জেলা স্তরে টিটোয়েন্টি সেরা দক্ষিণ ২৪ পরগনা


উত্তর ২৪ পরগনা অধিনায়ক দীপাঞ্জন মুখার্জীর করা ইনিংসের কুড়িতম ওভারের প্রথম বলটা যখন এক্সট্রা কভার দিয়ে ড্রাইভ করে চার মারলেন সৌরভ মন্ডল, তখনই সমবেত কণ্ঠে লাফিয়ে উঠলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার খেলোয়াড়রা। একে একে মাঠের দিকে এগিয়ে গেলেন সৌরভ মন্ডল, কমলেশ মিত্ররা। খুবই স্বাভাবিক কারণ একেবারেই জেতার জন্য ফেভারিট না হওয়া সত্ত্বেও ট্রফি জয় এবং প্রায় এক যুগ পরে ট্রফি জয় তো উল্লসিত করবে অবশ্যই।


ইনিংসের শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ফর্মে থাকা ওপেনার বিশাল রায় চৌধুরী এবং অন্য ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে উত্তর ২৪ পরগনা। কিন্তু এর কিছু পরেই খেলায় তাদের ফেরান অভিজ্ঞ উদ্দীপন মুখার্জী এবং অতন্দ্র কুমার দাস। অতন্দ্র ৪৪ রান করে আউট হয়ে গেলেও, উদ্দীপন শেষ অবধি অপরাজিত থেকে ৫৭ রান করেন। উত্তর অধিনায়ক দীপাঞ্জন মুখার্জী ১৪ বলে ১৮ রান করে যান। উত্তর ২৪ পরগনা নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ১৫৪ রান তুললেও তা সম্ভব হতোনা যদি না ক্যাচ মিস করার প্রদর্শনী করতেন দক্ষিণ দলের ফিল্ডাররা।
জভাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই তৌফিক্কুদিন মন্ডলের ক্যাচ ফেলেন উত্তরের এক ফিল্ডার এবং সেই তৌফিকই প্রচুর মার মেরে ৩৫ বলে ৬২ রান করে যান ৫টি চার ও ৫টি ছয়ের সাহায্যে। তাকে যোগ্য সঙ্গত করেন সন্দীপন দেয়(২৮)কৌশিক গিরি(২৪)। যখন শেষ দুটি ওভারে বাকি ২০ রান, তখন অভিজ্ঞ রাজু হালদারকে পরপর দুটি বলে মিডউইকেট দিয়ে একটি চার ও ছয় মেরে খেলা ঘুরিয়ে দেন উইকেটরক্ষক সুপ্রিয় সাহা। শেষ পর্যন্ত ১১ বলে ২১ করে অপরাজিত থাকেন সুপ্রিয় এবং ৫ বল বাকি থাকতে খেলা জিতে নেয় দক্ষিণ দল।
ম্যাচ জেতার পর দক্ষিণ ২৪ পরগনা অধিনায়ক সুরজিৎ যাদব বললেন, “আমার কাছে এটা বিশাল স্পেশাল অনুভূতি। পনেরো বছর এই টুর্নামেন্ট হচ্ছে এবং আমরা প্রথম চ্যাম্পিয়ন হলাম। আমরা খুব মরিয়া হয়ে লেগেছিলাম এই ট্রফির জন্য।” সুরজিৎ আরো বলেন, “আমাদের গেমপ্ল্যান ছিল উইকেট বাঁচানোর। আমি আউট হয়ে গেলেও, তৌফিক অসাধারণ ব্যাট করছিল এবং মিডল অর্ডারও ভালো ব্যাট করে। আমাদের ক্যাচ ফেলা আমাদের হাল্কা পিছিয়ে দিলেও আমি কখনো ধৈর্য হারাইনি।”
পরাজিত উত্তর ২৪ পরগনা অধিনায়ক দীপাঞ্জন মুখার্জী বলেন, “আমাদের শেষ বছর অনেক রনজি ট্রফি খেলা প্লেয়ার ছিল এবং এই টুর্নামেন্টে তা ছিলনা। আমাদের ইয়ং ছেলেরা অসাধারণ খেলেছে বলে আমরা ফাইনালে উঠতে পেরেছি। বিশাল বলে যে আছে সে সেঞ্চুরি করেছে,৭৮ রানের ইনিংস খেলেছে। সৈফ-রাজু সবাই ভালো বল করেছে।” ফাইনালে হারার কারণ হিসেবে দীপাঞ্জন বলেন “আমাদের ১০-২০ রান কম হয়েছে প্রথমত। এছাড়াও আর একটা বড়ো কারণ হলো ফিল্ডিং। তৌফিকের ক্যাচ শুরুতেই ফেলে দিয়েছিলাম আমরা এবং ও ৬০ রান করে। এছাড়াও দু-চারটে বাউন্ডারি আমরা ছেড়েছি। ইডেনের মতো মাঠে বাউন্ডারি ছাড়া মানে আমার মতে টিটোয়েন্টি ম্যাচে অনেকটা পিছিয়ে পড়া।”