প্রচলিত চিত্রনাট্যের ব্যতিক্রম ঘটেনি। ঘটার কথাও ছিল কি? রোহিত শুভমন জুটির প্রারম্ভিক পর্বের ধৈর্যশীলতায় অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার প্রতিজ্ঞাবদ্ধতার ছাপ ছিল।পরে অবশ্য বোঝা গেল দশ বছর আগে বিলেতের মাটিতে শেষবার আই সি সি ট্রফি জেতার পর টেমস এর ওপর দিয়ে অনেক জল বয়ে গেলেও টিম ইন্ডিয়ার গড়পড়তা চরিত্র বিগত এক দশকে প্রায় অপরিবর্তিত।
লাইন লেন্থে কিঞ্চিৎ সংশোধনের সুবাদে আজ প্রথম সেশনে যখন মনে হচ্ছিল অসিদের ৪৫০ এর আগেই থামিয়ে দেওয়া যাবে, বিপক্ষের উইকেটকিপার এর সৌজন্যে সেটা প্রায় পৌঁনে পাঁচশো ছুঁইছুঁই।অ্যালেক্স ক্যারির এদিনের ইনিংস শ্রীকর ভরতের কাছে শিক্ষণীয় হয়ে থাকা উচিত দলের প্রয়োজনে কিভাবে ঢাল হয়ে দাঁড়াতে হয়।কাল ১৫১/৫ এর পরিস্থিতি থেকে উন্নততর তথা সম্মানজনক উত্তরণের প্রত্যাশিত কাহিনীতে ভারতীয় উইকেটরক্ষক এর দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার কথা। রাহানের সঙ্গে তার জুটিটাই বর্তমান ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপ এর শেষ স্বীকৃত ভরসা।অবশ্য দেশের মাঠে একই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ভরতের ব্যাট হাতে প্রদর্শনের যা নমুনা,অত্যাশ্চর্য ভোজবাজি ছাড়া ফলো অন বাঁচানো স্বাভাবিক বোধবুদ্ধিতে সম্ভবপর বলে মনে হচ্ছে না।সেটা সুষ্ঠভাবে করার জন্য সরকারিভাবে দায়িত্বপ্রাপ্তদের অবিমৃশ্যকারিতার কঠোর ময়না তদন্ত হওয়া উচিত।বাম হাতি পেসারের হঠাৎ ভেতরে ঢুকে আসা বলে অসহায়ভাবে পা বাড়িয়ে দেওয়া রোহিতের পুরোনো রোগ। এবার ডান হাতির বিরুদ্ধেও একই প্রবনতায় বোঝা যাচ্ছে না দলের ব্যাটিং কোচের এক্ষেত্রে ভূমিকাটা ঠিক কি।শুভমন আর পূজারার বোল্ড হওয়া যেন একটা অন্যটার অবিকৃত কার্বন কপি।বল বাইরে যাবে ভেবে স্ট্রোক না খেলতে গিয়ে শেষমেশ স্ট্যাম্পের হামাগুড়ি খেতে দেখা। প্রথমজনের ক্ষেত্রে সদ্যসমাপ্ত কুড়ি কুড়ির ফর্ম্যাটের হ্যাং ওভার না কাটাতে পারার অজুহাত সহজবোধ্য।পূজারার সাক্সেসের হয়ে কাউন্টি ক্রিকেটে ঝুড়ি ঝুড়ি রান করার পরও এমন শিশুসুলভ হঠকারিতার ক্রিকেটীয় ব্যাখ্যা দূর্বোধ্য।ব্র্যাডম্যানকে ছোঁয়ার জন্যই শুধু নয়, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য উদ্ধারকর্তা হিসেবে আজ যার চওড়া ব্যাটে বড় ইনিংসের বহুল কাঙ্ক্ষিত প্রত্যাশা ছিল, মিচেল স্টার্ক এর আচমকা লাফিয়ে ওঠা একটা বিষাক্ত বাউন্সার একইসঙ্গে কোহলি ও টিম ইন্ডিয়ার সমবেত স্বপ্নভঙ্গের কারণ।
এখনই চর্চা শুরু হয়ে গেছে কামিন্স কাল ফলো অন করাবেন কিনা।সে জল্পনা টেমস নদীর ওপারে পাঠিয়ে দেওয়ার গুরুদায়িত্ব যাদের কাঁধে, তাদের প্রথমজন আপাতত ২৯ অপরাজিত।নকল বুঁদিগড় রক্ষা করার মত একা কুম্ভ হওয়ার যোগ্যতার পরীক্ষায় অতীতে আজিঙ্কা রাহানে উত্তীর্ণ হলেও কাল দ্বিতীয় জনের সাহচর্য কতখানি পাবেন বলা মুশকিল। মনে রাখা দরকার ভরত কিন্তু ঋষভ পন্থ নন।