১৯৫১-৫২ অধ্যায়ে দেশের হয়ে ১০ টেস্ট খেলা মানুষটি প্রথম শ্রেণির ব্যাটিং গড়ে (৭১.৬৪) আজও বিরাজ করছেন স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের (৯৫.১৪) ঠিক পরেই। প্রসঙ্গত, ১৯৪৬-এর এই তারিখে বোম্বেতে জন্ম ভিনু-পুত্র অশোক মানকড়েরও। ১৯৬৯-৭০ থেকে ১৯৭৭-৭৮ অধ্যায়ে ২২ টেস্টে যিনি প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন দেশের।
এপ্রিল ১, ১৯০২। বোম্বেতে জন্ম ওই একবারই জাতীয় দলের জামা গায়ে চড়াতে পারা জয়ের। এঁর সম্পর্কে একটি তথ্য বিশেষ ভাবে উল্লেখের দাবি রাখে। লর্ডসের উদ্বোধনী টেস্ট হয়তো খেলতেও পারতেন জয়। স্বদেশী নেতাদের গ্রেফতারির প্রতিবাদে ১৯৩২-এর সফরে ডাক পেয়েও বিলেতযাত্রায় অসম্মতি না জানালে। ফুটওয়ার্কের জন্য সমকালে বিখ্যাত এই মুম্বইকরকে আজকের হিসেবে মনে হয় না কী বোকা!
এই তারিখে জন্মানো জনৈক বাঁ-হাতি ব্যাটার বরং সাতের দশকের সূচনায় বোকা বানিয়েছিলেন সমগ্র ক্রিকেট দুনিয়াকে। বলছি ১৯৪১-এ বোম্বেতে ভূমিষ্ঠ অজিত ওয়াড়েকরের কথা। ১৯৬৬-৬৭ থেকে ১৯৭৪ পর্বে ব্যাট হাতে ৩৭ টেস্ট খেলার সূত্রে যত না বিখ্যাত হয়েছিলেন পড়াশুনোতেও সমান মেধাবী অজিত, বহুগুণে স্মরণীয় হয়ে আছেন অধিনায়ক হিসেবে ১৯৭০-৭১ ক্যারিবিয়ান ও ১৯৭১ ইংল্যান্ড সফর থেকে জোড়া রাবার জিতে আনার দৌলতে।
১৯৮৪-র পয়লা এপ্রিল মাদ্রাজে ভূমিষ্ঠ তৃতীয় ভারতীয় টেস্ট ক্রিকেটারটি হলেন তামিল ওপেনার মুরলী বিজয়। ২০০৮-০৯ থেকে ২০১৮-১৯ পর্বে দেশের হয়ে যিনি খেলেন ৬১-টি টেস্ট।
নভেম্বর ১৮, ১৮৯২। বোম্বেতে জন্ম তিনশো তিনের ভিড়ে সবার আগে পৃথিবীর আলো দেখা রুস্তমজি জামশেদজির। সব চাইতে বেশি বয়সে (৪১ বছর ২৭ দিন) ইন্ডিয়া ক্যাপ অর্জনের নজিরও আজও রয়ে গিয়েছে এঁর দখলেই। আর কখনও টেস্ট খেলার সুযোগ না পেলেও জিমখানায় বল হাতে নেহাত মন্দ ছিল না জামশেদজির অবদান (৩-১৩৭)। ঘটনাচক্রে এই তারিখে ভূমিষ্ঠ হওয়া দ্বিতীয়জনের ভাগ্যেও বরাদ্দ ছিল মাত্র একটাই টেস্ট। বলছি নভেম্বর ১৮, ১৯৩৭-এ দিল্লিতে জন্মানো রাজিন্দর পালের কথা। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৯৬৩-৬৪ বোম্বে (ব্র্যাবোর্ন) টেস্টটি (টেস্ট ক্রমাঙ্ক: ৫৫২) খেলেছিলেন এই পেসার।
আসন্ন জুন ২৫, ২০২২-এ পূর্ণ হবে ভারতবর্ষের টেস্ট কৌলীন্যের নয় দশক। দেখা যাচ্ছে এই নয় দশকের সময়সীমায় জাতীয় দলের জামা গায়ে চড়াতে পারা তিনশো তিনের ভিড়ে বরিষ্ঠতম রুস্তমজি জামশেদজি ও কনিষ্ঠতম পৃথ্বী শ-র বয়সের ব্যবধান এক শতাব্দীরও অধিক (১০৬ বছর ৩৫৬ দিন)।