লুথারেই বোলিং বিভাগ সমৃদ্ধ কালীঘাটের।

লিডারবোর্ড দেখাচ্ছিল তাঁর এই বছর ওয়ান-ডে টুর্নামেন্টে পরিসংখ্যান – ৬টি ম্যাচে ২.৬০ ইকোনমি এবং ১৮ স্ট্রাইক রেটে ১৪ উইকেট। এবং আপনি যদি সিএবির প্রথম ডিভিশনের অন্য ক্লাবের সঙ্গে দেখেন তবে দেখবেন সেখানেও ভবানীপুরের আমির গনিকে হারিয়ে শীর্ষস্থানে রয়েছেন কালীঘাটের অরিত্র চ্যাটার্জী।


অরিত্র চ্যাটার্জী বা ময়দানের “লুথার”-এর এই বছর ওয়ান-ডে টুর্নামেন্টে বোলার হিসেবে কতটা প্রভাব তা দেখতে গেলে আপনাকে প্রতিটা ম্যাচের হিসেব সামনে রাখতে হবে। দেখবেন এই বছর প্রথম ম্যাচেই জর্জ টেলিগ্রাফের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করে কালীঘাট ৩০৪ রান তোলার পরে বল হাতে পাঁচ ওভার বল করে মাত্র ৭ রান দিয়ে একটি উইকেট তুলে নেন অরিত্র। ফলে এক দিক থেকে চাপ বাড়তে থাকায় সেই ঘটনা কাজে লাগিয়ে মিথিলেশ দাস, অমিত কুইল্যা, বদুপল্লী অমিত ও প্রীতম চক্রবর্তী উইকেট পান এবং জর্জ ৬৬ রানে শেষ হয়ে যায়।
দ্বিতীয় ম্যাচেও প্রথমে ব্যাট করা এরিয়ান ক্লাবকে ১৩২ রানে সাজঘরে পাঠিয়ে দেয় কালীঘাট এবং নেপথ্যে সেই অরিত্র। ৯ ওভার বল করে ৪ উইকেট তোলেন এবং ২.৫৫ ইকোনমিতে দেন মাত্র ২৩ রান। ওপেনার আদিত্য পুরোহিত এবং লোয়ার অর্ডারে অভিষেক বসু, সন্দীপন দে এবং সুরজ সিন্ধু জয়সওয়ালকে ফেরৎ পাঠান অরিত্র।
প্রি-কোয়ার্টার-ফাইনালে ওয়াই.এম.সি.এ কলেজ দলের বিরুদ্ধে আবার একটি উইকেট নেন অরিত্র এবং বিপক্ষ দলকে মাত্র ১০২ রানের মধ্যে শেষ করে দিতে সাহায্য করেন। উল্লেখ্যভাবে সেদিন মাত্র ৮ রান দিয়েছিলেন নিজের করা ২৬টি বলে।
বৃষ্টিস্নাত কোয়ার্টার-ফাইনালে ঐক্য সম্মিলনীর বিরুদ্ধে ৫ ওভার বল করে ১৪ রান দিয়ে ৩টি উইকেট তোলেন অরিত্র এবং কালীঘাট ম্যাচটি টসে জিতলেও যদি খেলা ক্রিকেটীয় নিয়মে হতো তবে হয়তো ঐক্য দলের তোলা ৩.৫০ প্রতি ওভারে ৫৯ রান পার হতে ঋতম পোড়েল ও মোহিত রায়ের মতো ব্যাটারের খুব সমস্যা হতো বলে মনে হয়না। এখানে কিন্তু অরিত্রর ২.৮০ ইকোনমিও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় আঁটোসাঁটো বল করা অনন্ত সাহা, বদুপল্লী অমিতদের পাশে।
এরপরে আজ ব্যাটিং পাওয়ার-হাউস ইস্টার্ন রেল দল মাত্র ২৩৫ রানে শেষ হয়ে গেল এর নেপথ্যেও অবদান রেখেছেন অরিত্র। মিথিলেশ দাস ১০ ওভারে ৩৬ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেওয়ার পরেও সমানভাবে কার্যকরী হয় অরিত্র চ্যাটার্জীর করা ১০-০-৩৪-২ স্পেলও।
কালীঘাট দলের হয়ে দুরন্ত পারফরমেন্স করেছেন বোলাররা। অমিত কুইল্যা, অনন্ত সাহা, মিথিলেশ দাস, প্রীতম চক্রবর্তী সবাইই ছিলেন ভালো ফর্মে, তবে উইকেট নেওয়ার ক্ষমতা এবং কৃপণভাবে রান খরচ করাই করেছে অরিত্রকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এবং তা হয়ে দাঁড়িয়েছে এক্স-ফ্যাক্টর। অফিস লিগে একটি টিটোয়েন্টি ম্যাচে ০ রানে ৭ উইকেট তুলে মরশুম শুরু করেছিলেন এবং লিমিটেড ওভারের খেলার ফাইনালে যদি ইডেন গার্ডেন্সে দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন শুক্রবার, তবেই তো যাত্রা সম্পূর্ণ হবে আরো একটি ভালো মরশুমের লক্ষ্যে।