একটা সময়ে কলকাতা ফুটবল ময়দানকে ভরিয়ে তুলত সুধীর কর্মকার, শিশির ঘোষ, তনুময় বোস, হেমন্ত ডোরা-র মতো ফুটবলাররা আর এখন সেই রমরমা হয়তো নেই তবে এই মুহূর্তে ক্রিকেট কিন্তু সেই জায়গাটা নিয়ে ফেলেছে। কলকাতা ক্রিকেট ময়দান কে ভালো রকম সাপ্লাই লাইন দিয়ে চলেছে এই হুগলি জেলা বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে আর এই মুহূর্তে খুব বাংলা রনজি দলেই রয়েছে সেই অনুষ্টুপ ঈশান অভিষেক দুর্গেশ রবি কান্ত-রা।
আগামীকাল ইডেন সেই মহা সন্ধিক্ষণের সামনে দীর্ঘ ৩৩ বছর পর আবার কি ‘৯০-এর স্মৃতি ফিরে আসবে এই নিয়ে সকলের মত হুগলি ক্রিকেট প্রেমিরা বেশ উত্তেজনায় ঠিক এই সময় এই জেলার ক্রিকেট চর্চা নিয়ে একটু আলোকপাত করলাম হুগলি জেলা স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের সহসচিব উমাশঙ্কর গাঙ্গুলীর সাথে। আসন্ন রনজি ফাইনাল নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গ তুলতে তিনি খুবই খুশি হলেন এবং গর্বিত হলেন এই মুহূর্তে বাংলার সবথেকে নির্ভরযোগ্য ক্রিকেটার যার ব্যাট থেকে বেশ কয়েকটি সেঞ্চুরি উঠে এলো সেই অনুষ্টুপ এর কথা উঠতেই। তিনি বললেন শুধু অনুষ্টুপ নয় পাশের শহর চন্দন নগরের দুই তুতোভাই ঈশান অভিষেক তো আছেই সঙ্গে আমার চুঁচুড়ার দুর্গেশ রয়েছে কোন্নগরের রবি কান্ত সিং, সবমিলিয়ে আমার জেলা এই মুহূর্তে লাইম লাইটে বলা যায়। বাংলা রনজি জিতলে আমার জেলার একটা আলাদা কৃতিত্ব কিন্তু থাকছেই। এই প্রসঙ্গে জেলার ক্রিকেট চর্চা কেমন জিজ্ঞেস করাতে তিনি জানালেন যে হুগলি জেলায় চর্চা বহুদিনের আর এখন তো দিন দিন যথেষ্ট জনপ্রিয় হচ্ছে ক্রিকেট খেলা। প্রচুর ছেলে এগিয়ে আসছে আবার এগিয়ে আসছে মেয়েরাও আর আগামী দিনে আরও বাড়বে। এই আমারই শহরের তিতাস সাধু সদ্য বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, সেই সকলের অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়াবে। তিনি আরও জানালেন যে চুঁচুড়া ময়দানের তিনটি মাঠে নিয়মিত লীগ ক্রিকেট খেলা হয় এবং এবছরের শেষও হয়ে গেছে দুটি ডিভিশনে। সিনিয়র সুপার ডিভিশনে ন’টি এবং সুপার ডিভিশনে ২৪ টি দল খেলে। চারটি দল নিয়ে মহিলা ক্রিকেটলিগ ও হয়েছে যেখানে ৬০ জন ক্রিকেটার নাম নথিভুক্ত হয়েছে টোটাল লিগে। নয় নয় করে সব ক্লাবের একটি করে কোচিং ক্যাম্প রয়েবছে এবং একটি ইনডোর কোচিং সেন্টার রয়েছে অ্যাসোসিয়েশনের আন্ডারে যেখানে জেলার ক্রিকেটাররা চর্চা করার সুবিধা পায়। খুবই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানালেন যে হুগলি জেলা নর্থ ২৪ পরগনার পাশাপাশি বাংলার ক্রিকেট কে বছর পর বছর সমৃদ্ধ করে যাচ্ছে এবং আগামী দিনে আরও সংখ্যা বাড়বে এবং তাই আগামী দিনের ফাইনালের জন্য পুরো বাংলা দলকে সমর্থন করতে এসোসিয়েশনের প্রচুর ক্রিকেটার ইডেনে সমর্থন করতে মাঠে যাবে।
সর্বশেষে এই চিত্রটাই পরিষ্কার যে হুগলি জেলা ক্রিকেটে একটা যথেষ্ট ইতিবাচক স্থান যা আগামী দিনে বাংলার ক্রিকেটকে অনেক অনেক এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে এবং আগামীকাল তারই একটি অগ্নিপরীক্ষা যেখানে আমার বাংলার প্রথম একাদশে তিনজন ক্রিকেটার থাকছেই যার একজন সেই ব্যাটসম্যান যার মুখের দিকে চেয়ে আছে সারা বাংলা হ্যাঁ, সেই অনুষ্টুপ মজুমদার। তাই আসুন সারা হুগলি জেলার মতো বাংলার সমস্ত জেলা থেকে ক্রিকেটপ্রেমীরা যেন কাল থেকে আগামী পাঁচ দিন ইডেন ভরিয়ে তোলে।
লেখক প্রবীর চন্দ্র